Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

পার্ট-৩ কলায় প্রথম শ্রেণি তিন শতাংশ!

বৃহস্পতিবার স্নাতক পার্ট থ্রি-র ফল প্রকাশের পরে দেখা যাচ্ছে, কলা বিভাগে ৬০ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়েছেন অর্থাৎ প্রথম শ্রেণি পেয়েছেন মাত্র ৩.৭ শতাংশ পরীক্ষার্থী। প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণের এই অনুজ্জ্বল হার জেনে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘বিষয়টি দেখতে হচ্ছে। খোঁজ নেব।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৮ ০৬:০৫
Share: Save:

জানুয়ারিতে স্নাতক পার্ট ওয়ানে কলা বিভাগের অর্ধেকের বেশি পরীক্ষার্থী পাশ করতে না-পারায় কয়েক দিন ধরে তুলকালাম বিক্ষোভ চলে। ক্ষুব্ধ শিক্ষামন্ত্রী কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সহ-উপাচার্য এবং রেজিস্ট্রারকে তলব করেছিলেন।

বৃহস্পতিবার স্নাতক পার্ট থ্রি-র ফল প্রকাশের পরে দেখা যাচ্ছে, কলা বিভাগে ৬০ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়েছেন অর্থাৎ প্রথম শ্রেণি পেয়েছেন মাত্র ৩.৭ শতাংশ পরীক্ষার্থী। প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণের এই অনুজ্জ্বল হার জেনে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘বিষয়টি দেখতে হচ্ছে। খোঁজ নেব।’’

প্রশ্ন উঠছে, কলা বিভাগের ফল এমন শোচনীয় কেন? শিক্ষামন্ত্রী থেকে শুরু করে শিক্ষা শিবিরের একাংশ নম্বর দেওয়ার ক্ষেত্রে কৃপণতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। এ বার উচ্চ মাধ্যমিকে কলা বিভাগের পডুয়া প্রথম স্থান অধিকার করায় কলা বিভাগে ষোলো কলার আলো দেখা গিয়েছিল অনেক দিন পরে। কিন্তু এ দিন স্নাতক পার্ট থ্রি-র ফল আবার ফিরিয়ে এনেছে অন্ধকার। প্রশ্ন উঠছে, বিজ্ঞানে ৬০ শতাংশের উপরে নম্বর পাওয়া অর্থাৎ প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণের হার যেখানে ২৮.৪৪ শতাংশ, কলা বিভাগে সেটা মাত্র ৩.৭ শতাংশ কেন?

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দায়সারা জবাব, প্রতি বছর এ-রকমই হয়!

এই পরিস্থিতিতে শিক্ষামন্ত্রী কতটা কী ‘দেখেন’, সেই দিকে তাকিয়ে আছে শিক্ষাজগৎ। এ বছর আইএসসি পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন কলা বিভাগের ছাত্রী মেঘনা শ্রীবাস্তব। মোট ৫০০ নম্বরের মধ্যে তিনি ৪৯৯ পেয়েছেন জেনে শিক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন, এ রাজ্যে নম্বর দেওয়ার ক্ষেত্রে কৃপণতা আছে। মূল্যায়নের বিষয়ে ভাবনাচিন্তার সময় এসেছে। তার পরে উচ্চ মাধ্যমিকে কলা বিভাগের ছাত্র গ্রন্থন সেনগুপ্ত মোট ৫০০ নম্বরের মধ্যে ৪৯৬ পেয়ে প্রথম হওয়ায় খুশি হয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। বলেছিলেন, ‘‘গ্রন্থন ইতিহাস গড়েছে।’’ কিন্তু এ দিন কলা বিভাগের স্নাতক স্তরের ফল বেরোনোর পরে অভিজ্ঞদের পর্যবেক্ষণ, এখানে পরীক্ষকদের নম্বর দেওয়ার হাত এখনও তেমন খোলেনি। কবে খুলবে নম্বরের হাত? সেই হাত না-খোলায় এ বারেও যাঁদের ক্ষতিগ্রস্ত হতে হল, সেই সব ছাত্রছাত্রীর কী হবে? এই সব প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

কলা বিভাগে প্রথম শ্রেণির হার যা-ই হোক, বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, সামগ্রিক ভাবে এ বার পাশের হার কিছুটা বেড়েছে। কলা (অনার্স) বিভাগে পাশের হার ৯৭.০৩% থেকে ৯৭.৬৭% এবং বিজ্ঞানে ৯২.২১% থেকে বেড়ে হয়েছে ৯৪.১৫%। কলা বিভাগে মোট ১৫,৪২৮ জন অনার্স পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৫৭৮ জন প্রথম শ্রেণি পেয়েছেন। বাংলায় প্রথম শ্রেণি পেয়েছেন ১২৭ জন। বিজ্ঞানে ৮৫৯৭ জনের মধ্যে প্রথম শ্রেণি পেয়েছেন ২৪৩৫ জন। তাঁদের মধ্যে ৩৯২ জনই প্রাণিবিদ্যার পড়ুয়া। কলা এবং বিজ্ঞান বিভাগের মেজর-এ পাশের হার যথাক্রমে ৯৯.৫৫% এবং ৯৮.৮১%।

এ দিন বাণিজ্য শাখার পার্ট ওয়ানের সাপ্লিমেন্টারির ফল বেরিয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানান, সোমবার বাণিজ্য বিভাগের পার্ট থ্রি-র ফল বেরোবে। এ বারেই প্রথম কেন্দ্রীয় ভাবে ভর্তি হওয়া যাবে স্নাতকোত্তরে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE