Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus Lockdown

জলে ভাসছে মরা পশু, দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ দুর্গতেরা

আমপানে ঘর ভেঙেছে। বাঁধ ভেঙে ডাঁসা নদীর জল ভাসিয়েছে জমি-জিরেত।

জলে ভাসছে পশুর দেহ। হিঙ্গলগঞ্জে। নিজস্ব চিত্র

জলে ভাসছে পশুর দেহ। হিঙ্গলগঞ্জে। নিজস্ব চিত্র

নবেন্দু ঘোষ
রূপমারি (হিঙ্গলগঞ্জ) শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০২০ ০৪:০৫
Share: Save:

চার পাশে জলে ভাসছে মরা গরু, ছাগল, মাছ। খাবার নেই, জল নেই। খালি পেটে বমি ওঠার জোগাড় দুর্গত মানুষগুলোর।

বাঁধের উপরে এক খণ্ড প্লাস্টিক টাঙিয়ে আশ্রয় নিয়েছে সুকুমারীরা। বাটি ভেসে যাচ্ছে দেখে মেয়ে ঝাঁপ দিল জলে। মরা বাছুরের দেহ সরিয়ে তুলে আনল বাটি। ভেজা ফ্রকের মেয়ের মুখে তখন যুদ্ধজয়ের হাসি।

হিঙ্গলগঞ্জের রূপমারি পঞ্চায়েতের বাইনারা গ্রামের ছবিটা এখন এমনই। আমপানে ঘর ভেঙেছে। বাঁধ ভেঙে ডাঁসা নদীর জল ভাসিয়েছে জমি-জিরেত। আপাতত বাঁধের উপরে কাটছে দিনরাত। চার পাশে ভেসে বেড়াচ্ছে মৃত পশুর দেহ, মরা মাছ।

চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এ ভাবে জমা জলে মরা পশু পড়ে থাকলে যে কোনও সময়ে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। এই জল পেটে গেলে তো রক্ষা নেই!

আরও পড়ুন: ইদের বড় প্রাপ্তি, নমাজে নেতৃত্ব মহিলাদের

বিশপুর পঞ্চায়েতের ধানিখালির বাসিন্দা সাধনা দাস, দিনু সর্দারেরা বলেন, ‘‘শুক্রবার থেকে পচা গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছি। কিন্তু কোনও উপায় নেই।’’ হাসনাবাদের চিকিৎসক অর্ধেন্দুশেখর মণ্ডল বলেন, ‘‘প্রতিটি মানুষের কাছে দ্রুত পানীয় জল পৌঁছে দিতে হবে। পানের অযোগ্য জল খেয়ে পেটের রোগ বাড়বে। বাচ্চারা দ্রুত আক্রান্ত হতে পারে। আন্ত্রিক, জন্ডিসও হতে পারে।” চিকিৎসকদের পরামর্শ, ক্লোরিন ট্যাবলেট জলে দিতে হবে। মৃত পশুর দেহ, মরা মাছ পুড়িয়ে বা পুঁতে দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা।

কিন্তু হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালির দু’টি ব্লক, হাসনাবাদ-সহ বিভিন্ন এলাকায় বাঁধ ভেঙে যে ভাবে মাইলের পর মাইল জলের তলায়, তাতে পরিস্থিতি কবে শুধরাবে, তা কেউ বলতে পারছেন না। কেওড়াতলিতে গিয়ে দেখা গেল, জলে ভাসছে বাড়িঘর। ইটের উঁচু রাস্তায় দিন কাটছে দুর্গতদের। ত্রিপল, প্লাস্টিক টাঙিয়ে তার নীচেই গরু-ছাগল, মুরগির পাশাপাশি ঠাঁই মিলেছে মানুষজনের।

রাস্তার পাশেই জমা জলে ভাসছে গরু-ছাগলের দেহ। স্থানীয় বাসিন্দা উৎপল মণ্ডল, সুধীন মণ্ডল, কিশোরী মণ্ডলেরা বলেন, ‘‘দিন যত গড়াচ্ছে, চার দিক থেকে পচা গন্ধ আসছে।’’ তাঁরা জানালেন, বুধবার থেকে শনিবার পর্যন্ত পানীয় জল মেলেনি। রবিবার কিছু জলের পাউচ আসে। তা-ও পর্যাপ্ত নয়। হিঙ্গলগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অর্চনা মৃধা জানান, প্রতিটি পঞ্চায়েত এলাকায় কয়েক হাজার করে জলের পাউচ পাঠানো হচ্ছে। জলের ট্যাঙ্কও পাঠানো হচ্ছে।

বিশপুর পঞ্চায়েত কিছু এলাকায় জল থেকে মরা মাছ তুলে মাটিতে পুঁতে ব্লিচিং ছড়ানোর কাজ শুরু করেছে। হিঙ্গলগঞ্জ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক অভিষেক দাঁ বলেন, ‘‘বন্যা কবলিত এলাকায় স্বাস্থ্য শিবির হয়েছে। ওষুধ দেওয়া হচ্ছে।”

আরও পড়ুন: ২৮ মে কলকাতা থেকে ১০ বিমান

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Lockdown Cyclone Amphan Cyclone
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE