ছবি: রয়টার্স।
কালিম্পঙে প্রশাসনিক বৈঠকের সময়ে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, পুলিশ পাহাড়ে আরও বেশি করে সমাজসেবামূলক কাজকর্ম বাড়াবে। প্রশাসন সূত্রে সম্প্রতি জানানো হয়েছে, পাহাড়ি যুবকদের সরকারি চাকরি, বিশেষ করে পুলিশ, সেনা ও আধাসেনায় ভর্তির পরীক্ষার বেড়াজাল পার হতেও এ বার সাহায্য করা হবে। এই প্রকল্প নিয়েছে দার্জিলিং ও কালিম্পঙের জেলা পুলিশ। শীঘ্রই তা শুরু হবে। পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, কালিম্পং সরকারি কলেজে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার কোচিং সেন্টার খোলারও পরিকল্পনা রয়েছে।
কাশ্মীর বা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উপদ্রুত এলাকায় প্রশাসনের প্রভাব বাড়াতে এমন প্রকল্প আগেও নেওয়া হয়েছে। সেই পথেই এ বার পুলিশ সমাজকল্যাণমূলক কাজের পাশাপাশি নিরাপত্তা বাহিনীতে চাকরি পাওয়ার প্রশিক্ষণ দেবে। কী ভাবে হবে এই প্রশিক্ষণ? পুলিশ সূত্রের খবর, দার্জিলিং ও কালিম্পঙে সপ্তাহে দু’দিন করে কেরিয়ার কাউন্সেলিং ক্যাম্প হবে। তাতে পদস্থ অফিসারেরা স্থানীয় যুবকদের সেনা, আধাসেনা, পুলিশে চাকরির সুবিধা, পরীক্ষার নিয়মকানুন বোঝাবেন। দ্বিতীয় পর্যায়ে তৈরি হচ্ছে পরীক্ষার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রও। সেখানে এমনকি এই সব চাকরিতে যে শারীরিক পরীক্ষা হয়, সে ব্যাপারেও পরামর্শ দেওয়া হবে।
পাহাড়ে কেন এমন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে?
প্রশাসনের একটি সূত্র বলছে, অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে পাহাড়ে নানা সামাজিক প্রকল্প আগেই চালু করা হয়েছে। এ বার সমস্যার গভীরে ঢুকতে চাইছে প্রশাসন। এর আগে পাহাড়ের যুবদের নিয়ে গোর্খাল্যান্ড পার্সোনেল বা জিএলপি তৈরি করেছিলেন বিমল গুরুং। জিটিএ-তে পুলিশ দফতর নেই। পাহাড়ের একাংশের দাবি, বকলমে পুলিশের কাজই করত জিএলপি। সেই বাহিনীতে তরুণ প্রজন্মের যোগ দেওয়ার প্রবণতাও একসময়ে দেখার মতো ছিল। তবে এই বাহিনীর উপরে রাজ্য প্রশাসনের কোনও নিয়ন্ত্রণ ছিল না। আখেরে জিএলপি-র মাথারা গত বছর পাহাড়ে গোলমালের সময়ে গুরুংকে রক্ষা করার কাজ করেছেন। এক পুলিশকর্তা বলছেন, ‘‘বেকারত্বের ফলে যুবসমাজ বিপথগামী হয়। আর্থিক অনটন ও সামাজিক সুরক্ষা থাকলে যুবকরা অপরাধ বা রাষ্ট্রদ্রোহিতায় যুক্ত হবে না।’’
কাশ্মীরে সেনাচালিত স্কুল থেকে পড়ানোর পাশাপাশি ‘ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমি’-র প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। অনেকে সুযোগও পেয়েছেন। অনেকের ব্যাখ্যায়, সেনা-পুলিশে কর্মরত যুবককে দেখে প্রতিবেশী কিশোর ও যুবকেরাও সে দিকে আকৃষ্ট হবে। জওয়ান পদের তুলনায় অফিসার পদে চাকরির প্রভাব আরও বেশি। দার্জিলিং ও কালিম্পঙে বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তি ও মোর্চার প্রভাব দূর করতে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশও সে পথে হাঁটছে। পুলিশের একাংশের মতে, সেনা ও আধাসেনা চাকরি করলে স্থানীয় নেতাদের প্রভাবও থাকবে না।
রাজ্য পুলিশের কর্তারা অবশ্য প্রকাশ্যে বলছেন, সেনা, আধাসেনায় পাহা়ড়ি যুবকেরা বেশি যোগ দেন। তাই সামাজিক প্রকল্পের অঙ্গ হিসেবেই এই ধরনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এক পুলিশকর্তার মতে, ‘‘পাহা়ড়ি এলাকা থেকে সিভিল সার্ভিসে প্রতিনিধিত্ব তুলনামূলক কম। তাই কলেজে সেই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা জরুরি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy