—প্রতীকী ছবি।
হোটেলের ঘর থেকে উদ্ধার হল কোচবিহার জেলা হাসপাতালের এক চিকিৎসকের রক্তাক্ত দেহ। তাঁর নাম সারওয়ান কান্তি (৩৯)। বাড়ি কলকাতার বালিগঞ্জে। ২৮ ডিসেম্বর হোটেলে উঠেছিলেন তিনি। সকালে ঘর না খোলায় পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ দরজা ভেঙে দেখে, রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে শরণ। বাঁ হাতের শিরা কাটা। একটি সুইসাইড নোটও পাওয়া গিয়েছে। তাতে আত্মহত্যার কথা বলা হয়েছে।
গত সেপ্টেম্বরে কলকাতার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ থেকে কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজে বদলি হন সারওয়ান। কিছু দিন শহরের একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। মাঝে গলব্লাডারের অস্ত্রোপচারের জন্য ছুটি নেন। ফিরে এসে কাজেও যোগ দেন। সুইসাইড নোটে বদলির জন্যই অবসাদে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছেন। পদোন্নতি করেই তাঁকে কোচবিহারে বদলি করা হয়েছিল বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর। রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা প্রদীপ মিত্র বলেন, ‘‘নিয়মিত হাসপাতালে যাতায়াত করতেন ওই চিকিৎসক। রোগী দেখা থেকে যাবতীয় দায়িত্ব পালন করেছেন। সম্প্রতি এমসিআই পরিদর্শনেও উপস্থিত ছিলেন। বদলি নিয়ে কোনও সমস্যা হচ্ছে বলেও কিছু জানায়নি। এমন সিদ্ধান্ত দুর্ভাগ্যজনক।’’
স্বাস্থ্য দফতরের একাংশ জানাচ্ছেন, সারওয়ান মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। ওষুধও খেতেন। চিকিৎসক সংগঠন ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টর্স ফোরামের তরফে অর্জুন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘কর্মক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা কতখানি নিরাপত্তাহীনতা ও চাপের মধ্যে থাকেন, এটা তার আর এক উদাহরণ। তবে, আত্মহত্যা কখনও সমর্থনযোগ্য নয়। তাই চিকিৎসকদের একজোট হয়ে সমাধান সূত্র খুঁজতে হবে।’’
ছোট থেকেই মেধাবী ছাত্র ছিলেন সারওয়ান। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস এবং পরে এসএসকেএম থেকে এমডি পাশ করেন। মায়ের মৃত্যু হয়েছে বছর কুড়ি আগে। বাবা মোহন কান্তির কাছেই মানুষ হন সারওয়ান। মোহনবাবুর বইয়ের দোকান রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘বছর দু’য়েক আগে ছেলের বিয়ে দিয়েছি। ওর তিন মাসের সন্তান রয়েছে। আমার ছেলে বরাবর শান্ত স্বভাবের। গোটা ঘটনার পুলিশ তদন্ত করুক, এটাই এখন চাইছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy