সাংবাদিকদের মুখোমুখি পি চিদম্বরম। —নিজস্ব চিত্র।
নরেন্দ্র মোদী সরকারের নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত ছিল চরম বিপর্যয়কর। তার জেরে সাধারণ মানুষকে যেমন এখনও মাসুল দিতে হচ্ছে, তেমনই দেশের নানা প্রান্তে একের পর এক উপনির্বাচনে বিজেপি হেরে চলেছে। নোট বাতিলের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তির দিনে এমনই মন্তব্য করলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম।
কলকাতায় এসে বৃহস্পতিবার বিধান ভবনে তথ্য দিয়ে কংগ্রেস নেতা চিদম্বরম দেখিয়েছেন, নোট বাতিলের ফলে কালো টাকার স্রোত বন্ধ হয়নি। আয়কর দফতর এখনও নিয়মিতই কালো টাকা উদ্ধারের দাবি করে। দ্বিতীয়ত, নোট বাতিলের ফলে জাল নোট উৎপাদনও থেমে যায়নি। বরং, নতুন দু’হাজার এবং পাঁচশো টাকার নোট জাল হচ্ছে। আর তৃতীয়ত, বাজার থেকে যত নোট তুলে নেওয়া হয়েছিল, তার মোট মূল্যের ৯৯.৩০%-ই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে ফেরত এসেছে। ব্যাঙ্কের কাউন্টারে প্রায় প্রতিটা নোট বৈধ ভাবে বদল হয়েছে। তা হলে আর বেআইনি টাকা উদ্ধার হল কোথায়? চিদম্বরমের কথায়, ‘‘অত্যন্ত অভিনব উপায়ে টাকা নয়ছয়ের সরকারি প্রকল্প ছিল ওটা! বাংলায় এটা আপনারা আরও ভাল জানেন, কারণ নোট বাতিলের ঘোষণা হওয়ার ঠিক আগে এখানে বড় অঙ্কের নগদ জমা করার ঘটনা ঘটেছিল!’’ নোট বাতিলের সময়ে ব্যাঙ্কের লাইনে দাঁড়িয়ে বাংলায় তিন জনের মৃত্যুর ‘দুঃখজনক’ ঘটনাও উল্লেখ করেছেন চিদম্বরম।
প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য, ক্ষমতায় আসার সময়ে মোদী বলেছিলেন, আগামী ১০ বছর অন্য সব বিষয় ছেড়ে শুধু উন্নয়ন নিয়ে কথা বলতে হবে। আর এখন বিজেপিই উন্নয়ন, শিল্প বা অর্থনীতির বৃদ্ধির কথা না বলে হিন্দুত্ব আর রামমন্দির নিয়ে পড়েছে। এই সূত্রেই তাঁর অভিযোগ, ‘‘নির্বাচনের বছরে কেন্দ্রীয় সরকারের টাকা চাই। অন্য সব পথ বন্ধ। তাই মরিয়া হয়ে কেন্দ্র এখন রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে কব্জা করতে চাইছে। আরবিআই আইনের ৭ নং ধারা কাজে লাগিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে বলা হয়েছে, ১ লক্ষ কোটি টাকা সরকারি তহবিলে পাঠাতে। চিদম্বরমের মতে, ‘‘এখন আরবিআই-কে হয় টাকা পাঠাতে হবে, নয়তো গভর্নরকে পদত্যাগ করতে হবে। যেটাই ঘটুক, সেটা আরও একটা বিপর্যয় হবে! আগামী ১৯ তারিখ আরবিআই-এর বোর্ড মিটিং-এ স্পষ্ট হবে, কী ঘটছে।’’
সামাজিক মাধ্যমে চালু রসিকতা ধার করে এ দিন চিদম্বরমের মন্তব্য, ‘‘মোদী সরকার এসবিআই, সিবিআই ধ্বংস করার পরে এ বার আরবিআই-এ হাত দিয়েছে। এর পরে এফবিআই পড়ে আছে!’’ কিন্তু বিজেপির প্রশ্ন, দুর্নীতিতে অভিযুক্ত এক জন কংগ্রেস নেতা এ সব বলেন কী ভাবে? চিদম্বরমের জবাব, ‘‘যা সত্যি, তা বলতে ভয় কীসের!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy