প্রতীকী ছবি।
কারও এক সপ্তাহের জ্বরে পেট ফুলে গিয়েছে। পাতলা পায়খানা হচ্ছে। সাত দিন এই ভাবে চলার পরে গায়ে বেরোচ্ছে লাল লাল চাকা দাগ।
দাঁড়াতে গেলেই পড়ে যাচ্ছেন কেউ। হাত মুঠো করতে পারছেন না।
উপসর্গ দৃশ্যতই আলাদা। অথচ রক্ত পরীক্ষার পরে দেখা যাচ্ছে দু’টোই ডেঙ্গি। বইয়ে ডেঙ্গির যে সব উপসর্গের কথা লেখা আছে তার বাইরে এই দুই উপসর্গ নিয়ে আসা রোগী চিনতে ভুল হচ্ছে অভিজ্ঞ চিকিৎসকদেরও।
আরও পড়ুন: মেয়রকে ‘ডেঙ্গিশ্রী’ বলে কটাক্ষ দিলীপের
দক্ষিণ কলকাতায় এক অভিজ্ঞ চিকিৎসকের চেম্বারে শুক্রবার সকালে যে সব জ্বরের রোগী এসেছেন তাঁদের অন্তত পাঁচজন নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারছেন না। বসলে উঠতে পারছেন না। দরজার ল্যাচ পর্যন্ত মুঠো করে ধরতে পারেননি ওঁদের একজন। এঁদের কেউ পাঁচ দিন, কেউ সাত দিন জ্বরে ভুগছেন। রক্তের এনএসওয়ান পরীক্ষার ফল পজিটিভ।
ওই চিকিৎসকের মন্তব্য, ‘‘এগুলো অনেকটা চিকুনগুনিয়ার উপসর্গের মতো। আমার কাছে গত দুই সপ্তাহ ধরে যাঁরা আসছেন তাঁদের অন্তত ৭৫ শতাংশের ওই উপসর্গ রয়েছে। রোগটা যে ডেঙ্গি নিশ্চিত হতে দু’বার এলাইজা পরীক্ষা করাতে হয়েছে।’’
ওই চিকিৎকের অভিজ্ঞতা বলছে, পুজোর আগে যে সব রোগী তাঁর কাছে আসছিলেন, তাঁদের বেশির ভাগেরই গায়ে ছিল লাল দাগ। লিভার নষ্ট হয়ে যাওয়ার লক্ষণও ছিল। সেটাও ডেঙ্গির চেনা উপসর্গ নয়। ‘‘এখন ওই ধরনের উপসর্গ নিয়ে যে ক’জন আসছেন, লিভার নষ্টের পাশাপাশি তাঁদের পেট ফুলে থাকার উপসর্গও পাচ্ছি।’’
কলকাতার স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনের প্রাক্তন অধিকর্তা অমিতাভ নন্দী বলেন, ‘‘ডেঙ্গির রোগীর চিকুনগুনিয়ার উপসর্গ এ বারের নতুন অভিজ্ঞতা। তবে এই রোগীদের মৃত্যুভয় অনেক কম।’’
অমিতাভবাবুর মতো অনেকেই বেশি চিন্তিত যে সব ডেঙ্গি রোগীর পাতলা পায়খানা হচ্ছে, ঘন ঘন বমি হচ্ছে, শরীরে লাল লাল চাকা দাগ হচ্ছে, তাঁদের নিয়ে। কারণ, ওই সব রোগীর শারীরিক পরিস্থিতি হঠাৎ করে খারাপ হয়ে যাচ্ছে। অমিতাভবাবু এর জন্য ডেঙ্গি জীবাণুর জিনঘটিত পরিবর্তনকেই দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘প্রতিকূল অবস্থায় অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে ডেঙ্গি জীবাণুরা ঘন ঘন তাদের জিন চরিত্র বদল করছে। ফলে এমন সব উপসর্গ দেখা যাচ্ছে যা অভিজ্ঞ চোখকেও ফাঁকি দিচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy