Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সেনার পাশেই রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী, পাল্টা ফুঁসলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতাও

সংবিধান মতে তিনি রাজ্যের শীর্ষ পদাধিকারী। আবার প্রশানিক বিষয়ে প্রকাশ্যে মত জানানোর ক্ষেত্রে তাঁর অধিকারের সীমা টেনে দিয়েছে সংবিধানই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:৩১
Share: Save:

সংবিধান মতে তিনি রাজ্যের শীর্ষ পদাধিকারী। আবার প্রশানিক বিষয়ে প্রকাশ্যে মত জানানোর ক্ষেত্রে তাঁর অধিকারের সীমা টেনে দিয়েছে সংবিধানই। কিন্তু সেই সীমা অতিক্রম করার অভিযোগকে কেন্দ্র করে এর আগে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর সঙ্গে বেশ কয়েক বার মন কষাকষি হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এ বার সেনাবাহিনীর পথে নামার ঘটনায় তা পুরোদস্তুর সংঘাতের চেহারা নিল।

রাজ্যের ১৮ টি জায়গায় সেনা মোতায়েনের ঘটনায় গত দু’দিন ধরে লাগাতার নরেন্দ্রে মোদী সরকারের সমালোচনায় সরব মুখ্যমন্ত্রী। এ ব্যাপারে সরকার ও দলের প্রতিবাদ জানাতে শুক্রবার রাজ্যের কয়েক জন মন্ত্রী ও তৃণমূল বিধায়ককে রাজভবনে পাঠিয়েছিলেন মমতা। রাজ্যপাল তখন শহরে ছিলেন না। শনিবার কলকাতায় ফিরে দুপুরে একটি অনুষ্ঠান থেকে বেরনোর সময়ে সেনা মোতায়েন নিয়ে প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘সেনাবাহিনীর মতো দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার আগে যে কোনও লোকের সতর্ক থাকা দরকার।’’

রাজ্যপালের এই মন্তব্যে চটে যান মুখ্যমন্ত্রী। পাল্টা টুইট বার্তায় তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যপাল কেন্দ্রীয় সরকারের সুরে কথা বলছেন। উনি গত ৮ দিন শহরে ছিলেন না। মন্তব্য করার আগে সব কিছু জেনে নেওয়া উচিত ছিল।’’

কেশরীনাথের বিরুদ্ধে শাসক দলের ক্ষোভ প্রকাশ এখানেই থেমে থাকেনি। সেনা মোতায়েনের প্রতিবাদ জানাতে এ দিন বিকেলে সাত জন মন্ত্রী যে রাজ্যপালের কাছে যাবেন, সেটা আগেই ঠিক ছিল। সেই প্রতিনিধি দলের নেতা শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় প্রকাশ্য মন্তব্য নিয়ে রাজ্যপালের কৈফিয়ত চেয়ে বসেন বলেই সূত্রের দাবি। সেই সঙ্গে পার্থবাবু রাজ্যপালকে বলেন, কোথাও সেনা মোতায়েনের আগে কেন্দ্রের উচিত সংশ্লিষ্ট রাজ্যের মত নেওয়া। এটা রাজ্য সরকারের মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। তখন রাজ্যপালও পাল্টা সংবিধান বার করে দেখিয়ে দেন, মৌলিক অধিকার সরকারের হয় না। তা কেবল নাগরিকদেরই থাকে। বেশ কিছুক্ষণ চাপানউতোর চলার পর রাজ্যপাল আশ্বাস দেন, রাজ্যের বক্তব্য তিনি কেন্দ্রকে জানাবেন।

রাজনীতিকদের অনেকের মতে, রাজ্যপালের এ দিনের কথায় তৃণমূল সরকার অস্বস্তিতে পড়েছে ঠিকই। কিন্তু এটাও ঠিক যে, এতে মমতার কিছুটা রাজনৈতিক সুবিধাও হচ্ছে। কেশরীনাথ উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন বিজেপি নেতা। তাঁর মন্তব্যের জেরে তৃণমূল এ কথা বলার সুযোগ পেয়ে গেল যে, বিজেপি তাঁর সরকারকে সব রকম ভাবে প্যাঁচে ফেলার চেষ্টা করছে। তাই রাজভবন বেরিয়ে সাংবাদিকদের সামনেও কেশরীনাথের সমালোচনা করে পার্থবাবুরা বলেন, ‘‘উনি যা করলেন তা কোনও রাজ্যপালের করা উচিত নয়। ওঁর কথার সঙ্গে একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের বক্তব্যের মিল দেখা যাচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Governor Supports Army Toll Plaza Case
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE