Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Health

করোনা নয়, তরুণীকে ঘিরে দেশ-বিভ্রাট! 

এনসিওভি-তে প্রথম যে-ভারতীয় (কেরলের এক ছাত্রী) আক্রান্ত হয়েছেন, তিনি ২৩ জানুয়ারি কুনমিং থেকে বিমানে কলকাতা হয়ে দেশে ফেরেন।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:৩০
Share: Save:

জলে গেল ৪৮ ঘণ্টার পরিশ্রম। সোমবারের ছিল ডামাডোল। মঙ্গলবার ধরা পড়ল দেশ-বিভ্রাট!

নোভেল করোনাভাইরাস বা এনসিওভি-র বাহক কি না, সেই সংশয় দূর করতে উত্তরবঙ্গের একটি জেলার এক তরুণীর খোঁজে ছিলেন স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা। সোমবার স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছিল, তরুণীর খোঁজ মিলেছে এবং তিনি সুস্থ আছেন। মঙ্গলবার জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে লিখিত ভাবে স্বাস্থ্য ভবনে জানানো হয়েছে, ওই তরুণী মোটেই চিন-ফেরত নন। তিনি এসেছেন ফিলিপিন্স থেকে!

এনসিওভি-তে প্রথম যে-ভারতীয় (কেরলের এক ছাত্রী) আক্রান্ত হয়েছেন, তিনি ২৩ জানুয়ারি কুনমিং থেকে বিমানে কলকাতা হয়ে দেশে ফেরেন। সেই বিমানেরই দ্বিতীয় যাত্রীর করোনা-সংক্রমণ ধরা পড়ার পরে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নির্দেশের প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য ভবন কলকাতায় আসা বঙ্গবাসী আট যাত্রীর খোঁজ শুরু করে। রবিবার জানা যায়, ওই আট জনের মধ্যে এক জন উত্তরবঙ্গের একটি জেলার বাসিন্দা। সেই তরুণীর বাড়ি গিয়ে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা কথাও বলেন। তরুণী প্রথম থেকেই বলে আসছিলেন, তিনি চিন যাননি, ফিরেছেন ফিলিপিন্স থেকে। তার পরেও তাঁর লালারসের নমুনা সংগ্রহের জন্য তাঁকে কী ভাবে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে আনা হবে, সেই পরিকল্পনা করে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু এ দিন তরুণীর সঙ্গে কথা বলে বোঝা যায়, তিনি কখনওই চিনে যাননি, ফিলিপিন্স থেকে সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন। জেলা স্তর থেকে এই খবর পেয়ে দিল্লির সঙ্গে যোগাযোগ করে স্বাস্থ্য ভবন। দিল্লিও তরুণীর বক্তব্যে সম্মতির সিলমোহর দেয়।

‘‘উনি প্রথম থেকেই চিন যাওয়ার কথা অস্বীকার করছিলেন। কিন্তু আতঙ্কে অস্বীকার করছেন কি না, তা বোঝা যাচ্ছিল না। তা ছাড়া দিল্লি যে-নাম ও ঠিকানা দিয়েছিল, সেগুলো মিলে যাওয়াও বিভ্রান্তির একটা কারণ। দিল্লি জানিয়ে দেওয়ার পরে আর কোনও সংশয় রইল না,’’ বলেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এ দিন পর্যন্ত করোনা-কবলিত বিভিন্ন দেশ থেকে আসা যে-সব বঙ্গবাসী নজরদারির তালিকায় আছেন, তাঁদের সংখ্যা ২৪। সোমবার বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে কুনমিংয়ের বিমানের যে-তিন জন যাত্রী ভর্তি হয়েছিলেন, তাঁদের এ দিন ছুটি দেওয়া হয়েছে। আইডি-র সুপার আশিস মান্না জানান, নতুন করে ভর্তি হয়েছেন তিন জন। তাঁদের মধ্যে এক জন নাবিক।

আর্ক প্রেস্টিজ’ নামে একটি জাহাজ এ দিন বজবজে পৌঁছনোর পরে ২৭ বছরের ওই নাবিকের ‘স্ক্রিনিং’ বা স্বাস্থ্যপরীক্ষা হয় থার্মাল ক্যামেরায়। তাতে ধরা পড়ে, তাঁর জ্বর হয়েছে। তার পরেই তাঁকে আইডি-তে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, পুণের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি বা এনআইভি এবং কলকাতার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কলেরা অ্যান্ড এন্টেরিক ডিজ়িজ়েস বা নাইসেডে যে-আটটি নমুনা পাঠানো হয়েছিল, তার মধ্যে ছ’টিতে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া যায়নি। আইডি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অন্য দু’জনের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়া বাকি আছে বলে জানান অধ্যক্ষা অণিমা হালদার।

আইডি-তে চিকিৎসাধীন অন্য দু’জনের মধ্যে এক জন হুগলির বাসিন্দা, দ্বিতীয় জন ওড়িশাবাসী। স্বাস্থ্য অধিকর্তা জানান, দ্বিতীয় ব্যক্তির খোঁজে ছিল ওড়িশার স্বাস্থ্য দফতর। তিনি কলকাতায় এসেছেন, দিল্লি মারফত এই খবর পেয়ে তাঁকে আইডি-তে ভর্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Health Coronavirus Philippines
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE