Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ডাক্তারদের বন্ডের সব বিজ্ঞপ্তি চাইল কোর্ট

সরকারি কৌঁসুলি জানান, রাজ্যে চার হাজার চিকিৎসকের অভাব রয়েছে। সরকার ওই চিকিৎসকের জন্য ন’লক্ষ ৬০ হাজার টাকা খরচ করেছে। এ রাজ্যের মানুষের সেবা করার নৈতিক দায়িত্ব রয়েছে তাঁর।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০১৮ ০২:৫৯
Share: Save:

স্নাতকোত্তর পাঠ শেষে সরকারি হাসপাতালে কাজ না-করলে চিকিৎসকদের বন্ডের টাকা মেটাতে হবে বলে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে রাজ্য সরকার। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত ও বিচারপতি আশা অরোরার ডিভিশন বেঞ্চ বুধবার প্রশ্ন তুলেছে, রাজ্য সরকার কি নিজেদের খেয়ালখুশি অনুযায়ী বন্ডের শর্ত বদলাতে পারে?

সরকারি আইনজীবী এ দিন আদালতে এই প্রশ্নের কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি। আদালতের নির্দেশ, বন্ড সংক্রান্ত সব বিজ্ঞপ্তি আজ, বৃহস্পতিবার ডিভিশন বেঞ্চে পেশ করতে হবে রাজ্য সরকারকে।

২০১৫ সালে মধ্যপ্রদেশ থেকে এ রাজ্যে ‘সাইকিয়াট্রি’ (মানসিক রোগের চিকিৎসা) বিষয়ে দু’বছরের পিজি ডিপ্লোমা পড়তে আসেন রাহুল বনশল নামে এক চিকিৎসক। সেই সময় রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে দিয়ে বন্ডে সই করিয়ে নেয়। শর্ত ছিল, ডিপ্লোমা পড়া শেষ না-হওয়া পর্যন্ত যাবতীয় ডিগ্রির নথি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে জমা রাখতে হবে। মাঝপথে পড়া ছেড়ে দিলে বা পড়া শেষ
হওয়ার পরে সরকারি হাসপাতালে চাকরি না-করলে রাজ্যকে ২০ লক্ষ টাকা দিতে হবে। তবেই ডিগ্রির নথি ফেরত পাবেন।

রাহুলের আইনজীবী কল্লোল বসু জানান, পড়া শেষে তাঁর মক্কেল একাধিক বার সরকারকে চিঠি দিয়ে জানান, তিনি উচ্চশিক্ষার জন্য মহারাষ্ট্রে যেতে চান। বন্ডের টাকা জমা দিতেও ইচ্ছুক। তাঁর ডিগ্রির নথি ফেরত দেওয়া হোক। অভিযোগ, সরকার তাঁর চিঠির জবাব দেয়নি। বন্ডের টাকার চেকও নিতে চায়নি।

অগত্যা গত ২১ মে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি শিবকান্ত প্রসাদের আদালতে মামলা করেন ওই চিকিৎসক। তাঁর আইনজীবী জানান, বিচারপতি প্রসাদ রাজ্যকে নির্দেশ দেন, বন্ডের টাকা জমা নিয়ে ওই চিকিৎসকের সব নথিপত্র ফেরত দিতে হবে সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে আপিল মামলা করে সরকার।

এ দিন আপিল মামলার শুনানিতে কল্লোলবাবু বন্ডের টাকা জমা দেওয়ার রসিদ দেখিয়ে বলেন, তাঁর মক্কেল এখনও ডিগ্রির নথি ফেরত পাননি। বিচারপতি দত্ত সরকারি কৌঁসুলি তপন মুখোপাধ্যায়ের কাছে জানতে চান, কী কারণে নথি ফেরত দেওয়া হচ্ছে না?

সরকারি কৌঁসুলি জানান, রাজ্যে চার হাজার চিকিৎসকের অভাব রয়েছে। সরকার ওই চিকিৎসকের জন্য ন’লক্ষ ৬০ হাজার টাকা খরচ করেছে। এ রাজ্যের মানুষের সেবা করার নৈতিক দায়িত্ব রয়েছে তাঁর।

তা শুনে বিচারপতি দত্ত বলেন, ‘‘খরচ ন’লক্ষ ৬০ হাজার। সরকার পেয়েছে ২০ লক্ষ! আপত্তি কোথায়?’’ তাঁর মন্তব্য, সরকার এখনও ওই চিকিৎসককে চাকরির নিয়োগপত্র দেয়নি। সে-ক্ষেত্রে নথি ফেরত না-পাওয়ার কারণ নেই।

তার পরেই ডিভিশন বেঞ্চ প্রশ্ন তোলে, সরকার খেয়ালখুশি অনুযায়ী বন্ডের শর্ত বদলাতে পারে কি?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Calcutta High Court Doctor
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE