Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

স্বাস্থ্য ভবনের পাল্টা তিরে বিদ্ধ ডাক্তাররা

প্রেসক্রিপশনে ডেঙ্গি না লেখার চাপ রয়েছে বলে অভিযোগ ছিল ডাক্তারদের। স্বাস্থ্য ভবন অভিযোগ তুলল, ডাক্তাররা ডেঙ্গির সঙ্গে যুক্ত আর একটি সমস্যা, যার পোশাকি নাম ‘ক্যাপিলারি লিকেজ’-এর চিকিৎসা ঠিক মতো করছেন না বলে পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে।

সোমা মুখোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:২৭
Share: Save:

এত দিন ডাক্তাররা অভিযোগ তুলছিলেন স্বাস্থ্য ভবনের দিকে। এ বার পাল্টা আঙুল তুলল স্বাস্থ্য ভবন।

প্রেসক্রিপশনে ডেঙ্গি না লেখার চাপ রয়েছে বলে অভিযোগ ছিল ডাক্তারদের। স্বাস্থ্য ভবন অভিযোগ তুলল, ডাক্তাররা ডেঙ্গির সঙ্গে যুক্ত আর একটি সমস্যা, যার পোশাকি নাম ‘ক্যাপিলারি লিকেজ’-এর চিকিৎসা ঠিক মতো করছেন না বলে পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে।

ক্যাপিলারি অর্থাৎ রক্তজালিকা ফেটে প্লাজমা বেরিয়ে যাওয়াকে ক্যাপিলারি লিকেজ বলে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ডেঙ্গির ক্ষেত্রে এই লিকেজ হচ্ছে মূলত পেটে। এতে পেট ফুলে যাচ্ছে, রক্তচাপ কমছে, প্রস্রাবও কমছে। রোগীকে দেখে এবং কথা বলে উপসর্গগুলি জানলে ডাক্তারের পক্ষে প্রাথমিক রোগ নির্ণয় সম্ভব। রক্তে প্যাকড সেল ভলিউম পরীক্ষা করে ঘনত্ব বেড়েছে কি না দেখে নেওয়া ও স্যালাইন দিয়ে রক্তজালিকাগুলিকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনাই তাঁদের কর্তব্য। এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, ‘‘কিছু ব্যবস্থা নিয়ে টানা ৭২ ঘন্টা নজরদারি রাখলেই বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব। কিন্তু সেটা হচ্ছে না।’’

কেন? কলকাতার একাধিক মেডিক্যাল কলেজের ডাক্তার জানাচ্ছেন, ক্যাপিলারি লিকেজ-এর রোগীদের অধিকাংশকেই কলকাতায় ‘রেফার’ করা হচ্ছে ডায়েরিয়া কিংবা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখিয়ে। বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল সূত্রের খবর, শুধু সেখানেই সপ্তাহে গড়ে অন্তত ২০-২৫ জন ক্যাপিলারি লিকেজ রোগী ‘ডায়েরিয়া পেশেন্ট’ বলে রেফার হয়ে আসছেন। রোগীকে দেখে ক্যাপিলারি লিকেজ মনে হলে ডাক্তাররা কেন নজরদারি শুরু করছেন না? একটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকের কথায়, ‘‘এ বছর ক্যাপিলারি লিকেজ মূলত হচ্ছে ডেঙ্গির কারণেই। ক্যাপিলারি লিকেজ বললে পরোক্ষে ডেঙ্গিকে স্বীকার করা হবে। তাই চুপচাপ ডায়েরিয়া বলে চালানো হচ্ছে।’’ এটা অনৈতিক নয়? ওই চিকিৎসক স্বীকার করছেন, ‘‘ডাক্তাররা এখন যে টালমাটাল অবস্থায় আছি, তাতে নিজেদের পিঠ বাঁচাতে কিছুটা সতর্ক থাকতে হচ্ছে।’’ স্বাস্থ্যকর্তাদেরও দাবি, ‘‘এক দিকে সরকারি তরফে বাস্তবকে অস্বীকারের চেষ্টা, অন্য দিকে ডাক্তারদের একাংশের দায় এড়ানোর মনোভাব— সব মিলিয়ে পরিস্থিতি জটিল।’’

অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ডক্টর্স-এর তরফে গৌতম মুখোপাধ্যায় এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ডাক্তাররা সব দিক থেকে পর্যুদস্ত। তা সত্ত্বেও অহেতুক রেফারের ঘটনা তেমন ঘটছে না।’’ সার্ভিস ডক্টরস ফোরাম-এর তরফে সজল বিশ্বাসের বক্তব্য, নিজের দায় এড়াতে সরকার এখন ডাক্তারদের দিকে তির ঘোরাচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Health department Doctors
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE