Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ছুটি আদায় করে ফিরে এলেন ‘হোম সিক’ বুদ্ধ

প্রবল শ্বাসকষ্ট এবং রক্তে হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ার সমস্যা নিয়ে গত শুক্রবার রাতে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছিল বুদ্ধবাবুকে। কয়েক দিনের চিকিৎসায় হিমোগ্লোবিন বেড়েছে, নিয়ন্ত্রণে এসেছে নিউমোনাইটিস।

ফেরা: হাসপাতাল থেকে পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে ফিরলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সোমবার। ছবি: সুমন বল্লভ

ফেরা: হাসপাতাল থেকে পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে ফিরলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সোমবার। ছবি: সুমন বল্লভ

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:৫৫
Share: Save:

শেষ পর্যন্ত রোগীর প্রবল ইচ্ছার কাছে হারই মানতে হল চিকিৎসকদের! অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাঁরা ছুটি মঞ্জুর করলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে। বাড়ির চেনা পরিবেশে ফিরে অবশ্য আশ্বস্ত এবং খুশি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। আপাতত বাড়িতেই দু’জন চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণে তাঁর চিকিৎসা চলবে।

প্রবল শ্বাসকষ্ট এবং রক্তে হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ার সমস্যা নিয়ে গত শুক্রবার রাতে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছিল বুদ্ধবাবুকে। কয়েক দিনের চিকিৎসায় হিমোগ্লোবিন বেড়েছে, নিয়ন্ত্রণে এসেছে নিউমোনাইটিস। বাইপ্যাপের সাহায্য নিয়েই স্বস্তিতে একটু ঘুমোতে পারছেন। শারীরিক অবস্থায় উন্নতির লক্ষণ ধরা পড়তেই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর মনে হতে শুরু করেছিল, তাঁর আর হাসপাতালে থাকার দরকার নেই। যে ইচ্ছা আরও জোরালো হয় সোমবার সকাল থেকে। নিজের চিকিৎসককে জোর গলায় সে কথা জানিয়ে দেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। টানাপড়েন কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত বিকালের মধ্যেই অ্যাম্বুল্যান্সে চেপে পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে ফেরেন বুদ্ধবাবু।

তাঁর চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড অবশ্য বুদ্ধবাবুর স্বাস্থ্যের উন্নতির কথা বলেও এ দিন সকালে জানিয়েছিল, আরও কয়েক দিন হাসপাতালে রেখে ইন্ট্রা-ভেনাস ওষুধ এবং অক্সিজেন চালানো প্রয়োজন। কিন্তু বেঁকে বসেন বুদ্ধবাবু। শেষমেশ তাঁকে বাড়ি ফেরানোরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিনিময়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস, তিনি চিকিৎসকদের যাবতীয় পরামর্শ মেনে চলবেন। এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘উনি ‘সিক’। কিন্তু তার চেয়েও বেশি ‘হোম সিক’! তাই আর জোর করা হয়নি।’’ হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ার আগে দুই চিকিৎসক সরেজমিনে দেখে আসেন বুদ্ধবাবুর থাকার জায়গা। হাসপাতালের তত্ত্বাবধানেই বাড়িতে এখন তাঁর চিকিৎসা চলবে। মেডিক্যাল বোর্ডের চিকিৎসক কৌশিক চক্রবর্তী জানিয়েছেন, বাইপ্যাপ, ইন্ট্রা-ভেনাস অ্যান্টিবায়োটিক এবং চেস্ট ফিজিয়োথেরাপি বাড়িতেই চালাতে হবে কয়েক দিন।

হাসপাতালে বহু মানুষ দেখতে যাচ্ছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে। হাসপাতালে ভর্তি অন্য রোগীদের পরিজনেরাও খোঁজ নিচ্ছিলেন। সংবাদমাধ্যমে তাঁর শারীরিক অবস্থার খুঁটিনাটি খবর বেরোচ্ছিল। সিপিএম সূত্রের খবর, তাঁকে ঘিরে এই ‘ব্যস্ততা’ একেবারেই পছন্দ হচ্ছিল না বুদ্ধবাবুর। রীতিমতো তা নিয়ে উষ্মাও প্রকাশ করেছেন এ দিন। তার পরেই তাঁকে ছুটি দিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। হাসপাতাল থেকে ট্রলিতে বার করে অ্যাম্বুল্যান্সে তোলা এবং পাম অ্যাভিনিউয়ের আবাসনের অপ্রশস্ত দরজা দিয়ে ঢোকানোর সময়ে হইচই দেখে বুদ্ধবাবু বলছিলেন, ভিড় না করতে!

অ্যাম্বুল্যান্সের পিছনে অন্য গাড়িতে চেপে বাড়ি পৌঁছন বুদ্ধবাবুর স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্য ও সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম। তার আগে হাসপাতালের বিল মিটিয়ে দেয় দলই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Health Buddhadeb Bhattacharya Doctor
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE