Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

দোলার দিদিগিরি অস্ত্র কারখানায়

অস্ত্র কারখানার ভিতরে ত্রিস্তর নিরাপত্তা বলয়। সেই বলয় সরাসরি সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে থাকে। অবসরপ্রাপ্ত সেনা অফিসার ও নিজস্ব নিরাপত্তা অফিসারেরা পাহারা দেন। ১৯৮৬ সালে তৈরি প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের নিয়ম অনুযায়ী বাইরের কেউ ওই কারখানায় ঢুকতে চাইলে তাঁকে আগে থেকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের লিখিত অনুমতি নিতে হবে। দেশের প্রধানমন্ত্রীর ক্ষেত্রেও একই নিয়ম।

দোলা সেন

দোলা সেন

সুনন্দ ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৮ ০৫:৫৫
Share: Save:

পুলিশ, আধাসেনা এবং সেনাবাহিনীর জন্য রিভলভার ও বুলেট বানানো হয় সেখানে। কাশীপুর গান অ্যান্ড শেল ফ্যাক্টরিকে তাই ‘হাই সিকিওরিটি জ়োন’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

এ-হেন ‘সেনসিটিভ সিকিওরিটি জ়োন’-এ কার্যত জোরজবরদস্তি করে ঢুকে পড়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল সাংসদ দোলা সেনের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, কারখানায় ঢোকার অনুমতি তাঁর ছিল না। তাঁর সঙ্গে তৃণমূলের একাধিক কাউন্সিলরও ছিলেন। সেনাবাহিনীর মুখপাত্র এস এস বিরদি জানান, এই ঘটনায় ওই কারখানার দুই নিরাপত্তাকর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। শুরু হয়েছে অভ্যন্তরীণ তদন্ত। কারখানা-কর্তৃপক্ষ বিষয়টি লিখিত ভাবে অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ডের সদস্যকে জানিয়েছেন। লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে দিল্লিতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের যুগ্মসচিব সঞ্জয় প্রতাপের কাছেও।

অস্ত্র কারখানার ভিতরে ত্রিস্তর নিরাপত্তা বলয়। সেই বলয় সরাসরি সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে থাকে। অবসরপ্রাপ্ত সেনা অফিসার ও নিজস্ব নিরাপত্তা অফিসারেরা পাহারা দেন। ১৯৮৬ সালে তৈরি প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের নিয়ম অনুযায়ী বাইরের কেউ ওই কারখানায় ঢুকতে চাইলে তাঁকে আগে থেকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের লিখিত অনুমতি নিতে হবে। দেশের প্রধানমন্ত্রীর ক্ষেত্রেও একই নিয়ম।

দোলাদেবী কিন্তু অনুমতিপত্র দেখাতে পারেননি। অভিযোগ, ৭ জুলাই দুপুরে ফ্যাক্টরির সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার রাজীব চক্রবর্তীর সঙ্গে দেখা করবেন বলে কারখানার গেটে পৌঁছন তিনি। রাজীববাবুর সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়টি আগে থেকে নির্ধারিত ছিল না। কারখানার কয়েক জন কর্মী দোলাদেবীর সমর্থক। নেত্রী এসেছেন শুনে তাঁরাও গেটের কাছে জড়ো হন। তার পরে কার্যত জোর করে গাড়ি নিয়েই দোলাদেবী কারখানার ভিতরে ঢোকেন বলে সেনাবাহিনীর অভিযোগ। দু’টি নিরাপত্তা বলয় ভেদ করে কাউন্সিলরদের নিয়ে তিনি পৌঁছে যান সিনিয়র জিএমের দফতরে।

সেনা সূত্রের খবর, রাজীববাবু সেই সময় মধ্যাহ্নভোজে গিয়েছিলেন। অভিযোগ, রাজীববাবুকে না-পেয়ে তাঁর দফতরের কর্মীদের বেশ কিছু ‘কড়া’ কথা শুনিয়ে দেন দোলাদেবী। ৯ জুলাই রাজীববাবু লিখিত অভিযোগ পাঠান অর্ডন্যান্স বোর্ডের সদস্য এসপি মিশ্রের কাছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই দুই রক্ষী অরবিন্দ সোনি ও কৈলাস হেলাকে সাসপেন্ড করা হয়। ভয় পেয়ে গেট খুলে দিয়েছিলেন তাঁরাই। গেটে বা কারখানার ভিতরে কোনও মহিলা রক্ষী নেই। তাই দোলাদেবীকে আটকানো যায়নি বলে জানান কারখানার কর্মীদের একাংশ। মিশ্র লিখিত ভাবে বিষয়টি দিল্লিকে জানান। সাংসদের এ-হেন আচরণের পরে কী করণীয়, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

শুক্রবার দোলাদেবীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘কই, আমি তো কোথাও যাইনি! এই ধরনের কোনও ঘটনাও ঘটেনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dola Sen Gun Shell Factory
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE