পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীদের সঙ্গে যে বঞ্চনাই হচ্ছে, সে কথা অনস্বীকার্য। —ফাইল চিত্র।
গত তিন বছরে হয়নি। আগামী ছ’মাসেও হবে কি না সন্দেহ!
বুধবার ষষ্ঠ বেতন কমিশনের মেয়াদ আরও ছ’মাস বাড়িয়েছে রাজ্য সরকার। সরকারি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আগামী বছর ২৭ মে-র মধ্যে রিপোর্ট দেবে কমিশন। কিন্তু কমিশনের সামনে এখনও যা কাজের পাহাড়, তাতে ছ’মাসে সেই কাজ শেষ হবে এমন আশা করছেন না কমিশনের কর্তারা।
কী সেই কাজ? কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, বেতন বৃদ্ধির দাবি নিয়ে এ পর্যন্ত সরকারি কর্মচারীদের ৪৫০টি সংগঠন দাবিপত্র পেশ করেছে। এখনও পর্যন্ত এই দাবিপত্রগুলিরই শুনানি শেষ হয়েছে। শুনানি শেষে যা যা দাবি জমা পড়েছে, তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলির মতামত জানতে চেয়েছে কমিশন। সেই মত এলে কমিশন বেতন বৃদ্ধির ব্যাপারে সরকারের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করবে।
সরকারি কর্মীদের এত সংগঠন এল কোথা থেকে? কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, ৫১টি দফতরের প্রতিটি শাখায় একাধিক সংগঠন রয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শাসক দলেরই একাধিক সংগঠন। এক কর্তা জানান, দমকল কর্মীদের চারটি সংগঠন, ভেটেরেনারি ডাক্তার ও কর্মীদের পাঁচটি সংগঠন, দন্ত চিকিৎসকদের চারটি সংগঠন, সরকারি চিকিৎসকদের চার-পাঁচটি সংগঠন আলাদা আলাদা দাবিপত্র পেশ করেছে।
কমিশন জানাচ্ছে, এ ছাড়া ৯০০ জন ব্যক্তি তাঁদের দাবিপত্র পেশ করেছেন। কারণ, এ রাজ্যে বহু সরকারি কর্মীর সংগঠন করা নিষিদ্ধ। যেমন পুলিশ কর্মী, আবগারি কর্মী। এঁরা ব্যক্তিগত ভাবে আবেদন করেছেন। সরকারের কাছ থেকে সংগঠনগুলির দাবির জবাব এলে তার পর ব্যক্তিগত আবেদনকারীদের দাবির শুনানি শুরু হবে। ছ’মাসের মধ্যে সেই কাজ শেষ হবে বলে মনে করছেন না কমিশন কর্তাদের একাংশ। ‘‘তবে নবান্ন থেকে ‘নির্দেশ’ এলে অবশ্য অন্য কথা,’’— মন্তব্য এক কর্তার।
শুনানি পর্ব মিটলে কমিশন তিন ভাগে বেতন বৃদ্ধির সুপারিশ পেশ করবে। প্রথম রিপোর্টে সরকারি
কর্মী, স্কুল-কলেজ, পুর-পঞ্চায়েত কর্মীদের বিষয়ে সুপারিশ করা হবে। পরের রিপোর্টে কিছু বিশেষ পদভিত্তিক কাজের জন্য বিশেষ সুপারিশ থাকলে তা জানানো হবে। তৃতীয় রিপোর্টে সরকারের অধীন ৭৮টি সংস্থা সম্পর্কে সুপারিশ করা হবে। তবে সেই সংক্রান্ত হিসেবনিকেশ কিছুই শুরু হয়নি।
কমিশনের সুপারিশ পেলেই কি সরকার তা কার্যকর করতে প্রস্তুত? অর্থ দফতরের এ নিয়ে মুখে কুলুপ। তবে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের কাছে অর্থ দফতর যে দাবি জানিয়েছে তাতে বলা হয়েছে, বর্তমান হারে কর্মীদের বেতন দিতে ২০১৯-২০ সালে ৪২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা খরচ হবে। নয়া বেতন হার কার্যকর হলে তা বেড়ে ৫২ হাজার ৬৪ কোটি হতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy