জামির হোসেন ওরফে রাজ। নিজস্ব চিত্র
গাড়ি নিয়ে থানায় গিয়ে বাবা যখন ছেলে নিখোঁজ বলে ডায়েরি লেখাচ্ছেন, পাঁচ বছরের ছেলে তখন ‘বন্দি’ ওই গাড়ির ডিকিতেই। পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড়ে মিষ্টি ব্যবসায়ীর ছেলেকে অপহরণের তদন্তে এমনই জানা গিয়েছে বলে দাবি পুলিশের।
পুলিশের দাবি, ধৃত গাড়ি চালক জামির হোসেন ওরফে রাজই মালিকের ছেলেকে অপহরণ করেছিল। ছেলেটিকে অচেতন করে হাত-পা বাঁধা, গলায় প্লাস্টিকের ‘স্ট্রিপ’ দিয়ে ফাঁস দেয় সে। এই ঘটনায় ধৃত আর এক অভিযুক্ত শেখ রবিউলকে হিন্দিতে হুমকি দেওয়ার জন্য প্রশিক্ষণও দিয়েছিল সে।
জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়ের কথায়, “ঘটনাক্রম দেখে বোঝা যাচ্ছে, চালকই অপহরণ করেছিল।’’
রবিবার বেলা ১১টার পর থেকে নিখোঁজ ছিল ওই ব্যবসায়ী বলিরাম ওঝার পাঁচ বছরের ছেলে। পাঁচ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে হিন্দিতে হুমকি-ফোন আসে। বিকেলে খবর আসে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ধারে কাঁদোসোনা গ্রামে ঝোপ থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার করেছেন শিশুটিকে। পুলিশের দাবি, জেরায় রবিউল তাদের জানিয়েছে, রাজ বলিরামবাবুর থেকে অগ্রিম নিয়ে একটি পুরনো গাড়ি কিনে ভেবেছিল। কিন্তু ধার হিসেবে অগ্রিমের টাকা দিতে চাননি ওই ব্যবসায়ী। তার পর থেকে তাঁর ছেলেকে অপহরণের ছক কষেছিল রাজ। সে কাজে সে সঙ্গী করে রবিউলকে। কয়েক দিন ধরে মোবাইলে নানা ভিডিয়ো দেখিয়ে রাজই তাকে ভারী গলায় হিন্দিতে হুমকি দেওয়া শিখিয়েছিল বলে রবিউলের দাবি।
বলিরামবাবু সপ্তাহ দু’য়েক আগে ওই গাড়িটি কেনার পরে কাজে যোগ দেয় রাজ। পুলিশের দাবি, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, রবিবার শিশুটিকে হাঁটিয়ে গাড়িতে তোলে রাজ। একটু দূরে গিয়ে গাড়ি ঘোরানোর সময় তাকে ডিকিতে ঢোকানো হয়। বেলা সওয়া ১২টা নাগাদ বলিরামবাবু যখন থানায় অভিযোগ করতে যান, তখন তাঁর গাড়ির ডিকিতেই ছিল শিশুটি। শিশুটি পুলিশকে জানিয়েছে, ‘ড্রাইভার আঙ্কল’ তাকে ফেলে দিয়েছিল।
বলিরামবাবু বলেন, “থানা থেকে ফেরার পরে, আরও কয়েকটা জায়গায় যাই। রাজ প্রত্যেক বারই গাড়ি দূরে রাখছিল।’’ পুলিশ সূত্রের খবর, বলিরামবাবু এ নিয়ে প্রশ্ন করতেই ফাঁপরে পড়ে ধৃত। গাড়ি ঘোরানোর নামে রাস্তার ধারের গ্রাম কাঁদরসোনায় ফেলে আসে শিশুটিকে। তার পরে গাড়ি দোকানের সামনে রেখে পালায়। রাতে মাদক-সহ রাজকে ধরে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy