মহড়া: পুরস্কারপ্রাপ্ত ঢাকি নীরদ ঋষি। —নিজস্ব চিত্র
এত কাল রথের দিনই বায়না হয়ে যেত। বাঁধাছাদা শুরু হয়ে যেত তার পরপরই। পুজোর সময় টানা কয়েক দিন অসমের গুয়াহাটি, তিনসুকিয়া থেকে শুরু করে ডিব্রুগড়, খাওরাপেটিয়া, রঙ্গিয়া, তেজপুরে কাটিয়ে ফিরতেন কোচবিহারের ঢাকিরা। এ বার সেই ঢাকিদের কেউ কেউ যেমন বরাত পাননি, অনেকে আবার তেমন ডাক পেলেও যেতে চাইছেন না।
ঢাকিদের ধারণা, অসমে নাগরিক পঞ্জির চূড়ান্ত খসড়ায় ৪০ লক্ষ জনের নাম না ওঠার প্রভাব পড়েছে পুজোতেও। অসমের পুজোর কর্তাদের বক্তব্য অবশ্য অন্য রকম। মালিগাঁও কালীবাড়ির পুজোর উদ্যোক্তা অমিতাভ চৌধুরী বলেন, ‘‘পুজো ঠিক মতোই হবে। ঢাকিও কয়েক দিনের মধ্যেই বুকিং হয়ে যাবে।’’ গুয়াহাটির বীণাপাণি পুজো কমিটির কর্তা প্রদীপ ঘোষ আবার বলছেন, ‘‘আমাদের কোচবিহারের একই ঢাকিকে বায়না দেওয়া হয়ে গিয়েছে। এনআরসি-র প্রভাব পুজোয় পড়বে না।’’
কোচবিহারের ঢাকিদের সুনাম যথেষ্ট। কোচবিহারের গোঁসাইরহাট, সিতাই, শীতলখুচি, মাথাভাঙা ও মেখলিগঞ্জের জামালদহের শতাধিক ঢাকি বংশপরম্পরায় প্রতি বছর অসমে বাজাতে যান। বছরে সব থেকে বেশি রোজগার হয় এই সময়েই। স্থানীয় ভাবে যেখানে মেলে হাজার পাঁচেক টাকা, অসমে গেলে সেখানে মাথা পিছু অন্তত ১২ হাজার টাকা বাঁধা। উত্তরবঙ্গের পুরস্কারপ্রাপ্ত ঢাকি নীরদ ঋষি বলেন, ‘‘আমাদের জেলা থেকে অন্তত দেড়শো ঢাকি অসমের বিভিন্ন পুজোয় যান।’’
জামালদহের ঢাকি দুধেশ্বর ঋষি বলেন, ‘‘প্রায় ২০ বছর ধরে অসমে যাচ্ছি। এ বার এখনও ডাক পাইনি।’’ জামালদহেরই খোলা হাজরা, প্রেম হাজরা, মাথাভাঙার ধীরেন হাজরা, গোপালপুরে আমাতু ঋষিরা অবশ্য জানান, ডাক পেলেও অসমে যাবেন না। আমাতু বলেন, ‘‘বাড়ির লোকই নিষেধ করছে। তাই যাব না।’’
(সহ-প্রতিবেদন: রাজীবাক্ষ রক্ষিত)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy