Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
State news

দুলাল আত্মঘাতীই, বলছে ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট, মানতে নারাজ পরিবার

দুলালের ময়নাতদন্তের জন্য ৫ জন চিকিত্‌সককে নিয়ে বোর্ড গঠন করা হয়েছিল। পুরুলিয়া জেলা হাসপাতালে গোটা ময়নাতদন্তের প্রক্রিয়া ভিডিওগ্রাফি করে রাখা হয়েছে।

আত্মহত্যার তত্ত্ব মানতে রাজি নয় দুলালের পরিবার। নিজস্ব চিত্র।

আত্মহত্যার তত্ত্ব মানতে রাজি নয় দুলালের পরিবার। নিজস্ব চিত্র।

সিজার মণ্ডল
বলরামপুর শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৮ ১৭:০৬
Share: Save:

পুলিশ সুপার বদলালো, কিন্তু বদলালো না বয়ান। ময়নাতদন্তের আগেই শনিবার পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার জয় বিশ্বাস বলেছিলেন, পুরুলিয়ার ডাভা গ্রামের হাই টেনশন টাওয়ারে যাঁকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে, সেই দুলাল কুমার আত্মহত্যা করেছেন। এর পরেই জয় বিশ্বাসকে রাতারাতি বদলি। সিআইডি-র স্পেশ্যাল সুপারিটেনডেন্টের পদে থাকা আকাশ মাঘারিয়াকে আনা হয় সেই জায়গায়। রবিবার দায়িত্ব নিয়ে অবিকল জয় বিশ্বাসের সুরেই তিনি বললেন, ‘‘দুলাল কুমার আত্মহত্যাই করেছেন।’’

নতুন পুলিশ সুপারের বক্তব্য, ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে দুলালের শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যুর কথা বলা হয়েছে। চিকিত্‌সকদের উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ‘‘গলায় ফাঁস দিয়ে ঝোলার ফলেই তাঁর শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মৃত্যু। গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যায় যে লক্ষণগুলো দেখা যায়, তার প্রত্যেকটাই মিলেছে দুলালের দেহে। এর মধ্যে কোনও সন্দেহের অবকাশ নেই।’’

পুলিশের দাবি, দুলালের ময়নাতদন্তের জন্য ৫ জন চিকিত্‌সককে নিয়ে বোর্ড গঠন করা হয়েছিল। পুরুলিয়া জেলা হাসপাতালে গোটা ময়নাতদন্তের প্রক্রিয়া ভিডিওগ্রাফি করে রাখা হয়েছে।

দেখুন ভিডিয়ো

আরও পড়ুন: পড়ে রয়েছে বাড়া ভাত, ছেলে এল না

যদিও পুলিশের বক্তব্য মানতে রাজি নয় দুলালের পরিবার। ডাভা গ্রামে দুলালের স্ত্রী মণিকার দাবি, তাঁর স্বামী আত্মহত্যা করেননি। আত্মহত্যা করার মতো কোনও কারণও ছিল না। দুলালের দাদা কাশীনাথ কুমার জানিয়েছেন,‘‘বাবাকে খাবার দেওয়ার জন্য স্থানীয় ধানকলে গিয়েছিলেন দুলাল। খাবার দেওয়ার পর প্রতিদিন তিনি পাশের পুকুরে হাত-পা ধুয়ে নিতেন। শুক্রবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।’’

গ্রামের বাসিন্দা ধনঞ্জয় কুমারও আত্মহত্যার তত্ত্ব মানতে নারাজ। তাঁর দাবি, “আত্মহত্যা কেন করবে দুলাল? ওর কোনও পারিবারিক সমস্যা নেই। গ্রামের হিসেবে ওদের অর্থনৈতিক অবস্থাও যথেষ্ট ভাল।”

সেই সঙ্গে গ্রামবাসীদের আরও দাবি, যদি পুলিশ এতই নিশ্চিত যে দুলাল আত্মহত্যা করেছেন, তা হলে রবিবার সকালে সিআইডি এল কেন ঘটনাস্থলে? তার অর্থ, পুলিশ এখনও নিজেরাই ধোঁয়াশায়।

আরও পড়ুন: বন্‌ধের রাস্তায় বিজেপির টহলদারি, থমথমে পুরুলিয়ায় গেলেন লকেট

পুকুরের ধার থেকে পাওয়া যায় দুলালের মোটরবাইক, তখনও তাতে চাবি ঝুলছে। আর এখানেই পরিবারের প্রশ্ন। তবে কি দুলালকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল? যে পুকুরের ধার থেকে দুলালের বাইক পাওয়া যায়, সেখান থেকে হাইটেনশন টাওয়ারের দূরত্ব প্রায় ৮০০ মিটার। পরিবারের প্রশ্ন, আত্মহত্যা করার জন্য কেন এত দূর যাবেন দুলাল? না কি বিজেপি করার জন্যেই তাঁকে মেরে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল? গত মঙ্গলবার সুপুরডিতে গাছের ডালে ঝুলন্ত অবস্থায় যাঁকে পাওয়া গিয়েছিল, সেই ত্রিলোচন মাহাতোর পরিবারও করে আসছে এমনই সব প্রশ্ন। এখন তা শোনা যাচ্ছে দুলালের পরিবারের গলাতেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE