প্রতীকী ছবি।
সারা মাসে ওই একটি স্টেশন দিয়েই যাতায়াত করেন প্রায় ১ কোটি ৪২ লক্ষ যাত্রী। দক্ষিণ শহরতলির সোনারপুর স্টেশন নিয়ে এমনই পরিসংখ্যান জানাচ্ছে পূর্ব রেল। অথচ ওই বিপুল সংখ্যক যাত্রীদের জন্য স্টেশনে বরাদ্দ টিকিট কাউন্টার মাত্র পাঁচটি!
ধীরে ধীরে শহরে বদলে যাওয়া সোনারপুরে বাড়ছে জনসংখ্যা। ফলে স্টেশনের উপরে যাত্রীদের চাপ আরও বাড়বে বলে অনুমান রেল আধিকারিকদের। চাপ সামলাতে কর্তৃপক্ষ তাই সোনারপুর ছাড়াও দক্ষিণ শহরতলির কিছু স্টেশন থেকে মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে লোকাল ট্রেনের টিকিট কাটা জনপ্রিয় করতে উদ্যোগী হয়েছেন। টানা প্রচারে ফলও মিলছে বলে দাবি রেলের। নতুন এই ব্যবস্থা চালুর পরে কয়েক মাসে টিকিট বিক্রিতে রেলের আয় বেড়েছে প্রায় ১৮ শতাংশ।
পূর্ব রেল সূত্রে খবর, শিয়ালদহ ডিভিশনের দ্বিতীয় ব্যস্ততম স্টেশন সোনারপুর। শিয়ালদহ থেকে লোকাল ট্রেনে সারা মাসে প্রায় ১ কোটি ৬০ লক্ষের কাছাকাছি যাত্রী যাতায়াত করেন। সেখানে সোনারপুর থেকে সেই সংখ্যাটা প্রায় ১ কোটি ৪২ লক্ষ। অথচ শিয়ালদহে রয়েছে ১৪টি টিকিট কাউন্টার। কিন্তু সোনারপুরে মাত্র পাঁচটি। এ সব হিসেবের বাইরে রয়েছে অটোমেটিক টিকিট ভেন্ডিং মেশিন। যাত্রীসংখ্যার নিরিখে টিকিট কাউন্টারের সংখ্যা যে অপ্রতুল, তা স্বীকার করছেন রেল কর্তৃপক্ষ। এ দিকে কর্মী নিয়োগ করে টিকিট কাউন্টার বাড়াতে খরচ বাড়ে অনেকটাই। তাই বিকল্প পথের ভাবনায় এই মোবাইল অ্যাপের ব্যবস্থা উঠে এসেছে।
পূর্ব রেলের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, নিত্যযাত্রীদের একাংশ মাসিক টিকিট কেটে যাতায়াত করেন। তা ছাড়াও রেল অটোমেটিক টিকিট ভেন্ডিং মেশিনের ব্যবহার বাড়াতেও নজর দিচ্ছে। পাশাপাশি, বিনা টিকিটের যাত্রী ধরতে আগের তুলনায় কড়া হয়েছে রেল। কাউন্টারে না এসেও যাতে যাত্রীরা টিকিট কাটতে পারেন সে ক্ষেত্রে এই অ্যাপ কার্যকর বলে জানাচ্ছেন কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যেই অ্যাপ ব্যবহার করে টিকিট কাটা শুরু করেছেন অনেকেই। এমনকি মাসিক টিকিটও অ্যাপ থেকে কাটা যাচ্ছে।
অ্যাপের জনপ্রিয়তা বাড়াতে শিবির এবং লিফলেট বিলি করে প্রচার চালাচ্ছেন আধিকারিকেরা। কী ভাবে মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করা হবে? রেল সূত্রের খবর, স্মার্ট ফোনে ‘ইউটিএসঅনমোবাইল’ অ্যাপটি ডাউনলোড করতে হবে। অ্যাপ খুলে যাত্রীর নাম, মোবাইল নম্বর, জন্মতারিখ, পাসওয়ার্ড জানালেই তিনি রেজিস্টার্ড হয়ে যাবেন এবং তাঁর ‘রেল-ওয়ালেট’ তৈরি হয়ে যাবে। সেই ওয়ালেটে ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড অথবা টিকিট কাউন্টার থেকে প্রয়োজন মতো টাকা ভরে নিতে পারবেন যাত্রী। যাত্রা শুরুর আগে অ্যাপ খুলে মোবাইলেই গন্তব্যের টিকিট কাটা যাবে। পরীক্ষক টিকিট চাইলে মোবাইলেই তা দেখানো যাবে।
শিয়ালদহ ডিভিশনের কমার্শিয়াল ম্যনেজার কৌশিক মিত্র বলেন, “সোনারপুর, যাদবপুর, বারুইপুর, বালিগঞ্জ ছাড়াও বিধাননগর ও নৈহাটির মতো স্টেশনেও অ্যাপের মাধ্যমে যাত্রীদের টিকিট কাটতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। তবে সোনারপুরে যাত্রী সংখ্যা বেশি হওয়ায় ওই স্টেশনকেই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy