Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ভোটার-তথ্য যাচাইয়ে প্রচার ব্যক্তিগত স্তরেও

১ সেপ্টেম্বর ইভিপি-র কাজ শুরু হয়েছে। এখনও পর্যন্ত স্থির আছে, ১৫ অক্টোবর তা শেষ হবে। এই ইভিপি-র সঙ্গে কোথাও কোথাও নাগরিক পঞ্জি বা ‘ডি ভোটার’ (‘ডাউটফুল ভোটার’) সমস্যার কথাও উঠে আসছে।

ন্যাশনাল ভোটারস সার্ভিস পোর্টাল

ন্যাশনাল ভোটারস সার্ভিস পোর্টাল

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৩:৫৮
Share: Save:

নিজের এবং পরিবারের অন্যদের নাম ভোটার তালিকায় আছে কি না, অনলাইনে ভোটারেরাই যাতে সেই তথ্য যাচাই করে নিতে পারেন, তার ব্যবস্থা করেছে নির্বাচন কমিশন। তার জন্য সমষ্টিগত প্রচার তো চলছেই। সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মী-অফিসারদের ব্যক্তিগত স্তরেও এই বিষয়ে প্রচার চালাতে বলা হচ্ছে। পুজো মণ্ডপ, কর্মী-অফিসারদের ব্যক্তিপরিচিতির বৃত্ত— সবই কাজে লাগিয়ে ‘ইলেক্টরস ভেরিফিকেশন প্রোগ্রাম’ (ইভিপি) বা নির্বাচক তথ্য যাচাই কর্মসূচি বাস্তবায়িত করতে চাইছে কমিশন।

১ সেপ্টেম্বর ইভিপি-র কাজ শুরু হয়েছে। এখনও পর্যন্ত স্থির আছে, ১৫ অক্টোবর তা শেষ হবে। এই ইভিপি-র সঙ্গে কোথাও কোথাও নাগরিক পঞ্জি বা ‘ডি ভোটার’ (‘ডাউটফুল ভোটার’) সমস্যার কথাও উঠে আসছে। তবে কমিশন স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছে, এনআরসি কিংবা ডি ভোটারের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই। শুধু ভোটার তালিকা যথাসম্ভব নির্ভুল করে তার ‘স্বাস্থ্যোন্নতি’ই কমিশনের লক্ষ্য।

এই প্রথম দেশ জুড়ে একসঙ্গে সব ভোটারের তথ্য যাচাই শুরু হয়েছে এবং সেটা করার কথা প্রায় ৯১ কোটি ভোটারের। প্রশ্ন উঠছে, ভোটারেরা কী ভাবে অনলাইনে সেই কাজ করবেন?

সেটাই সরাসরি আমজনতাকে বোঝাতে চাইছে কমিশন। সে-ক্ষেত্রে সমষ্টিগত ও ব্যক্তিগত— দু’টি ক্ষেত্রকে কাজে লাগাচ্ছে তারা। ন্যাশনাল ভোটারস সার্ভিস পোর্টাল (https://www.nvsp.in) এবং ভোটার হেল্পলাইন অ্যাপের মাধ্যমে ভোটারেরা অনলাইনে ভোটার তালিকা যাচাই করতে পারবেন। এই প্রক্রিয়া নিয়েই ব্যক্তিগত স্তরে প্রচার চালানোর জন্য কর্মী-অফিসারদের অনুরোধ করেছে কমিশন। বঙ্গে সেই আবেদনে সাড়াও মিলছে। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন কর্মী-অফিসার ব্যক্তিগত ভাবে বিষয়টি বোঝাচ্ছেন পরিচিতদের। সংশ্লিষ্ট কর্মী-অফিসার যে-সব হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে রয়েছেন, সেখানেও ছবি-সহ ইভিপি পদ্ধতির বিভিন্ন ধাপ তুলে ধরছেন তাঁরা।

এ ক্ষেত্রে জেলা নির্বাচন অফিসার তথা জেলাশাসকদের বাংলার সর্ববৃহৎ উৎসব দুর্গাপুজোকেও কাজে লাগাতে বলেছেন রাজ্য মুখ্য নির্বাচনী অফিসার (সিইও)। সেই নির্দেশ মেনে জেলায় পুজো কমিটির সঙ্গে সমন্বয়-বৈঠকে ইভিপি সংক্রান্ত বিষয়টি তুলে ধরতে শুরু করেছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। কী ভাবে ভোটার তালিকা যাচাই করতে হবে, তার পদ্ধতি ছবি-সহ প্রচারপত্রের মাধ্যমেও সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে বিভিন্ন জেলা প্রশাসন। পুজো মণ্ডপের সামনে এই নিয়ে ব্যানার-ফ্লেক্স দেওয়া হচ্ছে। ইভিপি-র প্রচারের ক্ষেত্রে টিভি এবং এফএম চ্যানেলগুলিকেও কাজে লাগাচ্ছে সিইও-র দফতর।

এ ক্ষেত্রে পথ দেখিয়েছে মালদহ জেলা প্রশাসন। ইভিপি-র বিভিন্ন ধাপ প্রচারপত্রের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে ইতিমধ্যেই পৌঁছে দিয়েছে তারা। নদিয়াও একই পথে হেঁটে ইভিপি সংক্রান্ত প্রচার চালাচ্ছে। হকারদের মাধ্যমে সংবাদপত্রের মধ্যে প্রচারপত্র বিলির কাজ শুরু করছে জেলা প্রশাসন। বুধবার রাত পর্যন্ত তিন লক্ষ ভোটার ইভিপি-র মাধ্যমে নিজেদের তথ্য যাচাই করেছেন। এ বিষয়ে সব থেকে ভাল জায়গায় রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। আর সব থেকে ‘বেহাল’ দশা দক্ষিণ এবং উত্তর কলকাতার!

কালিম্পং, দার্জিলিং, জঙ্গলমহল, সুন্দরবনের মতো এলাকার কিছু অংশে নেটওয়ার্কের সমস্যা থাকায় সেখানে ‘অফলাইনে’ কাজ হবে। কমিশনের তথ্যভাণ্ডার থেকে ভোটারদের তথ্য নিয়ে বাড়ি বাড়ি যাবেন বিএলও-রা। সেখানে গিয়ে ভোটারের তথ্য যাচাই করবেন তাঁরা। সেই তথ্যে ভুল থাকলে প্রয়োজনীয় ফর্ম নিয়ে পুনরায় সংশ্লিষ্ট ভোটারের বাড়িতে যাবেন বিএলও। যে-সব ভোটার অনলাইনে তথ্য যাচাই করবেন না, বিএলও-রা তাঁদেরও বাড়িতে যাবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE