ফের তলব এল ইডি’র দফতর থেকে। এবং এ বারও তাদের সামনে হাজির হলেন না তৃণমূল সাংসদ তথা নাট্যকর্মী অর্পিতা ঘোষ। উল্টে প্রতিনিধি মারফত ইডি-কে চিঠি পাঠিয়ে তিনি সময় চেয়ে নিলেন। সাংসদ এ-ও জানিয়েছেন, তদন্তকারীরা দরকার পড়লে তাঁর সঙ্গে ই-মেলে যোগাযোগ করতে পারেন।
সারদা-কেলেঙ্কারির ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কেন্দ্রীয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) গত বছরের শেষাশেষি অর্পিতাকে ডেকে পাঠিয়েছিল। সে বারও তিনি যাননি। তখন কারণ দেখিয়েছিলেন, রাজ্যের বাইরে রয়েছেন। শুক্রবার ফের অর্পিতাকে তলব করা হয়। এ বার গেলেন না কেন?
এ দিন সন্ধ্যায় অর্পিতা টেলিফোনে জানান, তিনি এখন তাঁর নির্বাচনী কেন্দ্র বালুরঘাটে রয়েছেন। সেখানকার গঙ্গারামপুরে পুরভোটের প্রচারে তিনি ব্যস্ত। এর পরে কলকাতার পুরভোটেও দলের হয়ে প্রচারের দায়িত্ব রয়েছে তাঁর উপরে। পুরভোটের পরে আবার সংসদের অধিবেশন শুরু হয়ে যাবে। ‘‘সুতরাং যা পরিস্থিতি, এখনই ইডি-র অফিসে গিয়ে তদন্তে সহযোগিতা করার মতো সময় আমার নেই।’’— বলেন অর্পিতা। তবে তিনি জানিয়েছেন, প্রয়োজনে ইডি-র তদন্তকারীরা তাঁকে ই-মেল করতে পারেন। কোনও প্রশ্ন করার থাকলে তিনি অবশ্যই ই-মেলে জবাব দেবেন।
সারদা কেলেঙ্কারির তদন্তে নিয়োজিত দুই কেন্দ্রীয় সংস্থা— ইডি ও সিবিআই এর আগে অবশ্য অর্পিতাকে দু’বার ডেকে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। ইডি-সূত্রের খবর, আগে জিজ্ঞাসাবাদের সময় অর্পিতা যা জবাব দিয়েছিলেন, তাতে কিছু বিভ্রান্তি রয়েছে। সেই ধোঁয়াশা কাটাতেই তাঁকে ফের জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন।
আর সেই কারণেই এ দিন তাঁকে ফের তলব করা হয়েছিল বলে ইডি-সূত্রের খবর। অর্পিতার পরিবর্তে তাঁর এক প্রতিনিধি এ দিন ইডি-র দফতরে যান। গরহাজিরার ব্যাখ্যা দিয়ে তদন্তকারী অফিসারকে লেখা সাংসদের চিঠিটি তিনিই সেখানে পৌঁছে দিয়ে আসেন। প্রতিনিধিও বলেন, অর্পিতা এখন পুর নির্বাচনে দলীয় কাজে ব্যস্ত। সাংসদ কবে ইডি-র তদন্তকারীদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন, তিনিও সেটা বলতে পারেননি।
এ দিকে কলকাতা হাইকোর্ট থেকে অন্তর্বর্তী জামিনপ্রাপ্ত রোজ ভ্যালি-কর্ণধার গৌতম কুণ্ডুকে আগামী ২২ এপ্রিল নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলে নির্দেশ জারি হয়েছে। এ দিন নির্দেশটি দিয়েছে কলকাতার নগর দায়রা আদালত।
অবৈধ ভাবে টাকা পাচারের অভিযোগে ইডি গত ২৫ মার্চ গৌতমকে গ্রেফতার করে। ৬ এপ্রিল তাঁর বাবা মারা যান। বাবার পারলৌকিক কাজে যোগ দেওয়ার জন্য হাইকোর্টে অন্তর্বর্তী জামিনের আবেদন করেছিলেন গৌতম। ৮ এপ্রিল হাইকোর্টের বিচারপতি শিবসাধন সাধু শর্তসাপেক্ষে ১৪ দিনের অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করেন। ইডি-র কৌঁসুলি অভিজিৎ ভদ্র জানান, হাইকোর্টের শর্ত
ছিল, অভিযুক্তকে তদন্তকারীদের কাছে পাসপোর্ট জমা রাখতে হবে, মোবাইল নম্বর ও বাড়ির টেলিফোন নম্বরও জানিয়ে রাখতে হবে।
গৌতম হাইকোর্টের শর্ত মেনেছেন বলেই তদন্তকারী অফিসারের দাবি। কিন্তু ঘটনা হল, এ দিনই কলকাতার নগর দায়রা আদালতে রোজ ভ্যালি কর্তার হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল। কেন তিনি এলেন না, বিচারক গোপালচন্দ্র কর্মকার তা জানতে চাইলে গৌতমের কৌঁসুলি বলেন, হাইকোর্ট অন্তর্বর্তী জামিন দেওয়ার পরেও যে নগর দায়রা আদালতে হাজির হতে হবে, তা জানা ছিল না। গরহাজিরার লিখিত ব্যাখ্যা পেয়ে বিচারক জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তী জামিনের মেয়াদ যে দিন শেষ হচ্ছে, সেই ২২ এপ্রিলই গৌতমকে ওই আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy