ফাইল চিত্র।
সরকার যে-হেতু টাকা দেয়, তাই উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তারা হস্তক্ষেপ করতেই পারে বলে এত দিন সওয়াল করে এসেছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। অবস্থান বদলে তিনিই এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকারের পক্ষে দাঁড়াচ্ছেন কি না, তা নিয়ে জোরদার জল্পনা শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার এক সাংবাদিক বৈঠকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে প্রশ্ন করা হলে পার্থবাবু বলেন, ‘‘যাদবপুর স্বশাসিত অঞ্চল, স্বশাসিতই থাকুক। আমার মন্তব্য করার কোনও দরকার নেই। রাজ্যে আরও ৩২টি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে।’’ যাদবপুরের প্রবেশিকা পরীক্ষা নিয়ে তাঁর যে-মন্তব্যকে ঘিরে জলঘোলা হয়েছিল, সেই প্রসঙ্গেও তিনি ক্ষান্ত হতে বললেন সংবাদমাধ্যমকে!
নভেম্বরে যাদবপুরে এক অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ২০১৮ থেকে কলা বিভাগের প্রতিটি বিষয়ে নম্বরের ভিত্তিতেই ভর্তি নিতে হবে। কিছু বিষয়ে নম্বরের ভিত্তিতে ভর্তি আর কিছু ক্ষেত্রে প্রবেশিকা— এটা চলতে পারে না। তার ভিত্তিতেই যাদবপুর-কর্তৃপক্ষ প্রবেশিকা পরীক্ষা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলে ছাত্রছাত্রীদের দাবি। যদিও কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, এটা সম্পূর্ণ কাকতালীয়। প্রবেশিকা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের জেরে চরম অচলাবস্থা শুরু হয়েছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। পড়ুয়াদের একাংশের ঘেরাও আন্দোলন এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশের ক্ষোভ-বিক্ষোভে পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠে। উপাচার্য সুরঞ্জন দাসের পদত্যাগ করতে পারেন বলেও জল্পনা শুরু হয়ে যায়। প্রবেশিকা ফিরিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়েছে। এ দিন শিক্ষামন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয়, তিনি প্রবেশিকা পরীক্ষা নিয়ে ওই ধরনের মন্তব্য করেছিলেন কেন? উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা যা মনে করেছি, তা মনে করেছি। এ বার তোমরা (সংবাদমাধ্যম) ক্ষান্ত দাও!’’
এই শিক্ষামন্ত্রীই অতীতে দাবি করেছিলেন, টাকা দেন বলেই তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজকর্মে নাক গলাবেন। যাদবপুরের প্রবেশিকা পরীক্ষা নিয়ে তাঁর মন্তব্যের জেরেই জলঘোলা হয়েছে বলে এখনও মনে করেন পড়ুয়ারা। সেই মন্ত্রীই এ দিন যাদবপুরের স্বশাসনে আস্থা রেখেছেন শুনে শুরু হয়েছে নতুন জল্পনা।
শিক্ষামন্ত্রী এ দিন যাদবপুরকে ‘স্বশাসিত অঞ্চল’ বলায় তার সমালোচনা করেছেন শিক্ষক সংগঠন জুটা-র সহ-সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায়। ‘‘যাদবপুর কোনও অঞ্চল নয়, এটা একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তবে স্বাধিকার দেওয়ার জন্য সরকারের যদি শুভবুদ্ধির উদয় হয়, তা হলে তো ভালই,’’ বলেছেন ওই শিক্ষক-নেতা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy