Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
হুগলি

বিজেপির ঠেলা, পার্থ হাজির মুমূর্ষু মাদ্রাসায়

বিরোধী থাকাকালীন নিজেরাই আন্দোলন করেছিলেন। কিন্তু শাসক হওয়ার পর গত চার বছরে মনেই পড়েনি। বুধবার যে-ই বিজেপি নেতৃত্ব হুগলি মাদ্রাসায় গেলেন, অমনি রাজ্য সরকারের টনক নড়ল! প্রায় বন্ধ হতে বসা চুঁচুড়ার একমাত্র সরকারি মাদ্রাসা হুগলি মাদ্রাসার হাল হকিকত দেখতে বিজেপি বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য এবং অভিনেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায় যাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সেখানে পৌঁছে গেলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদাতা
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৫ ০৪:৪০
Share: Save:

বিরোধী থাকাকালীন নিজেরাই আন্দোলন করেছিলেন। কিন্তু শাসক হওয়ার পর গত চার বছরে মনেই পড়েনি। বুধবার যে-ই বিজেপি নেতৃত্ব হুগলি মাদ্রাসায় গেলেন, অমনি রাজ্য সরকারের টনক নড়ল! প্রায় বন্ধ হতে বসা চুঁচুড়ার একমাত্র সরকারি মাদ্রাসা হুগলি মাদ্রাসার হাল হকিকত দেখতে বিজেপি বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য এবং অভিনেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায় যাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সেখানে পৌঁছে গেলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এবং আশ্বাসও দিলেন, ওই মাদ্রাসা বাঁচিয়ে রাখার জন্য সব রকম চেষ্টা করা হবে।

রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের ব্যাখ্যা, বিধানসভা ভোটের এক বছরও বাকি নেই। সংখ্যালঘুদের বিভিন্ন অংশ থেকে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুতি পালন না করার অভিযোগ উঠছে প্রায়ই। এই পরিস্থিতিতে বিজেপি যখন সংখ্যালঘুদের পাশে দাঁড়াচ্ছে, তখন ওই অংশের ভোট ধরে রাখতেই তৃণমূলের এই বাড়তি তৎপরতা, এমনই মনে করছেন অনেকে।

হাজি মহম্মদ মহসিনের প্রতিষ্ঠিত এই মাদ্রাসায় ২০০৭ সালের পর থেকে শিক্ষকের অভাবে সমস্যা দেখা দেয়। ৩২ বছর ওই মাদ্রাসায় কোনও প্রধান শিক্ষক নেই। এখন সেখানে এক জন মাত্র শিক্ষক রয়েছেন। কোনও ছাত্র নেই। প্রায় বন্ধের মুখে পৌঁছে গিয়েছে ওই সরকারি মাদ্রাসা। ফলে সমস্যায় পড়েছে স্থানীয় সংখ্যালঘু ছাত্ররা। বাম জমানায় ওই মাদ্রাসাকে বাঁচাতে আন্দোলনে নেমেছিল তৃণমূল। কিন্তু তারা সরকারে আসার পরেও মাদ্রাসাটির অচলাবস্থা কাটেনি। এখন সেটি বাঁচাতে আন্দোলনে নেমেছে মুসলিম সংরক্ষণ মোর্চা। বুধবার সেখানে গিয়ে শমীকবাবু আশ্বাস দেন, মাদ্রাসার পুনরুজ্জীবনের জন্য আন্দোলন করা হবে। প্রয়োজনে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রীর দ্বারস্থও হবেন তাঁরা।

পার্থবাবু বৃহস্পতিবার ওই মাদ্রাসা পরিদর্শনে আসেন এবং জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে ছিলেন জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও, অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি সংস্কার) আয়েষা রানি, মহকুমাশাসক (সদর) সুদীপ সরকার, সপ্তগ্রামের বিধায়ক তপন দাশগুপ্ত, হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার পুরপ্রধান গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায়। ওই মাদ্রাসায় নতুন ছাত্র ভর্তি এবং শিক্ষক নিয়োগের পরামর্শ দেন পার্থবাবু।

মাদ্রাসার বর্তমান অচলাবস্থার জন্য পূর্বতন বাম সরকারকেই দায়ী করেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘পূর্বতন বাম সরকার ইংরেজি তুলে দেওয়ার ফলে মাদ্রাসায় ছাত্রসংখ্যা কমতে শুরু করে। ছাত্র না-থাকলে শিক্ষকদের প্রয়োজন কমে যায়।’’ তাঁর আশ্বাস, ‘‘সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষকে শিক্ষায় অনুপ্রাণিত করতে মাদ্রাসাকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। প্রত্যেক জেলায় একটি করে ইংরেজি মাধ্যম মাদ্রাসা চালু করার ইচ্ছা ছিল মুখ্যমন্ত্রীর। ইংরেজির পাশাপাশি বাংলাও থাকবে। এই মাদ্রাসাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য সব রকম চেষ্টা করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE