অভিযুক্ত: আদালতের পথে বিনোদ। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
যুবককে মারধরের অভিযোগে জেলাশাসক নিখিল নির্মল ও তাঁর স্ত্রী নন্দিনী কৃষ্ণনের বিরুদ্ধে এ বার আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠল খোদ শাসকদলের অন্দরে৷ সেই সঙ্গে থানার ভিতরে ঘটনাটি ঘটায় আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার সুনীল যাদব ও ফালাকাটার আইসি সৌম্যজিৎ রায়ের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন জেলার বিজেপি নেতারা৷ গোটা ঘটনাটি নিন্দায় সরব বিভিন্ন মহল৷
মাত্র কয়েক মাস আগেই আলিপুরদুয়ারে জেলাশাসকের দায়িত্বে যোগ দেন নিখিল নির্মল৷ সূত্রের খবর, তৃণমূলের জেলা শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশের যথেষ্ট আস্থাভাজন ছিলেন তিনি৷ পাশাপাশি তাঁর কিছু কিছু সিদ্ধান্ত কিংবা সম্প্রতি তাঁর স্ত্রীর একটি ফেসবুক পোস্ট দলের অন্য একটি অংশকে চটিয়ে দেয়৷
তবে ফালাকাটা থানায় ঢুকে জেলাশাসক ও তাঁর স্ত্রীর ভিডিয়ো রবিবার প্রকাশ্যে আসার পর রাজ্য জুড়ে হইচই শুরু হলেও নীরব ছিলেন জেলা তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা৷ এ দিনও তাঁরা বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলতে চাননি৷ দলের জেলা সভাপতি মোহন শর্মা শুধু বলেন, “বিষয়টি খোদ মুখ্যমন্ত্রী দেখছেন৷”
কিন্তু আলিপুরদুয়ারে তাঁর দলের নেতাদের একাংশ জেলাশাসক ও তাঁর স্ত্রীর শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছেন৷ তৃণমূল নেতা তথা আলিপুরদুয়ার পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান আশিস দত্ত বলেন, “কোনও অভিযুক্ত পুলিশের হেফাজতে থাকলেও তাঁকে কেউ মারধর করতে পারে না৷ এটা একেবারেই আইন বিরুদ্ধ কাজ৷ তাই আইন অনুযায়ী জেলাশাসক ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’’
ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার পরে রবিবার থেকেই জেলাশাসক ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন বিরোধীরা৷ এ দিন তাঁরা সুর আরও চড়িয়েছেন৷ সোমবারই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন শিলিগুড়ির বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্য৷ সেই চিঠিতে জেলাশাসক ও তাঁর স্ত্রীকে অবিলম্বে গ্রেফতার করার দাবি তুলেছেন তিনি৷
এক ধাপ এগিয়ে আলিপুরদুয়ারের বিজেপি জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা বলেন, “ফালাকাটা থানায় যা ঘটেছে, তার দায় পুলিশ সুপার কিংবা সেখানকার আইসি এড়াতে পারেন না৷ তাই তাদেরও শাস্তি হওয়া উচিত৷”
ভিডিয়ো ভাইরাল হতে তা নিয়ে সরব আলিপুরদুয়ারের বিভিন্ন মহল৷ একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের অন্যতম সম্পাদক রাতুল বিশ্বাস বলেন, “থানায় ঢুকে জেলাশাসক ও তাঁর স্ত্রী এক অভিযুক্তকে মারধর করছেন, এটা মানা যায় না৷” অন্য একটি সংগঠনের সম্পাদক ল্যারি বসু বলেন, “জেলাশাসক ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া উচিত৷” তাঁরা এই দাবিতে এসপিকে একটি স্মারকলিপিও দিয়েছেন৷
এই সব অভিযোগ নিয়ে জেলাশাসক, তাঁর স্ত্রী, পুলিশ সুপার ও ফালাকাটার আইসির সঙ্গে এদিন যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়৷ কিন্তু জেলাশাসকের ফোন বন্ধ ছিল৷ বাকিরা কেউ ফোন ধরেননি৷ এসএমএসেরও উত্তর দেননি৷
এ দিন সকালে অবশ্য নিখিলের স্ত্রী ফেসবুকে নিজের স্বামীর হয়ে ফেসবুক পোস্ট করেন এবং জানান, নিখিল ঠিক করেছেন। তাঁদের সমর্থনে একটি ফেসবুক পেজ-ও তৈরি হয়। কিন্তু বেলা বাড়তেই সমালোচনার হাওয়া তীব্র হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy