Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

মৃত্যুফাঁদ মিথাইল অ্যালকোহলেই 

কমেছে ভাটিখানার সংখ্যা। তাই ‘র’ স্পিরিট বা ইথাইল অ্যালকোহলে জল মিশিয়ে তৈরি হচ্ছে চোলাইয়ের বিকল্প। শান্তিপুর বিষমদ কাণ্ডে অভিযোগের আঙুল উঠেছে এই ‘বিকল্প’ মদের দিকেই। 

জালে: শান্তিপুর বিষমদ কাণ্ডে ধৃত জয়দেব সাঁতরা এবং গুচিয়া মাহাতোকে আদালতে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার।ছবি:প্রণব দেবনাথ

জালে: শান্তিপুর বিষমদ কাণ্ডে ধৃত জয়দেব সাঁতরা এবং গুচিয়া মাহাতোকে আদালতে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার।ছবি:প্রণব দেবনাথ

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:০৪
Share: Save:

কমেছে ভাটিখানার সংখ্যা। তাই ‘র’ স্পিরিট বা ইথাইল অ্যালকোহলে জল মিশিয়ে তৈরি হচ্ছে চোলাইয়ের বিকল্প। শান্তিপুর বিষমদ কাণ্ডে অভিযোগের আঙুল উঠেছে এই ‘বিকল্প’ মদের দিকেই।

কিন্তু গোটা রাজ্যে, এমনকি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ‘বিকল্প’ মদের ব্যবসা চললেও আচমকা এই মৃত্যুর কারণ কী? আবগারি দফতর সূত্রের খবর, ইথাইল অ্যালকোহলে জল মিশিয়ে তৈরি মদে নেশা তেমন জমে না। সিদ্ধির নেশা জমাতে অনেকে তামার পয়সা ঘষে নেন, তেমনই নেশা জমাতে মিথাইল অ্যালকোহল মেশানো হচ্ছে ‘বিকল্প’ মদে। রং, কাঠের পালিশ তৈরির কাজে ব্যবহৃত এই মিথাইল অ্যালকোহল দেহে বিষের কাজ করে। পরিমাণ একটু বেশি হলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। দফতরের কর্তাদের একাংশের অনুমান, শান্তিপুরে সেটাই হয়েছে।

কেন কমেছে ভাটিখানার সংখ্যা? আবগারি সূত্রের খবর, চোলাই মূলত গুড় থেকেই তৈরি হয়। কিন্তু গুড়ের দাম বাড়ায় তা থেকে চোলাই বানানো লাভজনক হচ্ছে না। গুড়ের বিকল্প হিসেবে চালের গুঁড়ো ব্যবহার করা যায়। তবে চোলাই তৈরির সেই পদ্ধতি তুলনায় জটিল। আবগারি অফিসারেরা প্রচুর ভাটি ভেঙেছেন। প্রোমোটারদের থাবাতেও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে অনেক ভাটি। এই সব কারণেই ‘র’ স্পিরিটের দিকে ঝুঁকেছেন বেশির ভাগ চোলাই ব্যবসায়ী। এটি রেডিমেড জিনিস। বানানোর হ্যাপা নেই।

আরও পড়ুন: হনুমানও ‘দলিত’! ত্রেতা যুগের বার্থ সার্টিফিকেট কলিতে দিলেন যোগী

আবগারি সূত্রের খবর, আইন মেনে কিছু ব্যবসায়ী এই ‘র’ স্পিরিট তৈরি করেন, যা ১০০ শতাংশ খাঁটি ইথাইল অ্যালকোহল। তা বিশাল কন্টেনারে করে পাঠানো হয় সরকারি লাইসেন্সপ্রাপ্ত অন্য ব্যবসায়ীদের কাছে। অভিযোগ, চোরা কারবারিরা মূলত কন্টেনারের চালকদের সঙ্গে যোগসাজশ করে মাঝপথে কিছু ‘র’ স্পিরিট সরিয়ে বিক্রি করেন। এক আবগারি কর্তা বলেন, ‘‘র স্পিরিট পাঠানোর সময়ে ধরেই নেওয়া হয় রাস্তায় কিছুটা নষ্ট (ট্রানজিট লস) হবে। তবে, যতটা ধরা হয় ততটা নষ্ট হয় না। এই সুযোগে অতিরিক্ত স্পিরিট বার করে নেন চোরা কারবারিরা।’’

আরও পড়ুন: ‘মদ ঠিকই আছে, এই তো খাচ্ছি’

আবগারি দফতর সূত্রে খবর, রাজ্য এই ট্রানজিট লসের পরিমাণ কমিয়েছে। তাতে স্পিরিট চুরি কিছুটা কমেছে। কিন্তু, প্রতিবেশী রাজ্যে প্রচুর চুরি হওয়া স্পিরিট এ রাজ্যে আসে। আবগারি কর্তার কথায়, ‘‘র স্পিরিটের সরবরাহ বন্ধ করতে পারলে বেআইনি মদ বানানো কমবে। বাধ্য হয়ে মানুষ একটু বেশি দাম দিয়ে দেশি মদ খাবেন।’’ সরকার সেটাই চাইছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Adulterated Hooch Methyl Alcohol Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE