Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ব্যয় বাড়িয়ে জেলায় চলল অরণ্য অফিস

বনকর্মীদের একাংশের বক্তব্য, তদারকির কাজ তো যথারীতি হচ্ছিলই। বরং এত দিন মুখ্য বনপাল সদরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। ওই পদাধিকারীর জেলায় চলে গেলে সেটা ছিন্ন হয়ে যাবে না তো?

নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব চিত্র

কুন্তক চট্টোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০১৮ ০৩:১০
Share: Save:

নবান্ন বলছে এক। বন দফতরের নির্দেশিকা বলছে অন্য কথা!

কোষাগারের ভাঁড়ে মা ভবানী অবস্থায় খরচ কমানোর জন্য রাজ্যের সব দফতরকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নতুন অফিস, বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রেও রাশ টানার কথা বলছে অর্থ দফতর। কিন্তু প্রচুর টাকা খরচ করে কলকাতা থেকে নিজেদের বিভিন্ন সার্কেল অফিস জেলায় সরাতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে বন দফতর। ৮ অগস্ট বনসচিব ইন্দিবর পাণ্ডের একটি নির্দেশিকায় জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, দক্ষিণবঙ্গে বন দফতরের চারটি সার্কেলকে জেলায় নিজেদের অফিস খুঁজে নিতে হবে। নিজেদের বাংলোও তৈরি বা ভাড়া করতে হবে সংশ্লিষ্ট মুখ্য বনপালদের।

দীর্ঘদিন ধরেই কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে বন দফতরের বিভিন্ন সার্কেলের অফিস ছিল। সেগুলিকে সরিয়ে সম্প্রতি অরণ্য ভবনে এক ছাদের তলায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেই কাজে বেশ বড় অঙ্কের টাকা খরচ হয়েছিল। সেখান থেকে আবার জেলায় অফিস সরাতে হলে নতুন করে খরচ বাড়বে। তা হলে ব্যয়সঙ্কোচের নীতি নিয়ে লাভ কী হল, সেই প্রশ্ন উঠছে প্রশাসনেরই অন্দরমহলে।

আরও পড়ুন: মাওবাদী ও বিজেপি হাত মিলিয়েছে, দাবি পার্থর

রাজ্যের এক বনকর্তা বলছেন, মুখ্য বনপাল দফতরের উচ্চপদস্থ কর্তা। তিনি জেলায় বদলি হলে তাঁর বাংলো প্রয়োজন। তাঁর অফিসের কর্মীদেরও বাসস্থান জোগাড় করতে হবে। ফলে খরচ এক ধাক্কায় অনেকটাই বেড়ে যাবে। কিন্তু জেলায় অফিস নিয়ে গেলে লাভ কতটা হবে, সেই প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। বাড়তি খরচের সঙ্গে সঙ্গে প্রশ্নের মুখে পড়ছে জেলার বন অফিসারদের দক্ষতাও। অনেকের প্রশ্ন, তা হলে কি জেলার ডিস্ট্রিক্ট ফরেস্ট অফিসারদের উপরে আর ভরসা করছেন না শীর্ষ কর্তারা?

বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ অবশ্য জানাচ্ছেন, মুখ্য বনপালেরা জেলায় গেলে কাজের আরও ভাল তদারকি হবে। তাতে দফতরের কাজে গতি আসবে। ‘‘কলকাতায় বসে সব কাজ করা তো সম্ভব নয়,’’ বলছেন বিনয়বাবু। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, জেলায় জেলায় বন্যপ্রাণী ও মানুষের সংঘাত রুখতে এই বদলি জরুরি।

বনকর্মীদের একাংশের বক্তব্য, তদারকির কাজ তো যথারীতি হচ্ছিলই। বরং এত দিন মুখ্য বনপাল সদরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। ওই পদাধিকারীর জেলায় চলে গেলে সেটা ছিন্ন হয়ে যাবে না তো?

প্রশ্ন উঠছে অরণ্য ভবনের অন্দরের নতুন সাজসজ্জা নিয়ে। প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি, ব্যয়সঙ্কোচের জন্য দফতরে অতিরিক্ত সাজসজ্জার উপরে রাশ টানা হয়েছে। ওই নতুন সাজসজ্জার জেরে আরও কিছু বিভাগের ঠাঁই বদলও হতে পারে। কেউ কেউ বলছেন, কোনও কোনও শীর্ষ কর্তার ‘বাস্তু’ নিয়ে খুঁতখুঁতুনি রয়েছে। সেই জন্যই এত কাণ্ড! কিন্তু ব্যয়সঙ্কোচের রাজ্যে ঘটা করে এমন সজ্জাবদল কেন, বনমন্ত্রী অবশ্য তার সদুত্তর দেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE