ছুটির ভুয়ো নির্দেশিকার পরে এ বার সরকারি নিয়োগপত্র জাল। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ভুয়ো নিয়োগপত্রের ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে কোমর বেঁধে নামছে রাজ্য প্রশাসন।
সম্প্রতি এক তরুণী পরীক্ষার্থীর অ্যাডমিট কার্ড ও নিয়োগপত্র ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন গ্রুপে। তাতে দেখা যাচ্ছে, ২৩ বছর বয়সি জেনারেল ক্যাটিগরির ওই পরীক্ষার্থী রাজ্য সরকারের গ্রুপ-ডি বা চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর পদে পরীক্ষা দিয়েছিলেন গত বছরের ১৪ জুন। প্রশাসনের আধিকারিকদের একাংশ প্রাথমিক যাচাই করে অ্যাডমিট কার্ডে তেমন কোনও ভ্রান্তি খুঁজে বার করতে পারেননি। কিন্তু তাঁরা সন্দেহ প্রকাশ করছেন নিয়োগপত্রটিকে ঘিরে।
প্রশাসনিক ব্যাখ্যা, ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল গ্রুপ-ডি রিক্রুটমেন্ট বোর্ড’-এর লেটারহেডে ছাপানো সেই নিয়োগপত্রটি দৃশ্যতই ত্রুটিপূর্ণ। প্রথমত, লেটারহেডে অশোকস্তম্ভের প্রতিবিম্ব ছাপানো রয়েছে উপরে একেবারে বাঁ দিকে, যা থাকার কথা মাঝামাঝি। দ্বিতীয়ত, ওই তরুণী পরীক্ষার্থীকে ‘মিস্টার’ বলে সম্বোধন করা হয়েছে। তৃতীয়ত, যে-ভাবে নিয়োগপত্র লেখা হয়েছে, সরকারি বয়ান তেমন হয় না। বাংলা অনুবাদ করলে সেই বয়ানের অর্থ, ‘পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পূর্ত দফতরে আপনাকে স্বাগত। পূর্ত দফতরে আমাদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ দিতে পারায় আমরা আনন্দিত।’ পরবর্তী ধাপে কাজের এলাকা, বেতন এবং সুযোগ-সুবিধা, ছুটি ইত্যাদি পৃথক ভাবে জানানো হয়েছে ওই পরীক্ষার্থীকে। কিছু দিন আগে ইদের সময় একই ভাবে ছুটির ঘোষণা করে ভুয়ো সরকারি সরকারি নির্দেশিকা সোশ্যাল মিটিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছিল। এখনও সেই ঘটনার তদন্ত করছে লালবাজার।
তরুণীর নিয়োগপত্রের বিষয়টি রাজ্য প্রশাসনের নজরে এসেছে। প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘দেখেই বোঝা যাচ্ছে, নিয়োগপত্রটি ভুয়ো। প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে এগুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই প্রবণতা বিপজ্জনক।’’ গ্রুপ-ডি নিয়োগ পর্ষদের চেয়ারম্যান অতনু রাহা জানান, শুধু নিয়োগপত্রই নয়, অ্যাডমিট কার্ড, এমনকি বোর্ডের ওয়েবসাইটেরও নকল করা হয়েছে। বিভ্রান্ত করার উদ্দেশ্যে এবং টাকা নিয়ে এমনটা করা হচ্ছে। ভুয়ো ইন্টারভিউ কল লেটারও পাঠানো হচ্ছে। ‘‘আমরা সাইবার ক্রাইম বিভাগে অভিযোগ দায়ের করেছি। দু’জন গ্রেফতার হয়েছে। তদন্ত চলছে,’’ বলেন অতনুবাবু।
প্রায় ছ’হাজার পদের জন্য গত বছর পরীক্ষা নিয়েছিল গ্রুপ-ডি নিয়োগ পর্ষদ। কিন্তু পরীক্ষার পরে এক পরীক্ষার্থী স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনাল (স্যাট) বা রাজ্য প্রশাসনিক ট্রাইবুনালে মামলা করেন। আইনি জটে পুরো প্রক্রিয়া আটকে রয়েছে। ইতিমধ্যেই ২০ হাজার পরীক্ষার্থীর ইন্টারভিউ হয়েছে। মামলা মিটে গেলে সফল প্রার্থীদের তালিকা পর্ষদের সাইটে প্রকাশ করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy