গৌতমের শোকার্ত পরিবার। বুধবার। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়
জেল হেফাজতে অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে অভিযোগ জানাতে এবং ঘটনার পরে দেহ পাওয়ার জন্য কতটা ঝামেলা পোহাতে হয় বুধবার তা টের পেলেন গৌতম মণ্ডলের পরিবার ও বন্ধুরা। দেগঙ্গার প্রতিবন্ধী যুবক গৌতমের মৃত্যু হয়েছে দমদম সেন্ট্রাল জেলে। বুধবার দিনভর ছোটাছুটি ও অপেক্ষার পরেও তাঁর দেহ হাতে পায়নি পরিবার। শুনতে হয়েছে, ‘‘কাল আসুন।’’
সাধাসিধে, এলাকায় সকলের প্রিয় যুবকের মৃত্যুর খবর আসতেই বুধবার সকাল থেকে ভিড় জমে যায় তাঁদের চাতরা-বটতলার বাড়িতে। গৌতমের দেহ আনতে পরিবারের লোকজন ও বন্ধুদের কয়েক জন সকালেই পৌঁছে যান আরজি কর হাসপাতালে। পুলিশের কথামতো নিয়ে যান গৌতমের আধার কার্ড ও অন্য কাগজপত্র। সেখান থেকে জানানো হয়, স্থানীয় টালা থানা থেকে ছাড়পত্র আনলে তবেই ময়নাতদন্ত করে গৌতমের মৃতদেহ ছাড়া হবে। টালা থানায় গেলে, সেখান থেকে বলা হয়, দমদম সেন্ট্রাল জেল থেকে মৃত্যু সংক্রান্ত কাগজ আসেনি। কাগজ এলে তবেই হাসপাতালে জানানো হবে।
মোস্তাফা আলি নামে গৌতমের এক বন্ধু বললেন, ‘‘আমরা বিকেল ৪টে পর্যন্ত টালা থানায় বসে ছিলাম। কিন্তু কাগজ আর আসে না। সারাটা দিন ছুটোছুটি করেও কিছু হল না। পরে বলা হয়, আজ দেরি হয়ে গিয়েছে। আর ময়নাতদন্ত হবে না। দেহও ছাড়া যাবে না। কাল (বৃহস্পতিবার) আসবেন।’’
এই অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে অভিযোগ জানাতে গৌতমের আত্মীয় ও প্রতিবেশীদের আরেকটি দল যায় দেগঙ্গা থানায়। অভিযোগ, সেখান থেকে বলা হয়, রেলের বিষয় বলে এ বিষয়ে রেল পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে হবে। এর পর ওই দলটি বারাসত রেল পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে যায়। গৌতমের বন্ধু ফয়জুল রহমানের কথায়া, ‘‘রেল পুলিশ জানাল, দমদম জেল থেকে এখনও মৃত্যুর কাগজপত্র আসেনি। তাই তারা অভিযোগ নিতে পারবে না।’’ এর পর বিকেল নাগাদ উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সুপারের কাছে গিয়ে গোটা ঘটনার কথা জানান গৌতমের স্ত্রী সপ্তমী মণ্ডল। জেল হেফাজতে গৌতমের মৃত্যুর তদন্ত ও দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানান। পরে দেগঙ্গা থানায় তার প্রতিলিপি জমা দেন তাঁরা। গোটা ঘটনাটি নিয়ে এখন শুরু হয়েছে দায় ঠেলাঠেলি। অভিযোগ পাওয়ার পর উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, ‘‘এই ক্ষেত্রে আমাদের তো কিছু করার নেই। আমরা এই অভিযোগ রেল পুলিশের কাছে পাঠিয়ে দেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy