Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

রেলে নিরাপত্তা কোথায়, প্রশ্ন তুলছেন মৃত মা-মেয়ের পরিজনেরা

পেশায় গাড়ি চালক দিলীপবাবুর ছোট মেয়ে মনীষা ২০১৬ সালে উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হওয়ার পর থেকে ডাক্তারি পড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সম্প্রতি তিনি রাজস্থানের কোটায় গিয়ে প্রশিক্ষণ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

প্রতিবাদ: মা-মেয়ের ছবি নিয়ে বিক্ষোভ দুর্গাপুরে। ছবি: বিশ্বনাথ মশান

প্রতিবাদ: মা-মেয়ের ছবি নিয়ে বিক্ষোভ দুর্গাপুরে। ছবি: বিশ্বনাথ মশান

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৯ ০৪:২৭
Share: Save:

ব্যাগ ছিনতাইয়ে বাধা দিতে গিয়ে ট্রেন থেকে পড়ে মা-মেয়ের মৃত্যুর ঘটনায় রেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলল দুর্গাপুরের পরিবার। শনিবার ভোরে উত্তরপ্রদেশের মথুরা ও বৃন্দাবন রোড স্টেশনের মাঝে উদ্ধার হয় মীনা ডোম (৪৫) ও তাঁর মেয়ে মনীষার (২১) দেহ। রবিবার দুর্গাপুরের রাঁচী কলোনির বাড়িতে দেহ আনার পরে শেষকৃত্য হয়।

মীনাদেবীর স্বামী দিলীপ ডোমের অভিযোগ, ‘‘রেলে যাত্রীদের নিরাপত্তা নেই। কামরায় কোনও নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন না। তাই এত বড় ঘটনা ঘটে গেল।’’ পরিবারের আরও অভিযোগ, রীতিমতো গাফিলতি করে একটি কফিনে দু’টি দেহ পাঠানো হয়েছে। রেলপুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ঘটনার তদন্তে দু’টি দল গঠন করা হয়েছে। আততায়ী শীঘ্রই ধরা পড়বে বলে তাদের দাবি।

পেশায় গাড়ি চালক দিলীপবাবুর ছোট মেয়ে মনীষা ২০১৬ সালে উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হওয়ার পর থেকে ডাক্তারি পড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সম্প্রতি তিনি রাজস্থানের কোটায় গিয়ে প্রশিক্ষণ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। মনীষাকে নিয়ে মীনাদেবী দিল্লিতে বড় মেয়ের কাছে গিয়েছিলেন। শুক্রবার রাতে দিল্লির হজরত নিজামউদ্দিন স্টেশন থেকে ত্রিবান্দ্রম সেন্ট্রাল সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসে কোটা রওনা হন তাঁরা। সঙ্গে ছিলেন বড় মেয়ের ভাসুরের ছেলে আকাশ মল্লিক।

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ট্রেনের দরজার কাছেই তিন জনের বার্থ ছিল। ভোরে বৃন্দাবন রোড স্টেশন ও মথুরার মাঝে ট্রেন থামতে ঘুম ভেঙে আকাশ দেখেন, মীনাদেবী ও মনীষা সেখানে নেই। সহযাত্রীরা তাঁকে জানান, দুষ্কৃতী ব্যাগ নিয়ে পালানোর চেষ্টা করলে দু’জনের সঙ্গে টানাহ্যাঁচড়া শুরু হয়। তখনই তাঁরা ট্রেন থেকে পড়ে গিয়েছেন। চেন টেনে ট্রেন থামিয়ে পালিয়েছে দুষ্কৃতী। রেলপুলিশের অনুমান, পড়ে যাওয়ার পরে পাশের লাইন ধরে আসা কোনও ট্রেন মীনাদেবী ও মনীষাকে ধাক্কা দেয়।

শনিবার সকালে খবর পৌঁছয় দুর্গাপুরের বাড়িতে। দিলীপবাবু জানান, মনীষাদের ব্যাগে যাবতীয় শংসাপত্র, তাঁর সই করা ফাঁকা চেক-সহ নানা গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র ছিল। সে কারণেই হয়তো দুষ্কৃতীর হাত থেকে সেটি কেড়ে নিতে মরিয়া হয়ে ওঠেন দু’জনে। তিনি বলেন, ‘‘সামান্য রোজগারে চার ছেলেমেয়েকে পড়াশোনা করিয়েছি। ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন ছিল মনীষার। সব শেষ হয়ে গেল!’’

এ দিন দুর্গাপুরে দেহ পৌঁছনোর পরে রেলের কাছে ক্ষতিপূরণের দাবি জানায় পরিবার। আসানসোলের ডিআরএম সুমিত সরকারের আশ্বাস, প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durgapur Indian Railways
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE