এক মঞ্চে: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অর্থ কমিশনের চেয়ারম্যান এন কে সিংহ। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।
ঋণ পুনর্গঠন নিয়ে রাজ্যের দীর্ঘদিনের দাবি গুরুত্বসহকারে বিবেচনার আশ্বাস দিল পঞ্চদশ অর্থ কমিশন। মঙ্গলবার নবান্ন সভাঘরে কমিশনের ফুল বেঞ্চের সামনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ঋণের বোঝায় রাজ্য নাস্তানাবুদ হলেও গত সাত বছরে দুর্ভাগ্যজনক ভাবে কেন্দ্রের কাছ থেকে কোনও সাহায্য পাওয়া যায়নি। ফলে ঋণ শোধ করতে গিয়ে রাজ্যের উন্নয়ন বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে।’’ রাজ্যের আর্থিক স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধার করার দাবি জানান তিনি।
এ দিন বাম আমলে নেওয়া ঋণের প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রী কমিশনকে জানান, গত সাত বছরে সুদ ও আসল শুধতেই ২ লক্ষ ২৫ হাজার কোটি টাকা বেরিয়ে গিয়েছে। চলতি বছরেও এই খাতে ৪৬ হাজার কোটি টাকা চলে যাবে। তিনি বলেন, ‘‘আশা করব, কমিশন রাজ্যের ঋণ পুনর্গঠন করতে পদক্ষেপ করবে।’’
পরে মুখ্যমন্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে কমিশনের চেয়ারম্যান এন কে সিংহ সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘রাজ্যের অর্থ ব্যবস্থায় সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধক ঋণভার। কমিশন তা লাঘব করার দাবি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করবে।’’ তিনি জানান, আগের জমানার ঋণের বোঝা যে ভাবে এই সরকারকে বহন করতে হচ্ছে তা সত্যিই কঠিন কাজ। এক দিকে ঋণের ফাঁদ থেকে রাজ্যকে মুক্ত করা, অন্য দিকে সুদ মেটানোর প্রক্রিয়া লাঘব করতে কাঠামোগত সমাধান বার করা আবশ্যক। তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্যের তরফে ঋণমুক্তির জন্য জোরালো যুক্তি ও পরিসংখ্যান দেওয়া হয়েছে। কমিশন তার এক্তিয়ারের মধ্যে থেকে ঋণভার কমানোর প্রস্তাব খতিয়ে দেখছে।’’
বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, ঋণের বোঝা সামলেও বিবিধ উন্নয়নমূলক কাজ হাতে নিয়েছে রাজ্য। বিশেষ করে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পানীয় জল, নতুন পরিকাঠামো তৈরিতে জোর দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি নেওয়া ১৮ হাজার কোটি টাকার পরিকাঠামো প্রকল্পের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘শুধু পরিকাঠামো নয় রাজ্যের ৯০% মানুষের কাছে সরকারের কোনও না কোনও সুবিধা পৌঁছেছে।’’
মুখ্যমন্ত্রীর এই দাবি মেনে নিয়ে এন কে সিংহ বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতে রাজ্যের বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্য। দীর্ঘমেয়াদে এই দুই ক্ষেত্রে বড় কর্মসংস্থানের সুযোগ আছে। বিদ্যুৎ পরিকাঠামো, পরিষেবা এবং নগরায়ণের ক্ষেত্রেও রাজ্যের কাজ প্রশংসার যোগ্য।’’ মূলধনী ব্যয় বাড়ানো, সরাসরি সুবিধা বিলির প্রকল্প এবং ই-পেমেন্টের ব্যাপারে রাজ্যের প্রশংসা করেন তিনি। রাজ্য যে ভাবে নিজস্ব আয় বাড়িয়েছে, বিভিন্ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছে, তাতে সন্তোষপ্রকাশ করেছে কমিশন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy