Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

পার্সোনেল লেজার তহবিলে পাঠানো যেতে পারে মাত্র ৮টি ক্ষেত্রের টাকা 

দ্রুত প্রকল্পের ‘খরচ’ দেখাতে কোষাগার থেকে পিএল বা সেভিংস অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়ে দেওয়ার ‘অভ্যাস’ বহুদিনের। যা বন্ধ করতে সম্প্রতি কড়া ব্যবস্থা নিয়েছে অর্থ দফতর।

গত আর্থিক বছরে এই ধরনের তহবিল থেকে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা উদ্ধার করেছে নবান্ন।

গত আর্থিক বছরে এই ধরনের তহবিল থেকে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা উদ্ধার করেছে নবান্ন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৯ ০৪:২৭
Share: Save:

দ্রুত প্রকল্পের ‘খরচ’ দেখাতে কোষাগার থেকে পিএল বা সেভিংস অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়ে দেওয়ার ‘অভ্যাস’ বহুদিনের। যা বন্ধ করতে সম্প্রতি কড়া ব্যবস্থা নিয়েছে অর্থ দফতর। গত আর্থিক বছরে এই ধরনের তহবিল থেকে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা উদ্ধারও করেছে নবান্ন। কিন্তু পিএল তহবিলে খরচযোগ্য টাকা সরিয়ে দেওয়ার প্রথা বন্ধ করতে গিয়ে কিছু ক্ষেত্রে আবার সমস্যাও তৈরি হয়েছে। সেই সমস্যা কাটাতে এ বার নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে অর্থ দফতরের অনুমোদন ছাড়াই দফতরগুলিকে পিএল তহবিলে টাকা সরানোর অনুমোদন দিয়েছে অর্থ দফতর। যা অবশ্য তাদের আগের কঠোর অবস্থানের চেয়ে কিছুটা বিপরীত পথে হাঁটা বলেই মনে করছেন অর্থ কর্তাদের একাংশ।

নবান্নের কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, পরিকল্পনা খাতে বা পরিকল্পনা বহির্ভূত খাতে প্রতি বছরই কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। বিভিন্ন দফতর সময়ে তা খরচ করতে পারে না। সময়ে টাকা খরচ না হলে তা অর্থ দফতরে ফেরত যাওয়ার কথা। টাকা ফেরত আটকাতে বহু ক্ষেত্রেই বিভিন্ন দফতর পার্সোনেল লেজার অ্যাকাউন্ট বা অফিসারদের নামে তৈরি হওয়া ডিপোজিট অ্যাকাউন্টে টাকা সরিয়ে নিতেন। তাতে সরকারি খরচের খাতায় দেখানো হত, সেই টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। আসলে তা পড়ে থাকত পিএল বা ডিপোজিট অ্যাকাউন্টে। এই প্রথা বন্ধ করতে অর্থ দফতর পিএল অ্যাকাউন্টে টাকা সরানোর আগের নবান্নের অনুমোদন বাধ্যতামূলক করেছিল। উদ্ধার হয়েছে জমে থাকা প্রায় ২৫০০ কোটি টাকাও।

আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

কিন্তু বিভিন্ন দফতরগুলির বক্তব্য, অনুদানমূলক প্রকল্প নিয়ে ব্যাপক সমস্যা দেখা দিয়েছে। ভাতা-সাম্মানিক দেওয়ার ক্ষেত্রেও পিএল অ্যাকাউন্টের ব্যবহার হত, এখন সেই কাজেও সমস্যা তৈরি হয়েছে। তাই দফতরগুলির বক্তব্য শুনে আটটি ক্ষেত্রে পিএল বা ডিপোজিট অ্যাকাউন্টে টাকা জমা রাখার ক্ষেত্রে আর কোনও আগাম অনুমোদন ব্যবস্থা বহাল রাখা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন অর্থ কর্তাদের একাংশ। অর্থ সচিব এই মর্মে নির্দিষ্ট কয়েকটি প্রকল্পের কথা জানিয়েও দিয়েছেন।

তাতে বলা হয়েছে, ২৯১৮-১৯ অর্থ বছরে সরকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে যে অনুদান দিয়েছে, তা সংশ্লিষ্ট সংস্থার ডিপোজিট অ্যাকাউন্টে পাঠানো যেতে পারে। এ জন্য নবান্নের অনুমোদন নিতে হবে না। সরকার কোনও প্রতিষ্ঠানে মূলধনী বিনিয়োগ করলে সেই অর্থও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের তহবিলে পাঠিয়ে দিতে বলা হয়েছে। সরকার যদি অধীনস্ত সংস্থা বা পঞ্চায়েত-পুরসভাকে কোনও অর্থ ঋণ, অগ্রিম, ভরতুকি হিসাবে দেয়, তাও পঞ্চায়েত-পুরসভার তহবিলে দিতে অর্থ দফতরের অনুমতি নিতে হবে না। কোনও সরকারি প্রকল্পের জমি কেনার টাকা কোষাগার থেকে নিয়ে পিএল অ্যাকাউন্টে পাঠানো যেতে পারে। পাশাপাশি গ্রাম পঞ্চায়েতের জন্য বরাদ্দ অর্থও সেই সব পঞ্চায়েতের তহবিলে পাঠাতে আগাম অনুমতি নিতে হবে না। কোনও প্রকল্পের জন্য অগ্রিমের ক্ষেত্রে অবশ্য অনুমোদন নিয়ে ডিপোজিট অ্যাকাউন্টে বরাদ্দ ফেলা যেতে পারে।

অর্থ দফতর কেন কঠোর অবস্থান থেকে পিছিয়ে এল?

এক অর্থ কর্তা জানান, সরকার পিছু হঠেনি। শুধুমাত্র কোন ক্ষেত্রে টাকা পিএল তহবিলে পাঠানো যাবে তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে অন্য কোনও ক্ষেত্রে পিএল তহবিলে টাকা পাঠালে তা অনিয়ম হিসাবে দেখা হবে। এত দিন এই নিয়ম কার্যকর ছিল না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Indian Money PL Fund
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE