Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

ছাউনি ভাঙার মুহূর্তের সিসিটিভির ফুটেজই নেই!

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশের এক সূত্রে খবর, দুর্ঘটনার মুহূর্তের ছবি ক্যামেরা বন্দি হয়নি। কারণ, সভাস্থলে মোট ২৪টি সিসি ক্যামেরা থাকলেও চালু ছিল মোটে ৮টি ক্যামেরা।

প্রধানমন্ত্রীর সভাস্থলে সিসি ক্যামেরা। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

প্রধানমন্ত্রীর সভাস্থলে সিসি ক্যামেরা। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

বরুণ দে
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৮ ০৩:৫১
Share: Save:

খোদ প্রধানমন্ত্রীর সভাস্থলে শামিয়ানা ভেঙে জখম হয়েছেন ৯০ জন। মেদিনীপুরের সেই ঘটনায় তোলপাড় চলছে দেশ জুড়ে। অথচ দুর্ঘটনার মুহূর্তের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজই নেই!

রাজ্য ও কেন্দ্রের বিভিন্ন তদন্তকারী ওই ফুটেজ চাওয়ায় ফাঁপরে পড়েছে পুলিশ। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশের এক সূত্রে খবর, দুর্ঘটনার মুহূর্তের ছবি ক্যামেরা বন্দি হয়নি। কারণ, সভাস্থলে মোট ২৪টি সিসি ক্যামেরা থাকলেও চালু ছিল মোটে ৮টি ক্যামেরা। বাকি ১৬টি চলেনি, শুধু লাগানো ছিল। যে সংস্থা সিসি ক্যামেরা সরবরাহ করেছিল, তারাই পুলিশকে এ কথা জানিয়েছে। পরিস্থিতি দেখে সংবাদমাধ্যমের থেকে ফুটেজ সংগ্রহের চেষ্টা করছে পুলিশ।

এ নিয়ে চাপানউতোরও শুরু হয়েছে। পুলিশের একাংশের ব্যাখ্যা, বিজেপি-ই যে হেতু সব আয়োজন করেছিল, তাই গাফিলতির দায় তাদের। মঙ্গলবার সভার মাঠ পরিদর্শনে এসেছিলেন এডিজি (আইবি) সিদ্ধিনাথ গুপ্ত, পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া। কেউই মুখ খোলেননি। তবে জেলা পুলিশের এক কর্তা মানছেন, “প্রধানমন্ত্রীর সভা বলে কথা। সিসি ক্যামেরার ব্যাপারে আরও যত্নবান হতে হত।”

বিজেপি অবশ্য পুলিশকেই দুষছে। দলের রাজ্য সম্পাদক তুষার মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ডি-জোনের নিরাপত্তার দায়িত্ব এসপিজি-র। কিন্তু বাকি সভাস্থলের নিরাপত্তার দায়িত্ব তো পুলিশেরই। কটা সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে, সেগুলো ঠিকঠাক কাজ করছে কি না, সে সব না দেখে পুলিশ সভায় আসা বাস আটকাতেই ব্যস্ত ছিল।’’

সোমবারের সভায় মূল মঞ্চের সামনের দিকে প্রায় ২৬ হাজার বর্গফুটের লম্বা ছাউনি ছিল। দু’দিকে প্রায় ২২ হাজার বর্গফুট করে আরও দু’টি লম্বা ছাউনি তৈরি করা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা চলাকালীন উত্তর দিকে ছাউনির কাঠামো ভেঙে পড়ে। বিকেলে দক্ষিণের কাঠামোও ভেঙে যায়। তার ধাক্কায় মাঠের পাঁচিলের একাংশও ভেঙেছে। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, তিনটে ছাউনিতে ৮টি করে ক্যামেরা ছিল। কিন্তু সভা চলাকালীন শুধু মাঝের ছাউনির ক্যামেরাগুলিই চলে। আর ৩টি ডিভিআর (ডিজিট্যাল রেকর্ডার) সেট থাকার কথা থাকলেও ছিল মাত্র একটি। ফলে, দুর্ঘটনার ফুটেজ মেলেনি।

মেদিনীপুরের যে সংস্থা সিসি ক্যামেরা লাগিয়েছিল, তার মালিক সুবীর সামন্তকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। সুবীর জানিয়েছেন, বিজেপির তরফে তাঁকে ক্যামেরা লাগানোর বরাত দেওয়া হয় ১২ জুলাই। ১৩ জুলাই কাজ শুরুর কথা ছিল। কিন্তু টানা বৃষ্টি এবং কাঠামো তৈরি না হওয়ায় কাজ শুরু করতে ১৫ জুলাই হয়ে যায়। ওই দিন কাজ শেষ হয়নি। সভার দিন সকালে কোনও রকমে ৮টি সিসি ক্যামেরা চালু করা হয়। সুবীরের কথায়, “এত কম সময়ে এই কাজ করা সম্ভব ছিল না। সেটা জানিয়েও ছিলাম।” সুবীরের অভিযোগ, তাঁর সংস্থার অনেক কর্মীকে সিকিউরিটি পাস দেওয়া হয়নি। ফলে, সভার দিন তাঁরা মাঠে ঢুকতে পারেননি। এতেও অসুবিধা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CCTV PM's meeting Pandal Collapse
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE