প্রতীকী ছবি।
গঙ্গাপারের শহরে শুরু হতে চলেছে আন্তর্জাতিক মৎস্য মেলা। রাজ্যে এই ধরনের মেলা প্রথম। থাকছে মাছের হাজারো পদের আয়োজন। দেশ বিদেশের মাছ চাষের পদ্ধতি, প্রযুক্তি আর বাণিজ্য নিয়ে আলোচনা। তবে সব কিছু ছাপিয়ে গুরুত্ব পাচ্ছে মাছের রসনাতৃপ্তির পরিধি বাড়ানোর বিষয়টি। আর একে সামনে রেখেই ব্যবসা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ।
মাছ নিয়ে বাঙালির আবেগের শেষ নেই। আর একে গুরুত্ব দিয়েই পশ্চিমবঙ্গের একমাত্র প্রাণিবিদ্যা বিশ্ববিদ্যালয় এই মেলার আয়োজন করছে। বেলগাছিয়ায় পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের এই কাজে সহযোগিতা করছে ‘ইন্ডিয়ান মিট সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন’ ও ‘ন্যাশনাল ফিশারিজ ডেভলপমেন্ট বোর্ড’। বেলগাছিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ২২ নভেম্বর থেকে শুরু হতে চলা তিন দিনের মেলায় হাজির হচ্ছেন ব্রিটেন, বাংলাদেশ, নিউজিল্যান্ড, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশের প্রতিনিধিরা। দেশ-বিদেশের শ’তিনেক মৎস্য-গবেষক যোগ দিচ্ছেন মেলায়। রাজ্যে প্রথম বার এই ধরনের মেলার সাফল্য নিয়ে আশাবাদী পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক পুর্ণেন্দু বিশ্বাস। তিনি জানিয়েছেন, মেলা উপলক্ষে ঢাকা ও চট্টগ্রামের দু’টি প্রাণিবিদ্যা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে পঠনপাঠন ও গবেষণা নিয়ে তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘মউ’ সই হতে চলেছে।
মাছ চাষের সঙ্গে জুড়ে রয়েছে ব্যবসার সুযোগ। কিন্তু জলাশয়ে মাছ চাষ কিংবা তা সরাসরি বাজারে বিক্রিতেই বিষয়টিকে শেষ করে দিতে চাইছেন না পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা সম্প্রসারণ ও খামার অধিকর্তা ডঃ অরুণাশিস গোস্বামী বলেন, ‘‘মাছের রসনাতৃপ্তির পরিধি বাড়ানোর বিষয়কেই মেলায় সবচেয়ে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। মাছ থেকে কত ধরনের পদ তৈরি হতে পারে, আর দেশ-বিদেশে এর ব্যবসার সুযোগ কতটা, তা মাছচাষি ও নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা হবে।’’
ভারতে মাছকে ঘিরে বছরে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা। তবে মাছের বিভিন্ন পদ তৈরি করে রসনাতৃপ্তিতে এখনও পর্যন্ত এগিয়ে এসেছে শুধু নামী সংস্থাগুলিই। এটিকে এখন গ্রাম-শহরের বেকার যুবক-যুবতীদের মধ্যে জনপ্রিয় করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মেলায় দেশ-বিদেশের প্রতিনিধিরা মাছের প্রক্রিয়াকরণ ও ব্যবসার সেই সম্ভাবনাকেই সামনে নিয়ে আসবেন। সুযোগ থাকবে এ নিয়ে মতের আদানপ্রদানের।
এই মুহূর্তে চারা মাছ উৎপাদনে দেশের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে পশ্চিমবঙ্গ। তবে সেই চারা নিয়ে গিয়ে তা বড় করার ব্যাপারে এগিয়ে অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশার মতো রাজ্যগুলি। আন্তর্জাতিক মৎস্য মেলায় দেশের অন্য রাজ্যগুলিও তাদের সম্ভাবনার দরজা খুলতে চাইছে। বিশেষ করে মাছ চাষ, উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার ও এই ব্যবসার ক্ষেত্রকে বাড়াতে অন্যদের অভিজ্ঞতাকেও বুঝে নিতে চাইবে তারা।
আর এতটাই যখন আয়োজন, তা হলে মেলার সরাসরি মাছের সুস্বাদু পদ চেখে দেখার সুযোগ মিলবে না কেন? সে ব্যবস্থাও থাকছে। বিভিন্ন স্টলে বিক্রি হবে মাছের হাজারো পদ। তবে বিদেশি নয়, দেশি। সেখানে সব থেকে গুরুত্ব পাচ্ছে বাংলার পাবদা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy