ঘটনাস্থল পরিদর্শনে ফরেন্সিক দল ও পুলিশ কর্তারা। নিজস্ব চিত্র
দূর থেকে নয়, খুব কাছ থেকেই ছোড়া গুলি ছিটকে মাথায় লেগেছিল তিন বছরের শিশু মৃণাল মণ্ডলের। মালদহের মানিকচক থানার রামনগর গ্রামে তিন বছরের শিশু মৃণালকে গুলি করা হয়েছিল। সেই কাণ্ডের তদন্তে নেমে এমনই ইঙ্গিত দিলেন ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবেটরির বিশেষজ্ঞ। এ দিন ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করেছেন তিনি। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া গুলির খোলও পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছে ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবেটরিতে। ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ চিত্ররাক্ষ সরকার বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে শিশুটির মাথায় গুলি খুব কাছ থেকেই লেগেছে। বাড়ির ভিতরেই ওই শিশু গুলিবিদ্ধ হয়েছে। তবে এখনই স্পষ্ট করে কিছু বলা সম্ভব নয়।’’ সপ্তাহ দু’য়েকের মধ্যে পরীক্ষার রিপোর্ট মিলবে। চিকিৎসকদের সঙ্গেও কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
এরপর বাড়ির কারও হাতের আগ্নেয়াস্ত্র থেকেই গুলি ছিটকে মৃণালের মাথায় লাগার দাবি ক্রমশ জোরাল হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানান, তাঁরা প্রথম থেকেই বলছেন, শিশুটি বাড়িতেই গুলিবিদ্ধ হয়েছে। কারণ ঘটনার দিন কাউকে বাড়ি থেকে পালিয়ে যেতে দেখা যায়নি। তবে রক্তাক্ত অবস্থায় শিশুটিকে নিয়ে বাড়ির লোকেদের বের হতে দেখা গিয়েছিল।
বিজেপির জেলা সভাপতি সঞ্জিত মিশ্র বলেন, “বাড়ির কারও হাতের আগ্নেয়াস্ত্র থেকেই ওই নিরীহ শিশু গুলিবিদ্ধ হয়। আর দায় এড়াতে বিজেপির নামে অভিযোগ করা হচ্ছিল। পুলিশ ওই শিশুর বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই পুরো ঘটনাটি পরিষ্কার হয়ে যাবে।” যদিও মৃণালের বাবা পরিমল মণ্ডল বলেন, “বিজেপির দুষ্কৃতীরা বাড়িতে গুলি চালিয়েছিল। সেই গুলিতেই আহত হয়েছে মৃণাল। এখন আমাদের নামেই দোষ দেওয়া হচ্ছে।” তাঁর স্ত্রী পুতুল বিজেপির টিকিটে ভোটে দাঁড়িয়ে জিতেও তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তাঁর দাবি, সেই আক্রোশেই তাঁদের বাড়িতে গুলি ছোড়া হয়েছে। মালদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) দীপক সরকার বলেন, “ঘটনার সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
এ দিকে, ঘটনার চার দিন পরেও সঙ্কট কাটেনি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন মৃণালের। তবে চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছে। একই সঙ্গে এদিনও বেশ কয়েকবার কেঁপে উঠেছে। হাত, পা নাড়ার পাশাপাশি চোখ খোলার চেষ্টা করেছে সে।
নিউরো সার্জন সুষেণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “মস্তিষ্কের মধ্যে দিয়ে গুলি যাওয়ায় সংক্রমণের একটা আশঙ্কা ছিল। তাই রক্ত পরীক্ষা করা হয়েছিল। তবে রক্ত পরীক্ষায় সংক্রমণের কিছু পাওয়া যায়নি। যদিও এখনও পুরোপুরি বলা যাচ্ছে না, শিশুটির সঙ্কট কেটে গিয়েছে। আমরা নিয়মিত তাকে পর্যবেক্ষণের মধ্যে রেখেছি।” পুতুল বলেন, “আমি কিছুই চাই না। আমি চাই আমার ছেলে আমার কোলে ফিরে আসুক।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy