আগের বার তারা এসেছিল ১০ ডিসেম্বর। বলে গিয়েছিল, বিহারের সদ্য অনুষ্ঠিত ভোটের চেয়েও আঁটোসাঁটো ব্যবস্থায় করা হবে পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন। এ-ও জানিয়েছিল, নির্বাচন ঘিরে গণ্ডগোল হলে রিটার্নিং অফিসার হিসেবে দায়বদ্ধ থাকবেন খোদ জেলাশাসক।
তাই তখন ডিএম ও পুলিশকর্তাদের ‘নিরপেক্ষ’ থাকার পরামর্শ দিয়ে গিয়েছিল জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ‘ফুল বেঞ্চ।’ ভোটের মুখে পশ্চিমবঙ্গ প্রশাসনকে আর এক বার সতর্ক করতে যারা ৮ মার্চ ফের কলকাতায় মুখ দেখাতে পারে বলে মঙ্গলবার কমিশন-সূত্রে ইঙ্গিত মিলেছে। এ পর্যন্ত যা খবর, ৭ মার্চ ফুল বেঞ্চের সদস্যেরা কলকাতায় আসবেন। বৈঠক করবেন রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের ডিজি এবং সমস্ত জেলার ডিএম-এসপি’দের সঙ্গে।
পাশাপাশি সে দিন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও তাঁদের কথা হওয়ার সম্ভাবনা। গত বার ফুল বেঞ্চের কাছে বিরোধীরা দাবি জানায়, পশ্চিমবঙ্গে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে হলে ভোটের অন্তত এক মাস আগে রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠাতে হবে, রুট মার্চ করাতে হবে। ভোট ঘোষণার আগে রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনীর আগমনকে তারই জের হিসেবে দেখছে প্রশাসনের একাংশ।
রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচনী অফিসার দিব্যেন্দু সরকার এ দিন জানান, ইতিমধ্যে কিছু কেন্দ্রীয় বাহিনী পশ্চিমবঙ্গে এসেছে। ৭-৮ মার্চের মধ্যে আরও একশো কোম্পানি আসবে।
বাহিনীকে কোথায় কী ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, তার রিপোর্ট কমিশনকে জানাতে হবে। ডিএম ও এসপি-রা ঠিক করবেন, কেন্দ্রীয় আধাসেনা কোথায় থাকবে। প্রয়োজনে তাঁরা কমিশনের পরামর্শ নিতে পারেন। দিব্যেন্দুবাবু জানান, এ বার কমিশনের স্লোগান— ‘বিবেচনার সঙ্গে নির্ভয়ে ভোট দিন।’ সেই বার্তাকে জোরদার করতেই আধাসেনার রুটমার্চ শুরু হয়ে গিয়েছে।
‘‘ভোটারদের মনোবল বাড়াতে এই পদক্ষেপ। ভোটের দিন ঘোষণার আগেই তা আরম্ভ করা হল।’’— মন্তব্য তাঁর। ফুল বেঞ্চের দ্বিতীয় দফার সফরকেও আমজনতার আস্থা অর্জন প্রক্রিয়ার অঙ্গ হিসেবে দেখছেন তাঁরা।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি রাজ্যের পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। যার প্রেক্ষিতে ফুল বেঞ্চের সফরের দিকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও প্রশাসনিক মহলের সতর্ক নজর রয়েছে। সকলেই উদগ্রীব, অভিযোগের জের কত দূর পৌঁছয়। উপরন্তু বিরোধী পক্ষও কোমর বাঁধছে। রাজনৈতিক সূত্রের খবর, এ বার কমিশন-কর্তাদের কাছে ভারতী ঘোষ-সহ একাধিক অফিসারের বিরুদ্ধে ‘পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে নিষ্ক্রিয় থাকা’র নালিশ পেশ হতে পারে।
নির্ভয়ে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানাতে কমিশনের তরফে গণমাধ্যমেও ব্যাপক প্রচার চালানো হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন সদনের এক আধিকারিক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy