Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

উত্তপ্ত ভাঙড়, রাস্তায় আরাবুল ও জমি কমিটি 

হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

পুলিশের সঙ্গে তর্ক আরাবুল ইসলামের। —নিজস্ব চিত্র।

পুলিশের সঙ্গে তর্ক আরাবুল ইসলামের। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ভাঙড় শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৯ ০৩:৫৩
Share: Save:

ভোটের ফল ঘোষণার পরই ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠল ভাঙড়ের পাওয়ার গ্রিড এলাকা।

বৃহস্পতিবার রাত থেকেই ওই এলাকায় বাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট ও সন্ত্রাস চালানোর অভিযোগ ওঠে তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামের অনুগামীদের বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদে শুক্রবার সকাল থেকে পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলে ভাঙড়ের জমি-জীবিকা-বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ রক্ষা কমিটি। পুলিশ জানিয়েছে, কোনও লিখিত অভিযোগ হয়নি। তবে হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ফল ঘোষণা হতেই বৃহস্পতিবার রাত থেকেই পাওয়ার গ্রিড সংলগ্ন এলাকার পদ্মপুকুর, উত্তর ও দক্ষিণ গাজিপুর, টোনা মুন্সিপাড়া ও বকুলতলা এলাকায় বাড়ি বাড়ি ঢুকে হুমকি,মারধর ও বাড়িঘর ভাঙচুর করার অভিযোগ ওঠে ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা তথা ভাঙড়-২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি আরাবুল ও তাঁর ছেলে হাকিমুল সহ কয়েক জন অনুগামীর বিরুদ্ধে। ওই ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার সকাল থেকে পদ্মপুকুর মোড়ে লাউহাটি-হাড়োয়া রোড অবরোধ করা হয়। এর পাল্টা নতুনহাটে লাউহাটি-হাড়োয়া অবরোধ করে আরাবুল ও তার দলবল। পরে পুলিশ সব পক্ষকে বুঝিয়ে অবরোধ তুলে দেয়।

২০১৭ সালের ১৭ জানুয়ারি ভাঙড়ের পাওয়ার গ্রিড বিরোধী জমি আন্দোলনে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল ওই এলাকা। গুলিতে প্রাণ হারিয়েছিলেন জমি কমিটির দুই সদস্য মফিজুল খান ও আলমগির মোল্লা। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান হাফিজুল মোল্লা নামে এক যুবক। সব অভিযোগই ছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। পরে পাওয়ার গ্রিড বিরোধী জমি আন্দোলনের ফলে অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে পড়েন আরাবুল। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ওই এলাকার পোলেরহাট-২ পঞ্চায়েতের ১৬ টি আসনের মধ্যে ৮টি আসনে ভোট হয়। ওই ৮টি আসনে জমি কমিটি সমর্থিত নির্দল প্রার্থীদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তৃণমূল। তার মধ্যে ৫টি আসন পায় জমি কমিটি সমর্থিত নির্দল ও ৩টি আসন পায় তৃণমূল। তবে এবার লোকসভা নির্বাচনে ওই এলাকায় ভাল ফল করেছে তৃণমূল। অভিযোগ, এর পরেই ওই এলাকায় পুরনো ‘সাম্রাজ্য’ ফিরে পেতে নামে আরাবুল ও তাঁর সঙ্গীরা। জমি কমিটির অভিযোগ, এ দিন তারা পদ্মপুকুরে জমি কমিটির সদস্য জিয়ারুল ইসলাম,আব্দুল গনি মোল্লা, রূপ মোল্লা-সহ অনেকের বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর, মারধর, লুটপাট চালায়। দক্ষিণ গাজিপুরের আইজুল মোল্লার মাথায় ধারালো অস্ত্রের কোপ মারা হয়। জমি কমিটির নেতা মির্জা হাসান বলেন, ‘‘আরাবুল ও তার বাহিনী এলাকা দখল করতে সন্ত্রাস চালাচ্ছে। জমি কমিটি সিপিএম প্রার্থী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকে সমর্থন করে। তাই ওরা শোধ নিচ্ছে। প্রশাসনকে জানিয়েছি।’’ আরাবুল অবশ্য বলেন, ‘‘ওরা নির্বাচনে হেরে ফের এলাকা দখল করতে আমাদের কর্মীদের উপর হামলা করেছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE