Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, জয়ের আভাসে গান ধরলেন বাবুল

২০১৪ সালে প্রথম বার প্রার্থী হয়েই আসানসোলে প্রায় সত্তর হাজার ভোটে জেতেন বাবুল। এ বার তাঁর বিরুদ্ধে তৃণমূল প্রার্থী করে মুনমুন সেনকে।

মিষ্টিমুখ করাচ্ছেন বাবুলের স্ত্রী। ছবি: পাপন চৌধুরী

মিষ্টিমুখ করাচ্ছেন বাবুলের স্ত্রী। ছবি: পাপন চৌধুরী

সুশান্ত বণিক
আসানসোল শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০১৯ ০৪:১৭
Share: Save:

গণনা কেন্দ্রের সামনের মাঠে স্ত্রীর হাত ধরে ঘুরছিলেন তিনি। দফায় দফায় মাইকে ঘোষণা হচ্ছে বিভিন্ন রাউন্ডের ফলাফল। ক্রমশ চওড়া হচ্ছে হাসি। প্রচার পর্বে দাবি করেছিলেন, জিতবেন দু’লক্ষ ভোটে। প্রায় সেই ব্যবধানে জিতলেন আসানসোলের বিজেপি প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়। আর তাঁর জয়ের পরে তৃণমূল প্রার্থীর অন্যতম সেনাপতি, আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি ঘোষণা করলেন, পদত্যাগ করবেন।

২০১৪ সালে প্রথম বার প্রার্থী হয়েই আসানসোলে প্রায় সত্তর হাজার ভোটে জেতেন বাবুল। এ বার তাঁর বিরুদ্ধে তৃণমূল প্রার্থী করে মুনমুন সেনকে। বড় ব্যবধানে হারের পরে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের একাংশের দাবি, বাবুল নন, মেরুকরণের রাজনীতির কাছে হেরে গিয়েছেন তাঁরা। বাবুল অবশ্য বলেন, ‘‘ঘরে ঘরে যে নরেন্দ্র মোদীর উন্নয়ন পৌঁছেছে, তা আমরা ঠিক ভাবে বোঝাতে পেরেছি। তাই মানুষ আমাদের বেছে নিয়েছেন।’’

আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের সাতটি বিধানসভা এলাকা থেকেই ‘লিড’ পেয়েছেন বাবুল। স্থানীয় বিজেপি নেতাদের দাবি, সাংসদ বাবুলকে নানা কাজে তৃণমূলের ‘বাধা দেওয়া’ মানুষ ভাল ভাবে নেননি। তা ছাড়া এলাকার সংখ্যাগরিষ্ঠ অ-হিন্দিভাষী ভরসা রেখেছেন মোদীর উপরে। তাই গত পাঁচ বছরে এলাকায় দু’টি বড় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বন্ধের সিদ্ধান্ত হলেও বিজেপি ভোট পেয়েছে। গত বছর আসানসোলে এবং ভোট ঘোষণার পরে বরাকরে গোষ্ঠী-সংঘর্ষও তৃণমূলের বিপক্ষে গিয়েছে বলে ধারণা বিজেপি নেতাদের।

ফের হারের কারণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে তৃণমূলের অন্দরে। এ দিন দুপুরে কিছু ক্ষণ গণনা কেন্দ্রে থাকার পরে ফিরে যান মুনমুন। দলের হার নিশ্চিত বুঝে জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, ‘‘কালই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেব।’’ আবার তৃণমূলের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি ভি শিবদাসনের পর্যবেক্ষণ, ‘‘দলে এমন অনেকে রয়েছেন, যাঁদের কাজকর্ম নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এই ফল নিয়ে পর্যালোচনা করব।’’

তবে হারের পিছনে বামের ভোট বিজেপির বাক্সে যাওয়াও বড় কারণ বলে দাবি করেছেন তৃণমূল নেতারা। গত বার সিপিএম এই কেন্দ্রে প্রায় আড়াই লক্ষ ভোট পেয়েছিল। এ বার তা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৮৭ হাজারে। আসানসোলের সিপিএম নেতা বংশগোপাল চৌধুরীও মানছেন, ‘‘প্রত্যন্ত এলাকার গরিব মানুষের ভোট আমরা ধরে রাখতে পারিনি।’’

বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লাফিয়ে বাড়ছিল বাবুলের সঙ্গে মুনমুনের ভোটের ব্যবধান। গণনা কেন্দ্রের মিডিয়া সেন্টারে বসে বাবুল গান ধরেন, ‘চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, উচ্চ যেথা শির...’। এই গানটা কেন? বাবুলের জবাব, ‘‘ধারাবাহিক ভাবে আক্রমণ হয়েছে আমাদের উপরে। কিন্তু কর্মীরা দমে যাননি। তাই তো এই ফল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE