Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

উত্তরও রং মিলিয়ে গেরুয়া

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজবংশী, মতুয়া, আদিবাসী, সংখ্যালঘু, গোর্খা ভোটের হরেক সমীকরণ রয়েছে এই আট লোকসভা কেন্দ্রে।

শিলিগুড়িতে বিজয় মিছিল। ছবি: এএফপি।

শিলিগুড়িতে বিজয় মিছিল। ছবি: এএফপি।

দেবাশিস চৌধুরী
শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০১৯ ০৪:৪২
Share: Save:

বুথফেরত সমীক্ষায় ইঙ্গিত ছিল। উত্তরবঙ্গে ভোটের রং কী হতে চলেছে, সকালে ইভিএম খোলার পর তার আভাস স্পষ্ট হয়ে যায়। আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিঙে প্রথম থেকেই ‘লিড’ নেয় বিজেপি। আর ফিরে দেখতে হয়নি। কোচবিহার, রায়গঞ্জ, বালুরঘাট, মালদহ উত্তরে শেষ হাসি গেরুয়া প্রার্থীদের। মালদহ দক্ষিণে ফোটোফিনিশে বাজিমাত করেছেন গনিখান চৌধুরীর ভাই, কংগ্রেসের আবু হাসেম খান চৌধুরী। গেরুয়া উত্তরে একমাত্র বিরোধী জয় তাঁরই। সব মিলিয়ে উত্তরবঙ্গের আটটি আসনের মধ্যে সাতটি জিতে নিল বিজেপি। দ্বিতীয় তৃণমূল। বাম ও কংগ্রেস প্রার্থীরা রইলেন পিছিয়ে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজবংশী, মতুয়া, আদিবাসী, সংখ্যালঘু, গোর্খা ভোটের হরেক সমীকরণ রয়েছে এই আট লোকসভা কেন্দ্রে। যেমন, আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি কেন্দ্রে চা বাগানের ভোট বড় ভূমিকা নিয়েছে। অনেকেই বলছেন, গত কয়েকটি নির্বাচনে আলিপুরদুয়ারে বিজেপির বাড়বাড়ন্ত স্পষ্ট। এই হাওয়াবদলের প্রভাব পড়েছে জলপাইগুড়িতেও। তাতেই তৃণমূলের ঘাঁটিতে অঘটন।

যে সব জায়গায় আদিবাসী ভোট গুরুত্বপূর্ণ, সেখানেও এগিয়ে বিজেপি। রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের আদিবাসী ভোটও বিজেপির বাক্সে জমা পড়েছে বলে মনে করছেন ভোট বিশেষজ্ঞরা। এই ভোটের জোরে মালদহের হবিবপুর বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনেও জিতেছে বিজেপি।

পাশাপাশি মালদহের দু’টি কেন্দ্র বাদে সংখ্যালঘু ভোট তৃণমূলে গিয়েছে বলেই মনে করছেন তাঁরা। এমনকি, রায়গঞ্জের মতো কেন্দ্র, যেখানে সিপিএমের মহম্মদ সেলিম এবং কংগ্রেসের দীপা দাসমুন্সির মতো ওজনদার প্রার্থীরা রয়েছেন, সেখানেও ইসলামপুরের প্রাক্তন কানাইয়ালাল আগরওয়াল দ্বিতীয় হয়েছেন। দীর্ঘক্ষণ তিনি বিজেপির দেবশ্রী চৌধুরীর সঙ্গে সমানে লড়াইও করেছেন। ইসলামপুর বিধানসভায় উপনির্বাচনে জিতেছেন তৃণমূল প্রার্থী আব্দুল করিম চৌধুরী।

গনিখানের গড় মালদহেও এ বারে জয় পেল বিজেপি। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের শেষে নিজের আসন ধরে রাখতে পেরেছেন আবু হাসেন খান চৌধুরী (ডালু)। কিন্তু মালদহ উত্তর আসনটি গনির পরিবারের ভোট ভাগাভাগিতে খোয়াল কংগ্রেস। পুরনো দল থেকে তৃণমূলে গিয়ে মৌসম নুর পেয়েছেন প্রায় ৩২ শতাংশ ভোট। তাঁর দাদা ইশা খান চৌধুরী কংগ্রেসের পক্ষে দাঁড়িয়ে পেয়েছেন ২৩ শতাংশ ভোট। বিজেপির খগেন মুর্মু পেয়েছেন প্রায় ৩৭ শতাংশ ভোট।

তরাই ও ডুয়ার্সে আদিবাসী, চা বাগান শ্রমিকদের মধ্যে বিমল গুরুংয়ের প্রভাব বরাবরই ভাল। তাঁর অনুপস্থিতিতেও কিন্তু জোট সঙ্গী বিজেপির ভোট ভাঁড়ারে কিছু কম পড়েনি। পাহাড়ে বিজেপি প্রার্থী রাজু বিস্তা জিতলেন বিরাট ব্যবধানে। গুরুংশূন্য পাহাড়ে রাজ্য সরকার যাবতীয় প্রশাসনিক দায়িত্ব দিয়েছিল বিনয় তামাংকে। দিনের শেষে তাঁর ঝুলি কিন্তু শূন্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE