শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
জয় প্রায় এক লক্ষ ভোটে। এই জয়ে শ্রীরামপুরের তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে অর্ধেকের বেশি আসনে ‘লিড’ দিয়েছে ডোমজুড় বিধানসভা। বাকি ‘লিড’ জগৎবল্লভপুর-সহ পাঁচ বিধানসভা কেন্দ্র মিলিয়ে। আর শ্রীরামপুর বিধানসভায় তিনি পিছিয়ে। সব মিলিয়ে হাওড়া জেলার দুই বিধানসভা কেন্দ্র কল্যাণবাবুর জয় মসৃণ করেছে। কিন্তু আগামী বছর পুরভোটের দিকে তাকিয়ে গঙ্গা লাগোয়া শ্রীরামপুর শিল্পাঞ্চলের বেশ কিছু এলাকার ফল হুগলির তৃণমূল নেতাদের চিন্তায় ফেলেছে।
কল্যাণবাবু নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির দেবজিৎ সরকারকে ৯৮ হাজার ৫৩৬ ভোটে হারিয়ে তৃতীয় বারের জন্য শ্রীরামপুর কেন্দ্র থেকে সংসদে যাওয়ার ছাড়পত্র পেয়েছেন। ডোমজুড়ে তিনি ৫৫,০৩৩ ভোটে বিজেপিকে পিছনে ফেলেছেন। জগৎবল্লভপুরে এই ব্যবধান ১১,৯৩০। অর্থাৎ, হাওড়ার দুই বিধানসভা কল্যাণকে ৬৬,৯৬৩ ভোটে এগিয়ে দিয়েছে।
বাকি পাঁচ বিধানসভা হুগলি জেলায়। তার মধ্যে চণ্ডীতলায় ১৭ হাজার এবং জাঙ্গিপাড়ায় প্রায় ১২ হাজার ভোটে কল্যাণবাবু এগিয়ে। কিন্তু উত্তরপাড়া এবং চাঁপদানি বিধানসভায় কল্যাণবাবুর ‘লিড’ নগণ্য। উত্তরপাড়া তাঁকে ৩৪৯১ ভোটের বেশি ‘লিড’ দিতে পারেনি। চাঁপদানিতে ‘লিড’ দু’হাজারের কম। আর শ্রীরামপুর বিধানসভায় কল্যাণকে প্রায় আড়াই হাজার ভোটে পিছনে ফেলে দিয়েছেন দেবজিৎ। কল্যাণবাবুর ভোট-ম্যানেজারদের একাংশ মানছেন, গঙ্গা লাগোয়া পুরসভাগুলির বেশ কিছু জায়গায় বিজেপি রীতিমতো আধিপত্য বিস্তার করেছে।
শাসকদলের এক নেতার কথায়, ‘‘ডোমজুড় এতটা লিড না-দিলে জয়ের ব্যবধান লাখের কাছাকাছি পৌঁছয় না।’’ গত লোকসভায় ডোমজুড়ে কল্যাণবাবু এগিয়ে ছিলেন প্রায় ৩৯ হাজার ভোটে। এ বার মোদী-ঝড়ের মধ্যেও ব্যবধান বেড়েছে প্রায় ১৬ হাজার।
স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, কোন অঙ্ক বা রসায়নে শাসকদল ডোমজুড়ে বিজেপিকে এ ভাবে উড়িয়ে দিল?
কল্যাণের ভোট পরিচালনার অন্যতম দায়িত্বে থাকা নেতা তথা হুগলি জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘চণ্ডীতলাতেও গত লোকসভার তুলনায় আমাদের ‘লিড’ তিন হাজারের বেশি বেড়েছে। তবে অস্বীকার করার জায়গা নেই যে ডোমজুড়ের ফলে জয়ের ব্যবধানকে স্বাস্থ্যকর দেখাচ্ছে। ওখানে আমাদের দলের সংগঠন খুব পোক্ত। মানুষ বিজেপির মিথ্যা প্রচারকে ছুড়ে ফেলে উন্নয়নের পক্ষে ভোট দিয়েছেন।’’
একই যুক্তি ডোমজুড়ের তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়েরও। তিনি বলেন, ‘‘এখানে আমাদের দলের সংগঠন মজবুত। সারা বছর রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করি। মানুষকে সঙ্গে নিয়ে চলি। সর্বোপরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে উন্নয়নের প্রচুর কাজ হয়েছে। তাই মানুষ সঙ্গে আছেন। এত ভাল ব্যবধানের এটাই অঙ্ক, এটাই রসায়ন।’’ ডোমজুড়ে ১৫টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ১৩টিতেই এগিয়ে তৃণমূল। শুধু বালি এবং সলপ-১ পঞ্চায়েতে অল্প ব্যবধানে পিছিয়ে। এই দু’জায়গার ফলের কারণ পর্যালোচনা করা হবে বলে তিনি জানিয়ে দেন।
এই ফল অন্য বিধানসভায় কেন হল না? সংগঠনের ঘাটতি?
রাজীবের জবাব, ‘‘ওই সব জায়গায় দলের দায়িত্বে যাঁরা আছেন, এটা তাঁরাই দেখবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy