Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

ফল বেরোতেই বিক্ষিপ্ত হিংসা রাজ্য জুড়ে, গুলি-অগ্নিসংযোগ, হিংসা বাড়ার আশঙ্কা গোয়েন্দাদের

আমডাঙায় আক্রান্ত হয়েছেন তৃণমূল সমর্থকেরা। অভিযোগ, সিপিএমের লোকজন রাতারাতি বিজেপি হয়ে তৃণমূলের উপর হামলা চালিয়েছে।

হিংসার প্রতিবাদে ভাঙরে পথ অবরোধ স্থানীয় গ্রামবাসীদের। নিজস্ব চিত্র।

হিংসার প্রতিবাদে ভাঙরে পথ অবরোধ স্থানীয় গ্রামবাসীদের। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০১৯ ১৭:০৭
Share: Save:

নির্বাচনের ফল ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই শহর কলকাতা এবং রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে টুকরো টুকরো হিংসা এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে চলেছে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই। রাজ্য পুলিশের দাবি, সবক’টিই খুব ছোট ছোট এবং বিচ্ছিন্ন ঘটনা। পুলিশ খুব দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি যাতে আরও জটিল আকার না নেয় তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে। তবে কোচবিহারে বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত একের পর এক রাজনৈতিক সংঘর্ষ এবং হিংসার ঘটনা ঘটেছে।

কলকাতা শহরেও রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। কসবার সত্যেন বসু কলোনির বাসিন্দা পরিমাল বৈদ্য এবং তাঁর ভাই অজয় বৈদ্যর অভিযোগ, ফল ঘোষণার পরই বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ বিজেপি এবং সিপিএমের কর্মী সমর্থকরা তাঁদের উপর হামলা চালান। কলকাতা পুরসভার ৬৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা পরিমল এলাকার পরিচিত তৃণমূল কর্মী। লোকসভা নির্বাচনে তিনি দলের পোলিং এজেন্টও ছিলেন। তাঁর অভিযোগ, বিজেপি এবং সিপিএম কর্মীরা তাঁদের দুই ভাইকে বাড়ির সামনেই বেধড়ক মারধর করে। তাঁর মাথা ফেটেছে এবং তাঁর ভাইয়ের হাতে চোট লেগেছে। পরিমল বলেন, তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাঁদের এর দলীয় সহকর্মী কালু রাজভড়ের বাড়িও ভাঙচুর করে অভিযুক্তরা।

বৃহস্পতিবার রাত থেকেই একের পর এক সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায় কোচবিহার জেলায়। জেলা তৃণমূলের নেতাদের অভিযোগ, মাথাভাঙায় হাজরাহাট এলাকায় একটি দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয় বিজেপির জয়ী প্রার্থী নিশীথ প্রামানিকের অনুগামীরা। পাল্টা তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন জোরপাটকি এলাকার বিজেপি কর্মীরা। তাঁদের দাবি সশস্ত্র তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা শম্ভু বর্মণ নামে এক বিজেপি কর্মীকে ব্যপক মারধর করে। স্থানীয় তৃণমূল নেতা কমল অধিকারী অবশ্য বিজেপির দাবি উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন,‘‘ বিজেপিই আগে আমাদের এক কর্মী নবীন বর্মনের বাড়ি হামলা চালায়।” একই রকম ভাঙচুর, মারধর, অগ্নিসংযোগের অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ রয়েছে সিতাই এবং শীতলখুচি এলাকাতেও। তবে বিজেপির বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগই অস্বীকীর করেছেন নিশীথ প্রামানিক।

আরও পড়ুন: আরাবুল বাহিনীর বিরুদ্ধে ঘরে ঢুকে হামলার অভিযোগ ভাঙড়ে, রাস্তা আটকালেন গ্রামবাসীরা

বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বাঁকুড়ার শালতোড়াতে। সেখানে বিজেপির স্থানীয় নেতা বিদ্যুৎ দাস গুলিবিদ্ধ হন। তাঁর বাঁ-কানের পাশে গুলি লেগেছে। বিজেপির অভিযোগ স্থানীয় তৃণমূল নেতা কালীপদ রায়ের নেতৃত্বে দুস্কৃতীরা বিদ্যুৎবাবুর উপর হামলা চালায়। এলাকায় র‌্যাফ সহ বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে সংঘর্ষ ঠেকাতে।

দুর্গাপুরের লাউদোহার পাটশেওড়া এলাকায় প্রতিমা বাগদি নামে এক তৃণমূল সমর্থকের বাড়ি বিজেপি ভাঙচুর করেছে বলে অভিযোগ। যদিও স্থানীয় বিজেপি নেতা সন্টু হালদার তৃণমূলের অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন। ক্যানিংয়ের ঝড়খালি এলাকায় তাঁদের এক কর্মীকে তৃণমূল কর্মীরা বিজেপির পতাকা লাগানোর জন্য মারধর করেছে বলে অভিযোগ বিজেপির। সোনারপুর এলাকার জুলপিয়াতেও বিজেপি কর্মী সমর্থকদের উপর হামলা হয়েছে বলে দাবি জেলা বিজেপির।

আরও পড়ুন: দক্ষতার পরীক্ষায় দুই সেনাপতিই ‘ফেল’

রাজ্য পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘ আমরা কয়েকটি সংঘর্ষের ঘটনা শুনেছি। ফলপ্রকাশ পরবর্তী হিংসা ঠেকাতে রাজ্যে ২০০ কোম্পানি আধা সেনা মোতায়েন রয়েছে। তাঁদের ব্যবহার করা হচ্ছে। এ ছাড়াও ইভিএম এবং গননা কেন্দ্রের প্রহরার জন্য মোতায়েন ৮২ কোম্পানি আধাসেনাকে প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করা হতে পারে।” তবে রাজ্যের গোয়েন্দাদের দাবি, রাজনৈতিক হিংসা আগামী দিনে আরও বাড়তে পারে। গোয়েন্দাদের দাবি, তাঁরা ইতিমধ্যেই পরিস্থিতি জানিয়ে নবান্নকে সতর্ক করে রিপোর্ট দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE