Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ভোট এগোবে! দাবি রাহুলের, নাকচ সুদীপের

একই সময়ে বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ কলকাতায় দাবি করেন, ‘‘আর ৬ মাস থেকে এক বছরের মধ্যে বিধানসভা ভোট হবে।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৯ ০৩:১৭
Share: Save:

দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গে বিজেপির সদর দফতরে তখন তৃণমূলের বিধায়ক এবং কাউন্সিলররা সমবেত হয়েছেন দলত্যাগের জন্য। তার কিছু আগে সংসদে নিজের দলীয় কার্যালয়ে বসে তৃণমূলের পাঁচ বারের জয়ী সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। আর দল ভাঙিয়ে ভোট এগিয়ে আনার কোনও সম্ভাবনা নেই। ইতিমধ্যেই ক্ষত মেরামত এবং বিধানসভা ভোট নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়ে গিয়েছে দলে।

একই সময়ে বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ কলকাতায় দাবি করেন, ‘‘আর ৬ মাস থেকে এক বছরের মধ্যে বিধানসভা ভোট হবে। ২০২১ পর্যন্ত তৃণমূল সরকার চলবে না।’’ তবে কী ভাবে তা ঘটবে, তা ব্যাখ্যা করেননি রাহুলবাবু। বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব অবশ্য এর আগে দাবি করেছেন, তাঁরা জোর করে রাজ্য সরকার ফেলার পক্ষপাতী নন।

সাংসদ হিসাবে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রে‌ সই-সাবুদ সারতে লোকসভায় তৃণমূলের জয়ী প্রার্থীরা সংসদে আসছেন সোমবার থেকে। মঙ্গলবার এসে নিজেদের ঘরে কিছুক্ষণ সময় কাটান লোকসভার নেতা সুদীপবাবু এবং রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ ব্রায়েন।

সুদীপবাবু বলেন, ‘‘আমি গোড়া থেকে তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে রয়েছি। তিনি বলেছেন, এ বার দলের কাজে বেশি মন দেবেন, যা প্রশাসনিক কাজের জন্য এত দিন করে উঠতে পারেননি। তিনি জেলায় জেলায় ঘুরে জনসংযোগের মাত্রা বাড়ালে কী হতে পারে, তা আমি জানি।’’ কিন্তু ভোটের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জনসংযোগের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করা সত্ত্বেও ১৮টি আসন বিজেপি-র ঝুলিতে গেল কেন? কিছুটা আত্মসমালোচনার সুরে সুদীপবাবু বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মানুষের জন্য যে কাজ করেছেন, তা আরও বেশি করে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া উচিত ছিল দলীয় নেতা-কর্মীদের। সেখানে কেন ঘাটতি থাকল, তা আমরা খতিয়ে দেখব।’’

পাশাপাশি, রাজ্যে বিজেপি-কে রুখতে ‘বাঙালিয়ানা’কে আরও বেশি করে তুলে ধরার কথাও বলছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তাঁদের বক্তব্য, ‘বাঙালি’ ও ‘বাঙালিয়ানা’ কোথায় এবং কী ভাবে আক্রান্ত হচ্ছে, তা খুঁজে বের করে সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক পরিসরে ‘বাঙালিয়ানা’কে আরও বেশি করে ফিরিয়ে আনা বিজেপি মোকাবিলার হাতিয়ার হতে পারে। তবে কী ভাবে এই তত্ত্ব রূপায়িত হবে, তা অবশ্য স্পষ্ট করেননি নেতারা।

তৃণমূল নেতৃত্বের আরও বক্তব্য, সোশ্যাল মিডিয়ায় বিপুল টাকা খরচ করেছে বিজেপি। শুধু ফেসবুকেই তাদের বিজ্ঞাপনে খরচ হয়েছে ৫০ কোটি টাকা। সুদীপবাবু জানান, লোকসভা ভোটের ফল বিজেপির আগাম দাবির সঙ্গে মিলে গেল, তা-ও অনুসন্ধান করে দেখা হবে। লোকসভার ফলের ময়নাতদন্তে ইতিমধ্যেই একটি বৈঠক করেছেন মমতা। কলকাতায় ৩ জুন তৃণমূলের আগামী বৈঠক হওয়ার কথা।

বিজেপির রাহুলবাবু অবশ্য বিধানসভা ভোট এগিয়ে আসছে ধরে নিয়ে এ দিন হুঁশিয়ারি দেন, ‘‘দুষ্কৃতীদের সতর্ক করছি। তাদের রক্ষাকর্তা তৃণমূল নেতারা কত দিন বাইরে থাকবেন, তার ঠিক নেই। সুতরাং, তারা এখনই না শুধরোলে চামড়া শুকিয়ে ডুগডুগি বাজানো হবে। সরকারি আধিকারিক এবং পুলিশ আধিকারিকদের মধ্যে যাঁরা দলদাসত্ব-সহ নানা অন্যায় করেছেন, তাঁদেরও তালিকা তৈরি হচ্ছে। আচরণ না বদলালে তাঁদেরও চরম দুর্ভোগ হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE