গণনা এগোতেই বিজেপি সমর্থকদের উচ্ছ্বাস। পিটিআই
আভাস ছিল ঠিকই। কিন্তু তার পরেও অনেকের কাছেই অভাবনীয় ছিল বাংলায় বিজেপির এই রকম উত্থান। রাজ্যের শাসক দল বার বার নস্যাৎ করার চেষ্টা করেছিল বুথফেরত সমীক্ষায় মেলা আভাসকে। বাংলার রায়ে অতএব জোরদার ধাক্কার মুখে তৃণমূল। ফলাফল এখনও চূড়ান্ত নয় ঠিকই। তবে প্রবণতায় চোখ রেখেই প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু অত্যন্ত পরিমিত প্রতিক্রিয়া। তৃণমূলের আর কোনও নেতা মুখ খোলেননি সে ভাবে। আর বিজেপির একের পর এক নেতা তথা প্রার্থীর দাবি, ‘শান্তি এবং নিরাপত্তা’র লক্ষ্যে ভোট দিয়েছেন বাংলার মানুষ।
গণনা আজ, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়েছে ঠিকই, কিন্তু ইভিএম গণনার পরে ভিভিপ্যাট মিলিয়ে দেখার কাজ শেষ হতে হতে রাত গভীর হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা। সেই গোটা প্রক্রিয়াটা মেটার আগে পূর্ণাঙ্গ প্রতিক্রিয়া তিনি দেবেন না— টুইটারে এই রকম ইঙ্গিত বৃহস্পতিবার দিয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
টুইটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘‘জয়ীদের অভিনন্দন। কিন্তু যাঁরা হেরেছেন, তাঁরা সবাই হারেননি। আমাদের একটা পূর্ণাঙ্গ বিশ্লেষণ করতে হবে এবং তার পরে আমরা আমাদের মতামত আপনাদের জানাব।’’ এতেই শেষ করেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টুইটের শেষ বাক্যে তিনি লিখেছেন, ‘‘গণনা প্রক্রিয়া শেষ হতে দিন এবং ভিভিপ্যাট মিলিয়ে দেখতে দিন।’’
আরও পড়ুন: ম্যায় বহত খুশ হুঁ, সকাল থেকে উপোস ওঁর জন্যই, বললেন যশোদাবেন
এই প্রক্রিয়া শেষ হতে হতে অনেকটাই রাত হয়ে যাওয়ার কথা। সে ক্ষেত্রে ভোটের ফলাফল নিয়ে পূর্ণাঙ্গ প্রতিক্রিয়া যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ দেবেন না, তা স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে এই টুইটেই।
বিজেপির তরফ থেকে কিন্তু স্বাভাবিক ভাবেই উচ্ছ্বসিত প্রতিক্রিয়া আসতে শুরু করেছে। দার্জিলিং কেন্দ্রে সকাল থেকে এগিয়ে থাকা বিজেপি প্রার্থী রাজু বিস্তই হন বা আলিপুরদুয়ারে ক্রমশ জয়ের পথে এগোতে থাকা বিজেপি প্রার্থী জন বার্লা, প্রত্যেকের প্রতিক্রিয়াই এক। সকলেই বলছেন, ‘‘মানুষ শান্তি চাইছিলেন। যে অত্যাচার চলছিল, তা মানুষ আর সহ্য করতে পারছিলেন না। তাই শান্তির লক্ষ্যে ভোট দিয়েছেন।’’
আরও পড়ুন: দেশ জুড়ে ফের গেরুয়া ঝড়! মোদীর শাসনেই ভারত, বিরোধী শিবির অন্ধকারেই
প্রায় একই বয়ান পাওয়া যাচ্ছে রাজ্য বিজেপির সদর দফতর থেকেও। দলের তরফে এখনও কোনও সাংবাদিক সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি ঠিকই। কিন্তু রাজ্য বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘‘মানুষ নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। আমার-আপনার বাড়ির মেয়েদের নিরাপত্তার অভাব, আমার-আপনার বাড়ির যুবক-যুবতীর চাকরির অভাব। তার সঙ্গে প্রবল দুর্নীতি আর অরাজকতা তো রয়েইছে। তাই বাংলার মানুষ এ বার চাইছিলেন যে, একটা সঠিক পরিবর্তন হোক। সেই লক্ষ্যেই মানুষ ভোট দিয়েছেন।’’
আরও পড়ুন: তৃণমূলের দুর্গ বাংলায় রকেট গতির উত্থান বিজেপির
সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের ভিত্তিতে কি ভোট হয়েছে রাজ্যে? এই ফলাফল কি বাংলায় তীব্র মেরুকরণের ইঙ্গিত দিচ্ছে না? বিজেপি নেতৃত্ব বলছেন, মেরুকরণ নেই, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়েরও অনেকে বিজেপি-কে ভোট দিয়েছেন। তৃণমূলের ধাক্কা খাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বিজেপি নেতা প্রতাপের মন্তব্য, ‘‘দেশের প্রধানমন্ত্রীকে এক জন মুখ্যমন্ত্রী চোর বলছেন! এক জন মুখ্যমন্ত্রী দেশের প্রধানমন্ত্রীকে যাচ্ছেতাই গালিগালাজ করছেন। এমন ঘটনা ভারতে আগে কখনও ঘটেনি। এই ঘটনাকে মানুষ ভাল ভাবে নেননি। মানুষ এর বিরোধিতা করছিলেন। ভোটের ফলাফলে তার প্রতিফলন ঘটেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy