Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

মাধ্যমিকে নজর কাড়ল রাজ্যের মেয়েরাই

ছাত্রীদের এগিয়ে থাকার কারণ হিসেবে যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্য জানালেন, কন্যাশ্রী প্রকল্প এখন ছাত্রীদের স্কুলে যেতে খুবই উৎসাহ জোগাচ্ছে।

উচ্ছ্বাস: আসানসোলের মণিমালা গার্লস স্কুলে। —নিজস্ব চিত্র।

উচ্ছ্বাস: আসানসোলের মণিমালা গার্লস স্কুলে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৭ ০৪:১৬
Share: Save:

এ বারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রথম এক ছাত্রী। শুধু এক জন ছাত্রীর প্রথম হওয়া নয়। গত কয়েক বছরের নিয়ম মেনে এ বারেও ছাত্রী পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি। সংখ্যালঘু পরীক্ষার্থীদের মধ্যেও এ বার ছাত্রীই বেশি।

এ বছর মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্রের সংখ্যা ৪ লক্ষ ৭৩ হাজার ৩ জন। অন্য দিকে ছাত্রীর সংখ্যা ৫ লক্ষ ৮৭ হাজার ৪৯৫। সংখ্যালঘুদের ক্ষেত্রেও ছাত্রীদের সংখ্যা ১ লক্ষ ৬১ হাজার ৬১৭ জন। ছাত্রের সংখ্যা কিন্তু ৯৮ হাজার ৫৭১ জন। এ নিয়ে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের ব্যাখ্যা, সমাজের সব স্তরের মানুষের মধ্যে সন্তানকে শুধু স্কুলে পাঠানোর প্রবণতা বাড়েনি, কমপক্ষে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত পড়ানোর চেষ্টা তাঁরা চালিয়ে যাচ্ছেন। পর্ষদ সভাপতি বলেন, ‘‘পাশের হারের ক্ষেত্রে ছাত্রীরা সামান্য পিছিয়ে থাকলেও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অচিরেই ছাত্রদের সাফল্যের হারকে ধরে ফেলবে।’’

ছাত্রীদের এগিয়ে থাকার কারণ হিসেবে যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্য জানালেন, কন্যাশ্রী প্রকল্প এখন ছাত্রীদের স্কুলে যেতে খুবই উৎসাহ জোগাচ্ছে। যে সব পরিবার আগে মেয়েকে স্কুলে পাঠাতে আগ্রহ দেখাত না, তারা এখন সেই আগ্রহটা দেখাচ্ছে।

আরও পড়ুন:বিয়ে রুখে জেদেই মাধ্যমিক জয় জুলেখার

প্রতীচী ট্রাস্টের রিসার্চ কোঅর্ডিনেটর এবং ফেলো সাবির আহমেদের ব্যাখ্যা একটু অন্য রকম। তিনি জানালেন, সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে ছাত্রদের মধ্যে পড়াশোনার আগ্রহ কমছে। বরং মাঝপথে পড়াশোনার পাট চুকিয়ে অনেকেই রোজগারের পথ বেছে নিচ্ছে। কেউ চলে যাচ্ছে ভিন্‌ রাজ্যে সোনা পালিশের কাজে। কেউ বা রাজমিস্ত্রির কাজ করতে চলে আসছে শহরাঞ্চলে। সাবির বলেন, ‘‘এই সব বাড়িতে অনেক সময় ভাবা হয়, ছেলের রোজগারে যখন সংসারে সচ্ছলতা এল, তখন মেয়েটাকে কিছুটা দূর অবধি পড়াই। কারণ একটা পাশ দিলে মেয়ের বিয়ের জন্য ভাল পাত্র পাওয়া যাবে।’’

ছাত্রীদের স্কুলে পাঠানোর ব্যাপারে অভিভাবকদের আগ্রহ বেড়েছে বলে মনে করেন সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা পাপিয়া নাগও। তাঁর মতে, এতে সামাজিক বিভিন্ন সহায়তার বড় ভূমিকা রয়েছে। সাখাওয়াত স্কুলে উর্দু মাধ্যমেও পড়ানো হয়। তা নিয়েও আগ্রহ বাড়ছে। পাপিয়া দেবী বলেন, ‘‘ওই মাধ্যমে পড়ার জন্য প্রতি বছরই আবেদনের সংখ্যা বাড়ছে। আমাদের আসন বেঁধে দেওয়া বলে বেশি নিতে পারি না।’’

সার্বিক পাশের হার এ বার বেশি। গত বছরের তুলনায় বেড়েছে প্রায় তিন শতাংশ। পর্ষদের তথ্য অনুযায়ী এ বছরের পাশের হারই সর্বোচ্চ, ৮৫.৬৫%। প্রসঙ্গত, গত বছর এই হার ছিল ৮২.৭৪%। এ বছর নতুন পরীক্ষা পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়ায় পড়ুয়ারা নম্বর বেশি তুলতে পেরেছে বলেই হিন্দু স্কুলের প্রধান শিক্ষক তুষারকান্তি সামন্তের মত। তিনি বলেন, ‘‘বেশি ছোট উত্তর দেওয়ার জন্য পড়ুয়াকে পাঠ্যসূচির সবটাই পড়তে হয়েছে। এটা একটা ভাল দিক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE