Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
হলদিয়া বন্দর

এবিজির ২ বার্থে পণ্য খালাসের সম্ভাবনা উজ্জ্বল

শেষ পর্যন্ত ছ’বারের চেষ্টায় ছ’টি সংস্থা পেলেন বন্দর কর্তৃপক্ষ, যারা এবিজি-র ফেলে যাওয়া দুটি বার্থের পণ্য বন্দরের বাইরে নিয়ে যেতে আগ্রহী। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই হলদিয়া বন্দরের ২ এবং ৮ নম্বর বার্থে পুরোদস্তুর যন্ত্রনির্ভর পণ্য খালাস শুরু হতে পারে বলে আশা করছেন বন্দরের কর্তারা। শ্রমিক বিক্ষোভ এবং প্রতিযোগী সংস্থার বিরোধিতার মুখে ২০১২-র অক্টোবরে ওই দুই বার্থের কাজ ফেলে হলদিয়া ছেড়ে যায় এবিজি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা ও হলদিয়া শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:২০
Share: Save:

শেষ পর্যন্ত ছ’বারের চেষ্টায় ছ’টি সংস্থা পেলেন বন্দর কর্তৃপক্ষ, যারা এবিজি-র ফেলে যাওয়া দুটি বার্থের পণ্য বন্দরের বাইরে নিয়ে যেতে আগ্রহী। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই হলদিয়া বন্দরের ২ এবং ৮ নম্বর বার্থে পুরোদস্তুর যন্ত্রনির্ভর পণ্য খালাস শুরু হতে পারে বলে আশা করছেন বন্দরের কর্তারা।

শ্রমিক বিক্ষোভ এবং প্রতিযোগী সংস্থার বিরোধিতার মুখে ২০১২-র অক্টোবরে ওই দুই বার্থের কাজ ফেলে হলদিয়া ছেড়ে যায় এবিজি। তার পর থেকে মামলা মোকদ্দমার জেরে হলদিয়া থেকে তাদের ছ’টি মোবাইল হারবার ক্রেন নিয়ে যেতে পারেনি এই সংস্থা। ২ এবং ৮ নম্বর বার্থে সেই থেকে কোনও সংস্থাকে পণ্য খালাসের বরাতও দিতে পারেনি বন্দর কর্তৃপক্ষ। এবিজি-র প্রতিযোগী এক সংস্থা সেখানে একতরফা ভাবে পণ্য খালাস করছে।

কিন্তু যন্ত্রনির্ভর পণ্য খালাসের জন্য বন্দর এর আগে তিন বার দরপত্র চেয়েছিল। কয়েকটি সংস্থা আগ্রহ দেখালেও পণ্য খালাসের দর তারা এতটাই হাঁকে যে বন্দর সেই সব দরপত্র বাতিল করে দিতে বাধ্য হয়। সংস্থা সূত্রের খবর, এর ফলে বন্দর এবং আমদানি রফতানিকারী সংস্থা উভয়ের পক্ষে লাভজনক কোনও উপায় বের করা সম্ভব হচ্ছিল না।

বন্দরের খবর, গত বছর নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ফরাসি লগ্নিকারীদের এক প্রতিনিধিদল তাঁর সঙ্গে দেখা করে এবিজি-র প্রসঙ্গ তোলে। এবিজি সমস্যা সমাধানের জন্য জাহাজমন্ত্রী নিতিন গডকড়ীকে দায়িত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী। এবিজি-কে ফেরাতে বন্দর কর্তা পল অ্যান্টনিকে মাথায় রেখে একটি কমিটি করা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রাজ্যের শিল্প পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে হলদিয়া ফিরতে অস্বীকার করে এবিজি।

এই পরিস্থিতিতে ২ এবং ৮ নম্বর বার্থে ফের যন্ত্রনির্ভর পণ্য খালাসের কাজ শুরু করতে পল অ্যান্টনি কমিটি নয়া পন্থার সুপারিশ করে। তারা বলে— ওই দুই বার্থের কাজকে দু’ভাগে ভাগ করে দেওয়া হোক। জাহাজ থেকে বার্থে পণ্য নামানোর দায়িত্বে থাকুক একটি সংস্থা এবং বার্থ থেকে বন্দরের বাইরে পণ্য নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হোক অন্য একটি সংস্থাকে। সেই মতো দরপত্র চেয়েছিল বন্দর। বন্দর অবশ্য এ ক্ষেত্রে দুই ধরনের কাজের সর্বোচ্চ দর বেঁধে দিয়েছিল। বন্দরের খবর, মোবাইল হারবার ক্রেনের মাধ্যমে জাহাজ থেকে বার্থে পণ্য নামানোর জন্য প্রতি টনে সর্বোচ্চ ৫৬ টাকা দর দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোনও সংস্থা এই দরে কাজ করতে রাজি হয়নি। তবে বার্থ থেকে বন্দরের বাইরে পণ্য নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বন্দর প্রতি টনে যে ১০৫ টাকা দর দিয়েছিল, তাতে সাড়া দিয়েছে ছ’টি সংস্থা। এরা হল গ্লোবাল এন্টারপ্রাইজ, ওড়িশা ম্যাঙ্গানিজ ওর অ্যান্ড মিনারেলস, ইসি বোস, আইআরসি ন্যাচারাল রিসোর্স, শ্রী শ্যাম সার্ভিসেস এবং ওম মেটালিক্স। বন্দরের এক কর্তা জানান, এই ছ’টি সংস্থার মধ্যে যারা বন্দরকে সব চেয়ে বেশি রাজস্ব দেবে, তারাই পণ্য খালাসের বরাত পাবে।

কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, ২ এবং ৮ নম্বর বার্থে জাহাজ থেকে পণ্য নামাবে কোন সংস্থা? বন্দরের এক শীর্ষ কর্তা জানান, ছ’বার দরপত্র চেয়েও যে হেতু কোনও সংস্থা মেলেনি, তাই বন্দর নিজেই ওই দুই বার্থ থেকে পণ্য খালাস করতে পারে। সে ক্ষেত্রে এবিজি-র ছ’টি মোবাইল হারবার ক্রেন বন্দর কিনে নিতে পারে বলেও জানান ওই কর্তা।

এই পরিস্থিতির মধ্যেও অবশ্য হলদিয়ায় শ্রমিক অশান্তি অব্যাহত। বিক্ষোভ সামাল দিতে এ দিন বন্দরের ডেপুটি চেয়ারম্যান মনীশ জৈন সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠক ডেকেছিলেন। সমস্যা সমাধানে আট জনের কমিটি গড়া হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ, যারা ৩০ এপ্রিলের মধ্যে এ বিষয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট দেবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE