শিশুদের যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ আইনে বলা হয়েছে, নির্যাতিতার শারীরিক পরীক্ষা করবেন কোনও মহিলা চিকিৎসক। কিন্তু সুন্দরবনের কুমিরমারি এলাকার ১২ বছরের নির্যাতিতার শারীরিক পরীক্ষা পুরুষ চিকিৎসককে দিয়ে করানো হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে মামলা হয়েছে। আইনের নির্দেশ লঙ্ঘন করে পুরুষকে দিয়ে নির্যাতিতার পরীক্ষা কেন, সেই প্রশ্ন তুলে একই সঙ্গে বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে কলকাতা হাইকোর্ট।
কুমিরমারির নির্যাতিতাকে থানায় ডেকে পুরুষ পুলিশকর্মীকে দিয়ে তার বয়ান নথিভুক্ত করানো হয়েছে বলেও অভিযোগ। এই সব অভিযোগ শুনে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা!’’ তিনি পুলিশকে নির্দেশ দেন, অভিযোগের জবাব রিপোর্টের আকারে ২৭ জুন তাঁর আদালতে পেশ করতে হবে।
নির্যাতিতার বাবার আইনজীবী ইন্দ্রজিৎ রায়চৌধুরী জানান, তাঁর মক্কেলের বাড়ি সুন্দরবনের ছোট মোল্লাখালি উপকূল থানা এলাকার কুমিরমারিতে। তিনি পেশায় দিনমজুর। ৯ এপ্রিল দুপুরে তিনি এবং তাঁর স্ত্রী কাজে বাড়ির বাইরে গিয়েছিলেন। সেই সুযোগে এলাকার এক রাজনৈতিক নেতা তাঁদের বাড়িতে ঢুকে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে পালিয়ে যান। পরে গ্রামে সালিশি সভা বসিয়ে অভিযুক্ত নেতা নিজেকে ‘নির্দোষ’ প্রমাণ করিয়ে নেন এবং উল্টে তাঁর মক্কেলকে সভার মধ্যেই বেধড়ক মারধর করেন। রাজনৈতিক প্রভাব থাকায় পুলিশ সেই নেতাকে এত দিন গ্রেফতারের চেষ্টাই করেনি। নিরুপায় হয়েই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন নির্যাতিতার বাবা।
এ দিন ওই মামলার প্রথম শুনানি ছিল। শুনানিতে আইনজীবী ইন্দ্রজিৎ ওই সব অভিযোগ করার পরে সরকারি আইনজীবী আদালতে জানান, অভিযুক্ত কমলেশ গায়েনকে ১৪ জুন গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি জামিন পাননি। তা শুনে মামলার আবেদনকারীর আইনজীবী ফের অভিযোগ করেন, গ্রেফতারির পরে সাত দিন কেটে গিয়েছে। পুলিশ নির্যাতিতা, তার মা ও বাবাকে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে নিয়ে গিয়ে তাঁদের গোপন জবানবন্দি নথিভুক্ত করানোর চেষ্টাও করেনি। ফলে অভিযুক্তের জামিন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy