Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

পিছিয়ে গেল মনুয়া-কাণ্ডের রায় ঘোষণা

২০১৭ সালের ২ মে বারাসতের হৃদয়পুরে নিজের বাড়িতে নৃশংস ভাবে খুন হয়েছিলেন বেসরকারি সংস্থার কর্মী, বছর চৌত্রিশের অনুপম সিংহ। তদন্তে জানা যায়, এই খুনের সঙ্গে জড়িত অনুপমের স্ত্রী মনুয়া মজুমদার ও তার প্রেমিক অজিত রায়।

হতাশ: বারাসত আদালতে অনুপম সিংহের মা। সোমবার। ছবি: সুদীপ ঘোষ

হতাশ: বারাসত আদালতে অনুপম সিংহের মা। সোমবার। ছবি: সুদীপ ঘোষ

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৯ ০২:০৭
Share: Save:

পিছিয়ে গেল মনুয়া-কাণ্ডে মামলার রায়দান পর্ব। সোমবার ওই মামলার রায়দান হওয়ার কথা ছিল। সেই মতো বারাসত আদালত চত্বরে ভিড় জমেছিল। কিন্তু ওই আদালতের ফাস্ট ট্র্যাক চতুর্থ কোর্টের বিচারক বৈষ্ণব সরকার এ দিন জানিয়ে দেন, আগামী আগামী ২৫ জুলাই এই মামলার রায়দান হতে পারে। মামলার সরকারি কৌঁসুলি শ্যামলকান্তি দত্ত এ দিন বলেন, ‘‘মামলার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ না হওয়ায় বিচারক ২৫ জুলাই রায় ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছেন।’’

২০১৭ সালের ২ মে বারাসতের হৃদয়পুরে নিজের বাড়িতে নৃশংস ভাবে খুন হয়েছিলেন বেসরকারি সংস্থার কর্মী, বছর চৌত্রিশের অনুপম সিংহ। তদন্তে জানা যায়, এই খুনের সঙ্গে জড়িত অনুপমের স্ত্রী মনুয়া মজুমদার ও তার প্রেমিক অজিত রায়। তদন্তে আরও উঠে আসে যে, প্রেমিক অজিতের সঙ্গে মিলেই স্বামীকে খুনের ছক কষেছিল মনুয়া। এমনকি, খুনের সময়ে মোবাইল ফোন থেকে স্বামীর শেষ আর্তনাদও শুনেছিল মনুয়া। এর পরেই মনুয়া ও অজিতকে গ্রেফতার করে বারাসত থানার পুলিশ।

খুনের পর থেকেই অনুপমের তিনটি মোবাইল পাওয়া যাচ্ছিল না। অজিতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তার মধ্যে একটি ফোন উদ্ধার করা হয়। তা থেকেই জানা যায়, খুনের আগে অনুপমকে ফোন করে তাঁর বাড়ি ফেরার বিষয়টি নিশ্চিত করেছিল মনুয়া। সেই সঙ্গে বাড়িতে লুকিয়ে থাকা অজিতকে ফোন করে বারবার সতর্কও করেছিল মনুয়া।

গত ২৬ মাস ধরে চলা মামলাটিতে মোট ৩১ জন সাক্ষ্য দেন। ৪৭৮ পাতার চার্জশিটের সঙ্গে পরে অতিরিক্ত চার্জশিটও যুক্ত হয়। এর পাশাপাশি রয়েছে ফরেন্সিক-সহ আরও কিছু রিপোর্ট। সব মিলিয়ে প্রায় দেড় থেকে দু’হাজার পাতার রিপোর্ট পরীক্ষা করে এ দিন রায়দান প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যায়নি বলে জানিয়েছেন সরকারি কৌঁসুলি।

এ দিন সকাল সওয়া ১১টা নাগাদ দমদম সেন্ট্রাল জেল থেকে মামলার মূল অভিযুক্ত মনুয়া ও অজিতকে আদালতে আনা হয়। সালোয়ার-কামিজের ওড়নায় মুখ ঢেকে আদালতে ঢোকে মনুয়া। মামলায় রায় শুনতে পোস্টার-প্ল্যাকার্ড নিয়ে আদালত চত্বরে ভিড় করেন অনেকেই।

এমনকি, আদালত চত্বর থেকে বেরনোর সময়ে মনুয়ার দিকে মারমুখী হয়ে তেড়ে যান মহিলারা। যদিও পুলিশ দ্রুত পরিস্থিতি সামলায়।

এ দিন রায় শুনতে আদালতে হাজির ছিলেন অনুপমের বাবা জগদীশচন্দ্র সিংহ, মা কল্পনা, দিদি পপি-সহ আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুরা। এ দিন কাঁদতে কাঁদতে কল্পনা বলেন, ‘‘রায়দান হবে ভেবে অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে এসেছিলাম। আবার পিছিয়ে গেল।’’ পপি বলেন, ‘‘আদালতের উপর আমাদের ভরসা আছে। হত্যাকারী দু’জনেরই ফাঁসি চাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Crime Manua Majumder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE