কোনও মেঘ নেই, তার কপালে আগুন!
পুড়েই চলেছে বাংলার কপাল। সেই দহনে শান্তিজল ছেটাতে পারে যে-মেঘ, তার দেখা নেই। যে-ঘূর্ণিঝড় বঙ্গোপসাগরে তৈরি হলে দক্ষিণবঙ্গ-সহ সমগ্র পূর্ব ভারত বর্তে যেত, সেটিও তৈরি হল আরব সাগরে। সেই সঙ্গে বাংলার কপাল আরও দগদগিয়ে পুড়িয়ে দিয়ে গেল ওই ঘূর্ণিঝড়।
ওই ঘূর্ণিঝড়ের নাম ‘আশোবা’। শ্রীলঙ্কার দেওয়া নাম। বঙ্গোপসাগর তার আঁতুড় হলে বাংলার ক্ষেত্রে সে হয়ে উঠতে পারত দাতা। আরব সাগরে জন্মানোয় সেই ঘূর্ণিঝড়ই হয়ে দাঁড়াচ্ছে এ রাজ্যের সৌভাগ্যের অন্তরায়। আবহবিদেরা বলছেন, আশোবা ওমানের দিকে সরে যাচ্ছে। সোমবার রাত পর্যন্ত তার গতিপথ দেখে আবহবিদদের অনুমান, ওমানের উপকূলে আছড়ে পড়বে ওই ঘূর্ণিঝড়। এর ফলে পশ্চিম উপকূলে বৃষ্টি হলেও পূর্ব ভারতে বর্ষা মার খেতে পারে।
কী ভাবে?
আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, ওই ঘূর্ণিঝড়ের জন্যই কেরল থেকে বর্ষা এ বার উত্তর ভারত হয়ে সহজে আর পূর্ব ভারতের দিকে আসতে পারবে না। আরব সাগরের আশোবা সব জলীয় বাষ্প টেনে নিয়ে পশ্চিম ভারতের পাশে দাঁড়াবে। তার নিট ফল হিসেবে মহারাষ্ট্রে তড়িঘড়ি ঢুকে পড়তে পারে মৌসুমি বায়ু। সে-ক্ষেত্রে দক্ষিণবঙ্গকে বর্ষার জন্য আরও যে কত দিন অপেক্ষা করতে হতে, সেটা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
এমনিতেই মৌসুমি বায়ু এ বার দেরি করছে। সাধারণ নির্ঘণ্ট অনুযায়ী বর্ষা যদি ১ জুন কেরলে ঢোকে, দক্ষিণবঙ্গে তার চলে আসার কথা ৮ জুন। কিন্তু এ বার সে কেরলেই ঢুকেছে পাঁচ দিন দেরিতে। তাই নিয়ম অনুযায়ী ৮ জুন দক্ষিণবঙ্গে তার না-আসারই কথা ছিল। অর্থাৎ দেরি হয়েছে, আরও হত। তবে বরাতজোরে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় বা নিদেন পক্ষে নিম্নচাপ তৈরি হলে ৩-৪ দিনের মধ্যে দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা সমাগমের সম্ভাবনা দেখা দিত। কিন্তু আরব সাগরের ঘূর্ণিঝড় সেই সম্ভাবনায় কাঁটা ছড়িয়ে দিল।
পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ও দক্ষিণ প্রান্তে এখন দু’ধরনের আবহাওয়া। উত্তরবঙ্গে বর্ষা ঢুকেছে রবিবারেই। জোরদার বর্ষণে ডুয়ার্সের বিভিন্ন অঞ্চল বন্যার মুখোমুখি। অসমের বিভিন্ন এলাকাতেও বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। আর দক্ষিণবঙ্গ বৃষ্টির জন্য হাপিত্যেশ করে বসে আছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের এক আবহবিদ বলেন, ‘‘দক্ষিণবঙ্গে প্রাক্বর্ষার বৃষ্টি শুরু হয়ে যাওয়া উচিত ছিল। আরব সাগরের ঘূর্ণিঝড় তাতেও অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। গরম ও অস্বস্তিকর আবহাওয়া থেকে তাই আপাতত নিস্তার নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy