জলমগ্ন: থইথই সল্টলেক সেক্টর ফাইভ। সোমবার। ছবি: শৌভিক দে
বৃষ্টির জন্য কাঙালপনা আপাতত ঘুচল বাঙালির! সৌজন্যে তিনটি ঘূর্ণাবর্ত এবং সক্রিয় মৌসুমি বায়ু। তাদের দাপটেই সোমবার সকাল থেকে অঝোরধারায় ভিজল বাংলা।
রাত পর্যন্ত কলকাতায় ৪২.৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে বলে জানায় আলিপুর আবহাওয়া দফতর। তাদের পূর্বাভাস, আজ, মঙ্গলবারেও রাজ্য জুড়ে বৃষ্টি হতে পারে। দিল্লির মৌসম ভবনের খবর, এ দিন প্রায় পুরো পশ্চিমবঙ্গেই বর্ষা ছড়িয়ে প়ড়েছে।
বৃষ্টির সঙ্গে প্রচুর বাজও পড়েছে কলকাতা-সহ সারা দক্ষিণবঙ্গে। দুই ২৪ পরগনায় বজ্রপাতে তিন জন এবং পুরুলিয়ায় দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। আমজনতার অভিজ্ঞতা, গত কয়েক বছরে বজ্রপাত বেড়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: ঝড়-বৃষ্টি-বজ্রপাতে বিপর্যস্ত রাজ্য, বৃষ্টি চলবে আরও ২ দিন
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (পূর্বাঞ্চল) সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, আজ উত্তরবঙ্গে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। ভারী বৃষ্টি হতে পারে দক্ষিণবঙ্গের বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুরে। মৌসুমি বায়ু সক্রিয় হয়ে ওঠায় প্রায় সব জেলাতেই কমবেশি বৃষ্টি হতে পারে বলে আবহবিজ্ঞানীরা মনে করছেন। তাঁরা জানান, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে। উত্তরের দিকে বিহার ও লাগোয়া তরাই এলাকায় এবং পশ্চিম অসম ও সংলগ্ন এলাকার উপরে রয়েছে দু’টি ঘূর্ণাবর্ত। সক্রিয় মৌসুমি বায়ু এবং দুই ঘূর্ণাবর্তের সংযোগেই উত্তরবঙ্গে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
এ বছর গোড়াতেই বর্ষা যা খেল্ দেখিয়েছে, তাতে বর্ষা নিয়ে মাতামাতি করতে রাজি নন অনেকেই। এ বছর রাজ্যে বর্ষা ঢুকেছে ১১ জুন। কিন্তু তার পরেই ঝিমিয়ে পড়ে সে। পশ্চিম থেকে গরম হাওয়া ঢুকে পড়ায় তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছিল গাঙ্গেয় বঙ্গে। বর্ষা ঢোকার পরে এমন ঘটনা ‘বিরল’ বলেই জানাচ্ছেন আবহবিজ্ঞানীরা। এই পরিস্থিতিতে বর্ষার জোর বা়ড়লেও তা কত দিন টিকবে, তা নিয়ে ধন্দে অনেকেই।
চিন্তা বাড়ছে মুহুর্মুহু বজ্রপাতের জন্যও। বজ্রপাতের সময় বাইরে না-থাকার পরামর্শ দিচ্ছে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর। ওই দফতরের মন্ত্রী জাভেদ খান জানান, মে মাসে বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে ১৬ জনের। জুনে সেটা বেড়ে হয়েছে ৪৯। দূষণ আর বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্যই এটা হচ্ছে। ‘‘বজ্রপাত বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে বায়ুদূষণের মাত্রা বৃদ্ধির সম্পর্ক আছে,’’ অনির্বাণ মিদ্দের সঙ্গে যৌথ গবেষণার ভিত্তিতে বলছেন আবহবিজ্ঞানী সুতপা চৌধুরী। একই কথা বলছেন কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞানের শিক্ষিকা রিনা ভট্টাচার্য। বিজ্ঞানীদের বক্তব্য, মেঘের মধ্যে কার্বন-সহ বিভিন্ন দূষিত কণার মাত্রা যত বৃদ্ধি পাবে, মেঘে-মেঘে ঘর্ষণে বিদ্যুৎসঞ্চারের আশঙ্কা ততই বা়ড়বে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যার শিক্ষক ও আবহবিজ্ঞানী দেবাশিস লোহার বলেন, ‘‘লম্বা গাছ বাজ টেনে নেয়। গাছ কমে যাওয়াটাও বজ্রপাত বৃদ্ধির কারণ হতে পারে। তবে সিদ্ধান্তে পৌঁছনো যায়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy