Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতা-হাওড়ায় ধোঁয়া-পরীক্ষাকেন্দ্র বাড়াতে নির্দেশ

কলকাতার বায়ুদূষণ নিয়ে প্রকাশ্যেই উদ্বেগ প্রকাশ করল আদালত। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য বৃহস্পতিবার আদালতের বিশেষ বেঞ্চ নির্দিষ্ট নির্দেশিকা জারি করেছে। এতে বলা হয়েছে, কলকাতা-হাওড়ায় প্রতি তিন কিলোমিটার ব্যাসার্ধ অন্তর ধোঁয়া-পরীক্ষাকেন্দ্র করতে হবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৫ ১৭:৪৮
Share: Save:

কলকাতার বায়ুদূষণ নিয়ে প্রকাশ্যেই উদ্বেগ প্রকাশ করল আদালত। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য বৃহস্পতিবার আদালতের বিশেষ বেঞ্চ নির্দিষ্ট নির্দেশিকা জারি করেছে। এতে বলা হয়েছে, কলকাতা-হাওড়ায় প্রতি তিন কিলোমিটার ব্যাসার্ধ অন্তর ধোঁয়া-পরীক্ষাকেন্দ্র করতে হবে। এই সব কেন্দ্র ও কলকাতায় বাতাসের মান পরীক্ষার যে সব কেন্দ্র আছে, সেগুলোর প্রতিটিকে কার্যকরী করা এবং পর্যায়ক্রমে সংখ্যাবৃদ্ধি করতে হবে। বাতাসের মান ও দূষণের মাত্রা সম্পর্কে নিয়মিত ওয়েবসাইটে ঘোষণা করতেও আদালত নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে (পিসিবি)।

এখন কলকাতা-হাওড়ায় কত ব্যাসার্ধ অন্তর ধোঁয়া-পরীক্ষাকেন্দ্র আছে, তার কোনও হিসেব নেই। তবে, সংখ্যার হিসেবে ৬০। এ ছাড়াও, বাতাসের গুণগত মান মাপতে কলকাতার ১৫টি স্থানে পিসিবি অনুমোদিত কেন্দ্র রয়েছে। অভিযোগ, এগুলোর কয়েকটি কাজ করছে না। যেগুলো করছে, সেগুলোর কয়েকটির কার্যকারিতা নিয়ে আদালতেই প্রশ্ন তুলেছিলেন পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত। এ ব্যাপারে আদালত পিসিবি-কে রিপোর্ট দাখিল করার নির্দেশ দেয়। এ দিন পিসিবি-র আইনজীবী সংশ্লিষ্ট আদালতে রিপোর্ট পেশ করেন।

বাতাসে দূষণের মাত্রার বাৎসরিক এবং দৈনিক ‘আদর্শ’ হিসেব যা হওয়া উচিত, বাস্তব হিসেব তার চেয়ে অনেক বেশি এবং বিপজ্জনক। পূর্বাঞ্চলীয় পরিবেশ আদালতে সুভাষবাবু অভিযোগ তোলেন, পিসিবি-র ওয়েবসাইটে দূষণের এই সব দৈনিক হিসেব দেওয়া হচ্ছে না।

ধোঁয়া-পরীক্ষাকেন্দ্রগুলো তদারকির দায়িত্ব পিসিবি-র। এ দিন তাদের আইনজীবী অর্পিতা চৌধুরী যে রিপোর্ট পেশ করেন, তাতে স্বীকার করা হয়েছে এই মুহূর্তে তিনটি ধোঁয়া-পরীক্ষাকেন্দ্র কাজ করছে না। বিচারপতি প্রতাপ রায় এবং বিশেষজ্ঞ সদস্য পিসি মিশ্র-র পূর্বাঞ্চলীয় বেঞ্চ ধোঁয়া-পরীক্ষাকেন্দ্র এবং বাতাসের গুণগত মান মাপার কেন্দ্রগুলোকে পূর্ণমাত্রায় কার্যকরী এবং পর্যায়ক্রমে এগুলোর সংখ্যাবৃদ্ধি করার নির্দেশ দেয়।

রাজ্য ইতিমধ্যে আরও ধোঁয়া-পরীক্ষাকেন্দ্র চালু করার প্রস্তুতি নিয়েছে। এর বিরোধিতা করে সেগুলোর মলিক-সংগঠন আদালতে আর্জি জানিয়েছিল, এই সম্ভাব্য সংখ্যাবৃদ্ধিতে তাদের অস্তিত্বের সঙ্কটে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। সংগঠনের আর্জি আদালত এ দিন খারিজ করে দেয়। এরই পাশাপাশি বিচারপতি বলেন, গাড়ির ধোঁয়া পরীক্ষা করাতে যাতে কাউকে দূরে না যেতে হয়, প্রতি তিন কিলোমিটার ব্যাসার্ধে এ রকম পরীক্ষাকেন্দ্র খুলতে হবে। ধোঁয়া পরীক্ষাকেন্দ্রের শংসাপত্র ছাড়া বেঙ্গালুরুর পাম্পে গাড়ির জ্বালানি বিক্রি করা হয় না। যান-দূষণ নিয়ন্ত্রণের স্বার্থে বিচারপতি এ দিন এ শহরেও এ রকম ব্যবস্থা করার কথা কথা বলেন। এ ব্যাপারে আগামী ৭ অগাস্ট রাজ্য সরকারের বক্তব্য পেশের নির্দেশও দেয় আদালত।

৬ মাস মেয়াদি এই শংসাপত্রের মেয়াদ কমিয়ে ৩ মাস করার আর্জি জানিয়েছিলেন সুভাষবাবু। রাজ্যের তরফে আদালতে বলা হয়, পরিবেশ-বিধিতে এই সময়সীমার উল্লেখ করা আছে।

আদালতের এ দিনের নির্দেশিকা সম্পর্কে জানতে পিসিবি-র চেয়ারম্যানকে ফোন করলে সাংবাদিকের পরিচয় জেনে কোনও মন্তব্য না-করে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরিবহণ দফতরের এক পদস্থ অফিসার বলেন, ‘‘পাম্পে বেঙ্গালুরু মডেল চালু করতে গেলে প্রশাসনিক এবং পরিকাঠামোগত একগুচ্ছ ব্যবস্থা নিতে হবে। এখনই এটা চালু করা সম্ভব নয়।’’ বাতাসের গুণগত মান মাপ এবং ধোঁয়া-পরীক্ষার কেন্দ্রগুলোর ব্যাপারে আইনি নির্দেশ ও সুপারিশ মানা হবে বলে মন্তব্য করেন ওই অফিসার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE