বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়েছে বলে মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে জানাল কেন্দ্রীয় সরকার। হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর আদালতে এ দিন অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল একটি রিপোর্ট পেশ করে জানান, যে অভিযোগ নিয়ে তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে বিনা টেন্ডারে এক কোটি ৬০ লক্ষ টাকার (ওয়ার্ক অর্ডার) কাজের বরাত দেওয়া।
বিশ্বভারতীর উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে যে অনুসন্ধান কমিটি গড়া হয়েছে, সেই কমিটির এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছেন। গত ২৪ জুন মামলার শুনানিতে কেন্দ্রের কৌঁসুলি কৌশিকবাবু আদালতে জানিয়েছিলেন, উপাচার্যের বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ উঠেছে, প্রাথমিক ভাবে সেগুলি তদন্তযোগ্য বলে মনে করেছে অনুসন্ধান কমিটি।
সূত্রের খবর, উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, প্রার্থীদের চাকরি দেওয়ার ক্ষেত্রে ইউজিসি-র (ইউনিভারসিটি গ্রান্ট কমিশন) মাপকাঠি তিনি মানেননি। আরও অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে, যৌন হেনস্থা সংক্রান্ত যে সব অভিযোগ জমা পড়েছে, সেই সব অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য উপাচার্য সঠিক পদক্ষেপ করেননি।
এ দিন আদালতে যে রিপোর্ট কেন্দ্রের কৌঁসুলি পেশ করেন, সেই রিপোর্টে ওই সব অভিযোগ নিয়েও বলা হয়েছে। অতিরিক্ত সলিসিটর এ দিন আদালতে জানান, বিচারপতির নির্দেশ মতো তিনি ওই রিপোর্ট পেশ করেছেন। উপাচার্যের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে যে অনুসন্ধান কমিটি গড়া হয়েছে, সেই কমিটিই ওই রিপোর্ট তৈরি করেছে।
কেন্দ্রের কৌঁসুলি আদালতে আরও জানান, উপাচার্যের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান কমিটি গড়ার ব্যাপারে রাজনৈতিক কোনও অভিসন্ধি নেই। তাঁর বিরুদ্ধে তৃণমূল, কংগ্রেস ও বিজেপি-র তিন সাংসদ-সহ অনেকেই রাষ্ট্রপতির কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। তার ভিত্তিতেই ওই কমিটি গড়া হয়েছে।
উপাচার্যের কৌঁসুলি সৌরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় এ দিন আদালতে জানান, তাঁর মক্কেলকে যে কারণ দর্শানোর নোটিস ধরানো হয়েছে, সেই নোটিস রাষ্ট্রপতির কার্যালয় থেকে পাঠানো হয়নি। তা পাঠানো হয়েছে, কেন্দ্রের মানবসম্পদ মন্ত্রক থেকে। ওই মন্ত্রকের ওই নোটিস পাঠানোর এক্তিয়ার নেই।
কেন্দ্রের কৌঁসুলি জানান, এই ধরনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির কার্যালয় সরাসরি কোনও নোটিস পাঠায় না। মানবসম্পদ মন্ত্রক রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের অনুমতি সাপেক্ষে তা পাঠায়।
বিচারপতি উপাচার্যের কৌঁসুলিকে জানান, এর আগের শুনানিতে তিনি অনুসন্ধান কমিটির এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। এ দিন মানবসম্পদ মন্ত্রকের কারণ দশার্নোর নোটিস পাঠানোর এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। সে ক্ষেত্রে উপাচার্যের কৌঁসুলি কারণ দর্শানোর নোটিসকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা করুন। অনুসন্ধান কমিটির এক্তিয়ার নিয়ে কৌঁসুলির কিছু বলার না থাকলে, তিনি মামলার নিষ্পত্তি করে দেবেন।
উপাচার্যের কৌঁসুলি আদালতের কাছে সময় চান। বিচারপতি মামলার পরবর্তী শুনানি ধার্য করেছেন আগামী ১৫ জুলাই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy