Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বনগাঁ পুরসভায় ফের অনাস্থা, বৈঠকের নির্দেশ হাইকোর্টের

সোমবার বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন, উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসকের তত্ত্বাবধানে ১২ দিনের মধ্যে ওই অনাস্থা বৈঠক হবে।

কলকাতা হাইকোর্ট।

কলকাতা হাইকোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৯ ০৪:২৭
Share: Save:

বনগাঁ পুরসভায় নতুন করে অনাস্থা বৈঠক করতে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।

সোমবার বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন, উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসকের তত্ত্বাবধানে ১২ দিনের মধ্যে ওই অনাস্থা বৈঠক হবে। বৈঠক হবে জেলাশাসকের কার্যালয়ে। এর আগে গত ১৬ জুলাই পুরপ্রধান ও তাঁর বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর কাউন্সিলররা পৃথক ভাবে যে অনাস্থা বৈঠক ডেকেছিলেন, সেই দু’টি অনাস্থা বৈঠকের ফলাফল খারিজ করে দিয়েছেন বিচারপতি চট্টোপাধ্যায়। বৈঠকে যে সব কাউন্সিলর যোগ দেবেন, তাঁদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে তিনি জেলার পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন। বিচারপতি চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশ, নতুন বোর্ড গঠন না হওয়া পর্যন্ত পুরসভার দৈনন্দিন কাজকর্ম দেখবেন বনগাঁর মহকুমাশাসক।

বনগাঁর পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্যের উপর অনাস্থার প্রস্তাবের নোটিস দেওয়া হয় ১৬ জুন। সেই সময় অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিলেন পুরপ্রধানের বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর দলত্যাগী কাউন্সিলররা। তাঁদের আইনজীবী অশোক চক্রবর্তী জানান, ১৬ জুলাইয়ের অনাস্থা বৈঠকে যোগ দিতে বাধা দেওয়া হয় বলে তাঁর মক্কেলরা অভিযোগ করেছেন। দলত্যাগীদের বাদ দিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জেরে পদ টিকিয়ে রাখেন পুরপ্রধান। তাঁর বিরুদ্ধ-গোষ্ঠীর কাউন্সিলররা পুরপ্রধান ও তাঁর অনুগামী কাউন্সিলদের বাদ দিয়ে পাল্টা অনাস্থা এনে পুরপ্রধানকে অপসারণ করেন। এর পরে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে দলত্যাগীরা জানান, তাঁদের সংখ্যাগরিষ্ঠতাকে মান্যতা দিতে হবে। পুরপ্রধান সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে পারেননি।

তবে পুরসভায় বিজেপি এখন সংখ্যালঘু। পুরসভার ২২টি আসনের মধ্যে বিজেপিতে যোগদান করা কাউন্সিলরের সংখ্যা ৭ জন। তৃণমূলের কাউন্সিলর এখন ১৩ জন। কংগ্রেসের একমাত্র কাউন্সিলরও রয়েছেন তৃণমূলের পক্ষে। ফলে আদালতের নির্দেশের পর বিজেপিতে যোগদান করা কাউন্সিলরেরা যদি পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন, তাতে বিজেপির পুরবোর্ড দখলের সম্ভবনা নেই বললেই চলে। তা হলে কোন সমীকরণের ভিত্তিতে বিজেপি ফের অনাস্থা আনতে চাইছে? জেলা সভাপতি বলেন, ‘‘বিজেপিতে যোগদান করা কাউন্সিলরদের মধ্যে চার জনকে তৃণমূল ভয় দেখিয়ে, মিথ্যে মামলা দিয়ে তৃণমূলে ফিরে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। তাঁরা মন থেকে কেউ তৃণমূলে ফেরেননি। অনাস্থায় পুরসভার সৎ কাউন্সিলরেরা আমাদের সমর্থন করবেন।’’ যদিও তৃণমূলে ফিরে আসা কাউন্সিলরদের অন্যতম দিলীপ মজুমদার এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘আমাদের ভুল বুঝিয়ে বিজেপিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কোনও অবস্থাতেই আমরা আর তৃণমূল ছেড়ে যাব না।’’

কী বলছেন তৃণমূল নেতৃত্ব? দলের জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আমরা ডিভিশন বেঞ্চে যাচ্ছি। নিয়ম অনুযায়ী পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনতে হলে ২২ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ৮ জনের সমর্থন প্রয়োজন। বিজেপির আছে ৭ জন। ফলে বিজেপি কী করে অনাস্থা আনতে পারে?’’ পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য বলেন, ‘‘কোর্টের নির্দেশের কপি হাতে পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Calcutta High Court Bongaon Municipality
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE