শিলিগুড়ির বিধান মার্কেটে ইলিশ। শনিবার সন্দীপ পালের তোলা ছবি।
শিলিগুড়িতে ঢুকল চলতি মরশুমের প্রথম ইলিশ মাছ। যদিও চাহিদার তুলনায় যোগানের পরিমাণ অত্যন্ত কম হওয়ায় আপাতত তা মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরেই থাকছে। এই মরশুমে পুরোদস্তুর বর্ষা না নামলে, ইলিশের দাম নামার সম্ভাবনা প্রায় নেই বলেই জানান ব্যবসায়ীরা।
গত শুক্রবার শিলিগুড়িতে মরশুমের প্রথম ইলিশের ট্রাক ঢুকেছে দিঘা ও ডায়মন্ডহারবার থেকে বলে জানান শিলিগুড়ি রেগুলেটেড মার্কেট মাছ ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক বাপি চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘আপাতত এক টন ইলিশ ঢুকেছে। তা শিলিগুড়ি ও ডুয়ার্স-সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছে। তাই কোথাওই খুব বেশি পরিমাণ ইলিশ পাঠানো যায়নি। ফলে দাম রয়েছে আকাশছোঁয়া।’’
এ দিন রেগুলেটেড মার্কেটেই চারশো থেকে পাঁচশো গ্রাম ওজনের ইলিশ বিকিয়েছে চারশো থেকে ছ’শো টাকায়। আটশো গ্রাম ওজনের ইলিশের দাম ছিল এক হাজার থেকে বারোশো টাকায়। শিলিগুড়ির খোলাবাজারে ছোট ইলিশ বিক্রি হয়েছে গড়ে পাঁচশো থেকে সাতশো টাকায়। বড় ইলিশ বাজার ভেদে দেড় হাজার থেকে দু’হাজারে। কোথাও তিন হাজার টাকাতেও বিকিয়েছে ইলিশ বলে বাজার ঘুরে দেখা গিয়েছে। বিধান মার্কেটে বাছাই করা ইলিশের দাম ছিল আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা। সুভাষপল্লি বাজারে ইলিশের দাম ছিল গড়ে ছ’শো থেকে বারোশো টাকা। ঘোগোমালি বাজার, হায়দরপাড়া বাজারেও দাম মোটামুটি এর কাছাকাছিতেই ঘোরাফেরা করেছে। হায়দরপাড়ার এক ব্যবসায়ী জানান, এই দফায় আসা ইলিশ স্বাদে ততটা উৎকৃষ্ট না হলেও দামে আকাশছোঁয়া। বিধান মার্কেটের তিন হাজারি ইলিশের বিক্রেতার দাবি, অনেকেই নেড়েচেড়ে দেখছেন, দাম শুনে অন্য মাছ নিয়ে বাড়ি গিয়েছেন। তার মধ্যেও অবশ্য মাছ বিকিয়েছে। তবে তা সামান্য।
আমদানি করা চালানি মাছের ক্ষেত্রে শিলিগুড়ি রেগুলেটেড মার্কেটের মাছের বাজারের উপর নির্ভরশীল ডুয়ার্স-সহ উত্তরবঙ্গের একটা বড় অংশ। জলপাইগুড়ি, ময়নাগুড়ি, ফালাকাটা, ধূপগুড়ি, কোচবিহার, এমনকী জয়গাঁ, বীরপাড়া, আলিপুরদুয়ার এলাকাতেও শিলিগুড়ি থেকে নিয়মিত মাছ সরবরাহ করা হয়। সব জায়গাতেই মাছের দাম মোটামুটি একই রকম ছিল বলে জানা গিয়েছে।
আপাতত মাছের দাম ও যোগান এ রকমই চলবে যতদিন না বর্ষার ইলিশ ঢুকছে বলে জানাচ্ছেন মৎস্য দফতরের কর্তারাও। শিলিগুড়ির ফিশারি এক্সটেনশন অফিসার সুরজিত মৈত্র বলেন, ‘‘বঙ্গোপসাগর উপকূলে টানা কয়েকদিন বৃষ্টি না হলে সমুদ্রের ইলিশের ঝাঁক উপকূলের নদীতে ঢুকবে না। ফলে অল্প পরিমাণ ইলিশেই সন্তুষ্ট থাকতে হবে ইলিশপ্রেমীদের। তবে আশার কথা শুনিয়েছেন তিনি। অল্প দিনের মধ্যেই ইলিশের মরশুম শুরু হতে পারে বলে তিনি আশাবাদী। মূলত ডায়মন্ডহারবার, দীঘা ও ওডিশার উপকূল থেকে ইলিশ উত্তরবঙ্গে ঢোকে। কোলাঘাটের ইলিশ শিলিগুড়িতে কোনওদিনই ঢোকে না বলে মৎস্য ব্যবসায়ীদের একাংশ জানিয়েছেন। উপকূলের নদীতে জল বাড়লেই মাছের যোগান বাড়ে প্রতিবারই। তাহলেই একমাত্র দাম কমতে পারে। গত বছর বড় ইলিশের দাম ছ’শো টাকাতে নেমেছিল। যেখানে ছোট আধকেজি ওজনের ইলিশ তিনশো টাকাতেও বিকিয়েছে। এখন বৃষ্টি হওয়াতে সেই আশাতেই রয়েছে উত্তরবঙ্গবাসী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy